সাইকেল নিয়ে শুরু, অতীতে ফিরেও দিলীপের শঙ্খনাদ, আসছি একুশে
সাইকেল নিয়ে সংগঠন করতেন। তখন বিজেপি এরাজ্যে গোবলয়ের দল। কে বিজেপির সভাপতি? সে নিয়ে কারও হেলদোলও বিশেষ থাকত না।
অঞ্জন রায়
আপনি সভাপতি হচ্ছেন। বলেই ফোন কাটলেন অমিত শাহ। দ্বিতীয়বার রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদে প্রত্যাবর্তনের পর অতীতে ফিরলেন দিলীপ ঘোষ। ভাষণ দিতে গিয়েও ডাকাবুকো দিলীপের চোখে এল জল। কোথাও যেন ফিরে গেলেন পুরনো দিনে। নিজেও তৃণমূলস্তরে সংগঠন করতে করতে আজ এখানে। সাধারণ কর্মীদের সংগ্রামের কথা স্মরণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
সাইকেল নিয়ে সংগঠন করতেন তরুণ দিলীপ ঘোষ। তখন বিজেপি এরাজ্যে গোবলয়ের দল। কে বিজেপির সভাপতি? সে নিয়ে কারও হেলদোল থাকত না। ওই নমো নমো করে একটা সাংবাদিক বৈঠক করতেন সভাপতিরা। মমতার প্রবল সিপিএম-বিরোধী ভাবমূর্তির সামনে বিজেপি তখন বড়বাজারের অবাঙালিদের দল। কিন্তু দিলীপ আসার পরই বদলে গেল ভারতীয় জনতা পার্টি। গোবলয়ের বিজেপিই এখন বাংলার প্রধান বিরোধী দল।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চ থেকে এসেছিলেন বিজেপিতে। একবছর যেতে না যেতেই বড় দায়িত্ব। ফোন এল অমিত শাহের, 'আপনি সভাপতি হচ্ছেন।' কী করবেন না করবেন, বুঝে ওঠার আগেই চ্য়ালেঞ্জ। ২০১৬ সালে দলের ইচ্ছায় দাঁড়ালেন খড়্গপুরে। চ্যালেঞ্জে সফল দিলীপ। জ্ঞানসিং সোহন পালের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীকেও হারিয়ে জায়ান্টা কিলার বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপের কথায়,''সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘুরে বেড়িয়েছি জেলায় জেলায়।'' জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের প্রতিবেদনেও উঠে এসেছিল সেই ছবি। ২ বছরে আড়াই লক্ষ কিলোমিটারের বেশি চলেছে দিলীপের গাড়ি। তাঁর কথায়,''বিজেপি কাউকে পদ দেয় না, ঝান্ডা দেয়।''
গরম-গরম ভাষণ দেন। লোকে হাসাহাসিও করে। সুশীল সমাজও ব্যাঁকা চোখে তাকায়। কিন্তু ওসবে কেয়ার করেন না দিলীপ। জানেন তর্কে থাকতে গেলে বিতর্ক বাঁধাতে হয়। উজ্জীবিত হয় কর্মীরা। সেটার ফল লোকসভাতেই মিলেছে হাতেনাতে। মেদিনীপুরে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন দিলীপ। তাঁর দল জিতেছে ১৮টি আসন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি আসন পাচ্ছে, বছর তিনেক আগেও লোকে বলত, পাগল না দিবাস্বপ্নের দোষ আছে? তাই দিলীপকে কৃতিত্ব তো দিতেই হয়। তবে কৃতিত্ব রাজ্য সভাপতি নিচ্ছেন না। বরং বলে দিলেন, সবটাই সম্ভব হয়েছে কর্মীদের জন্য। চোখে জল নিয়েই দিলীপ বলে চললেন, রাজ্যে ৯০-র বেশি কর্মী মারা গিয়েছে। ঘরছাড়া করা হয়েছে কয়েক হাজার কর্মীকে।বহু কর্মীকে মিথ্যা কেসে ফেঁসে আছেন। তাঁদের ছাড়া জয় সম্ভব ছিল না। যাকে বলে 'টিমম্যান'।
এবার লড়াই একুশের। পারবেন উইনিং লাকের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে? মহাভারতের যুদ্ধের শঙ্খনাদ করে দিয়েছেন দিলীপ- ''জয় আসছেই।''
আরও পড়ুন- প্রজাতন্ত্র দিবসে নাশকতার ছক বানচাল, পাকড়াও ৫ জইশ জঙ্গি