অয়ন ঘোষাল 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০ মাসের সম্পর্ক লহমায় শেষ! মৃত পোষ্যের শোকে মুহ্যমান পোষ্যের পরিবার।


নাম তার 'গুল্টু', বয়স তার ২২ মাস। অকশন থেকে ২ মাস বয়সে কেনা হয়েছিল তাকে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ রামমন্দির লাগোয়া রাস্তায় জয়ন্ত ব্যানার্জির বাড়িতে গত ২০ মাসের সদস্য 'চাও চাও' প্রজাতির পোষ্য 'গুল্টু'। বাড়ির আলমারির চাবির রিং থেকে ঘর, সিঁড়ি, উঠোন জুড়ে শুধুই তার কর্মতত্‍পরতার মিঠে নজির, তার অস্তিত্বের মুগ্ধতা। জয়ন্তবাবুর আগের দুই সন্তানের সঙ্গেই সন্তান স্নেহে 'গুল্টু'রও সহাবস্থান। 


এহেন মনকেমনিয়া গুল্টু আর নেই! বড়ই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে তার। গত ১১ জুন সে অক্সিজেনের (oxygen) অভাবে ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছে বিমানের কার্গো কেবিনে। যেখানে না ছিল হাওয়া চলাচলের সুযোগ, না ছিল কৃত্রিম অক্সিজেনের ব্যবস্থা। 


আরও পড়ুন: শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকের পরেই 'শাহি' দরবারে ধনখড়, দিল্লি যাত্রা নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ (US) বিশ্বের একাধিক দেশের বেশ কিছু বিমান সংস্থায় আলাদা টিকিট কেটে মনিবের সঙ্গেই যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয় পোষ্যকে। সেই পরিকাঠামো আছে তাদের। অথচ এ দেশে তা এখনও নেই। 


না-ই বা রইল! নিয়ম নেই বলে ন্যূনতম  মানবিকতাও থাকতে নেই, এমন কেউ বলেছে নাকি! যে বিমান সংস্থা অবলা অসুস্থ একটি প্রাণীকে বহনের কাগুজে 'দায়িত্ব'টুকু নেয়, এবং শুধু শুকনো দায়িত্বই নয়, সঙ্গে দ্বিগুণ ভাড়াও নেয়, তাদের হেফাজতে কেন সামান্য একটা অক্সিজেন সিলিন্ডারও থাকবে না? 


এখন এই প্রশ্ন তুলেই আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন জয়ন্তবাবু। স্থানীয় গিরীশ পার্ক (Girish Park) থানায় বিমান সংস্থার কার্গো বিভাগের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । না, কোনও বিচার চায় না ওই পরিবার। চায় না ক্ষতিপূরণও। শুধু চায়, যেভাবে গুল্টু চলে গেল, আগামি দিনে যেন আর কারও কোনও পোষ্যকে ওই ভাবে দমবন্ধ হয়ে চলে যেতে না হয়! 


কেন এভাবে বিমানযাত্রা করতে হচ্ছিল গুল্টুকে? 


কলকাতার (kolkata) এক পশু চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, গুল্টুর চোখে টিউমার ধরা পড়েছে। এখানে এই করোনা বিধিনিষেধের মধ্যে কোনো প্রাইভেট ভেট ক্লিনিকেই তার এই জটিল অপারেশন সম্ভব নয়। বেলগাছিয়া পশু চিকিৎসালয় এই জটিল অপারেশনের ঝুঁকি নিতে রাজিও হয়নি। তাই মুম্বইয়ের এক প্রাণী হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা হয়েছিল। এরপর রীতিমতো অ্যাপয়েন্টমেন্টর কাগজ দেখিয়েই কাটা হয়েছিল বিমানের টিকিট। যাত্রীদের জন্য মাথাপিছু ৭০০০ টাকা নিলেও, বিশেষ তত্ত্বাবধানে গুল্টুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিমান সংস্থার তরফে টিকিটের অর্থমূল্য ধার্য করা হয়েছিল ১৪০০০ টাকা! 


এদিকে এত কাঠখড় পুড়িয়ে সব ব্যবস্থা করে, দ্বিগুণ খরচ করে মুম্বই পৌঁছেও, যার জন্য এতকিছু, বিমান সংস্থার অমানবিকতার জেরে সেই প্রিয় গুল্টুকেই আর ফিরে পেল না ব্যানার্জি পরিবার। বাড়ির সব থেকে ছোট সদস্যকে আর জীবন্ত দেখতেই পেলেন না তাঁরা!


(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 


আরও পড়ুন: 'এক দেশ এক রেশন' নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, জানিয়ে দিলেন Mamata