ফুটপাথ, যৌনতা আর গাড়ি চাপা

Updated By: Dec 11, 2015, 03:37 PM IST
ফুটপাথ, যৌনতা আর গাড়ি চাপা

সৌরভ পাল

কখনও মেঘের ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ দেখেছেন? কখনও রানওয়েতে দাঁড়িয়ে প্লেনের গতিবেগ মেপেছেন? কলকাতার একটা ফুটপাথে দাঁড়িয়ে অনায়াসেই মেঘে হাঁটতে পারেন আপনি, চোখের পলক ফেলার আগেই চোখের সামনে দিয়ে রকেট চলে যেতে দেখতে পারেন আপনি। হ্যাঁ। একটা কথাও অসত্য নয়। কুয়াশাচ্ছন্ন রাজপথ, হলুদ আলো আর কুয়াশার সাদা চাদর, হেঁটে চলেছেন অনন্ত দিগন্তের পথে, পাশ দিয়ে এক একটা মিশাইল চলে যাচ্ছে। কেমন বুঝছেন? হ্যাঁ, রাতের কলকাতাটা এতটাই উন্মাদ। ভ্যানটা যখন উড়ালপুল থেকে গড়িয়ে সমান্তরালে আসে আপনার ক্যামেরার শাটার কাউন্টের মধ্যেই দেখবেন তিন চাকার যানটা হাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। আর কি পাবেন আপনি? পাবেন 'তাল তমালের বন', আর 'ফুলকি ফুলকি আগুন'। দেদার নেশা, হ্যালুসিনেশন আর ফুটপাথে প্রেমের অগ্ন্যুৎপাত। ওপরে নীল আকাশ পরণে নীল আবরণ। কেবল ওঠা আর নামা। শীতে কালবৈশাখীটা ফুটপাথেই জন্ম নিচ্ছে। আর জন্ম নিচ্ছে অগণিত জীবন। মা আর বাবার যৌনতা কখনও মুখে প্রকাশ করা যায় না, কারণ তাঁদের প্রেম সৌন্দর্য্যটাই হল গর্ভের সন্তান। অঙ্গুলি হেলনে পারদ চড়ছে, রাতে শীত বাড়ছে শহরে, ফুটপাথে বাড়ছে উত্তাপ। গঞ্জিকার গন্ধ হার মানাবে হাসনুহানাকেও। এটাই কলকাতা। ভারতের আদি মেট্রো সিটি।

এই শহরটার থেকেও অন্তত ৫০০ গুণ বেশি গতির শহরটার নাম জানা আছে? আজ্ঞে মুম্বই। তর্কে না গিয়ে একটা ডেমো দিয়ে দিই। ৬০ ফুটের চওড়া রাস্তাটাও যেখানে ছোট হয়ে যায়, চার চাকার গোটা বডিটাই উঠে যায় ফুটপাথে। ঘুমিয়ে থাকা মানুষ স্বপ্নেই মরে যায় যে শহরে, তার নাম মুম্বই। বান্দ্রার ঐ ফুটপাথে এটা ১৩ বছর আগেই প্রমানিত হয়েছিল একটা মানুষ সাদা রঙের একটি ক্রুজারের তলায় তলিয়ে গিয়েছে। আর গতির হাওয়ায় হাড় গোড় ভেঙেছে ৪ জনের। তবে এটা প্রমাণ করা গেল না, গাড়িটা কে চালাচ্ছিল? ফুটপাথে যারা থাকেন, প্রেম করেন, যৌন হন, জীবন কাটান সবাই এক শ্রেণি চরিত্রে চলে আসেন। সবাই 'সারমেয়'। এই বক্তব্যই তো করেছিলেন গায়ক অভিজিৎ। বিচারে বেকোসুর খালাস সলমন সাহেব। একটা গোটা জীবন 'জাস্ট ফিনিশ', অথচ জানা গেল না, এত গতিতে গাড়ি চালাতে পারেন যে, সেই চালকটা কে? না বিশেষ কিছুই না, ফর্মুলা ওয়ানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন এমন আরও একজনকে পেলে মন্দ হত কি?

দুটো শহর, এক ফুটপাথ। ঘটনা আলাদা। কলকাতার ফুটপাথে যারা যৌনতায় মগ্ন, প্রেমে আত্মবিলীন, তাঁরা নাকি অস্ট্রিচ পাখি। মরুভূমিতে মুখ ঢুকিয়ে ভাবে আমি দেখছি না মানে জগৎটাও দেখছে না। আর যারা গতির কাটায় চোখ রেখেও এক্সিলেটরে যুদ্ধবিমান চালানোর কর্ম করে তাঁরা কী? প্রশ্নটা রইল। শাসকের কাছেই প্রশ্নটা করলাম। আপনিও কি শাসক?

.