বিক্রম দাস: 'তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহানের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা'! সন্দেশখালি কাণ্ডে বিস্ফোরক ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিবৃতি,  'খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও, লঘু ধারায় মামলা রুজু করেছে রাজ্য পুলিস। খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়া হয়নি। অধিকাংশই জমিনযোগ্য ধারায় মামলা'।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন:  Partha Chatterjee: SSC-র ৪ মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট CBI-এর, সবেতেই নাম পার্থর!


২ দিন পার। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যান ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু বাড়ি তখন তালাবন্ধ ছিল। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। এরপর তালা ভাঙা চেষ্টা করেন ইডি-র আধিকারিকরা, তখন আচমকাই শুরু হয় বিক্ষোভ। ইডি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করেন বিক্ষোভকারীরা। কবে? শুক্রবার। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ৩ আধিকারিক।  


রাতে ইডি-র তরফে বিবৃতি জানানো হয়, 'তল্লাশির সময়ে বাড়িতেই ছিলেন শাহাজাহান। ফোনের লোকেশন বাড়িতেই দেখায়। তল্লাশির সময়ে আটশো থেকে হাজার জন ঘিরে ধরে। ইডি ও CRPF জওয়ানদের উপর ইট-পাথর দিয়ে হামলা চালানো হয়। ব্যক্তিগত ও সরকারি সামগ্রী চুরি গিয়েছে। খুনের উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়'। অভিযোগও দায়ের করা হয় পুলিসে। সেই অভিযোগে ভিত্তিতে মামলা রুজু হওয়ার পর ফের বিবৃতি দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।



আরও পড়ুন:  Kolkata International Book Fair 2024: মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শুরু হতে চলেছে ২০২৪-র কলকাতা বইমেলা, থাকছে অনেক চমক


কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'এটা প্রত্যাশিত ছিল, এটাই স্বাভাবিক। যদি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হত, সেটা অস্বাভাবিক হত। এ রাজ্যে আইনের শাসন নেই। প্রশাসনের রাজনীতিকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাম জমানার সরকার ও শাসকদলের মধ্যে যে সূক্ষ্ম সীমারেখা ছিল, সেটা অনেকদিন আগেই মুছে ফেলা হয়েছে'।


তাঁর অভিযোগ,  'আতঙ্ক তৈরি করতে চাইছিল ইডি-সিবিআইয়ের মনে। একমাত্র উদ্দেশ্যে ছিল, যেকোনও অবস্থায় একটা অরাজক অবস্থা তৈরি করে,  সংঘর্ষ করিয়ে রক্তপাত ঘটিয়ে দিয়ে, এই তদন্ত প্রক্রিয়াটা বন্ধ করে দেওয়া।  কাকুর কোকিলকণ্ঠে শোনার পর তৃণমূল আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছে। সেকারণেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে, পুলিস তো শাহাজাহানকে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছিল'।


সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন, 'ইডি বলেছে যে, শেখ শাহাজানের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে।  সেটা, যাঁরা ইডি-র দফতর দেখে, কেন্দ্রের মন্ত্রী তারা জানে এবং মানে? তাহলে তারা কেন এখানে অপরাধীদের যাঁরা মাথা, পিসি-ভাইপোকে প্রশয় দেয়'? তাঁর মতে, 'উত্তর তো বিজেপিকে দিতে হবে। বিজেপি বা তৃণমূলের প্রশ্ন করার ব্যাপার নয়। প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে হয় তৃণমূলকে নয়তো বিজেপিকে। আর ইডি, তাঁর দফতরের মন্ত্রীদের বলুক, আমাদের এই বিপদের মধ্যে আপনারা ফেলেছেন। হয় তদন্ত করতে দিন, আর না হলে যদি সেটিং করে চলেন, তাহলে এই সবের মানে কী আছে'?


এদিকে ইডি-কেই পাল্টা কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, 'ইডির বিজেপির অঙ্গুলহেলনে চলতে পারে। কিন্তু ইডি-র সাফল্যে হার আমরা জানি। ইডি-র অফিসারদের বিরুদ্ধেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আমরা দেখেছি। ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তামিলনাড়ুতে। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ থাকলেও, ইডি তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করে না। বাংলায় তৃণমূল জমানায় পুলিস নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, কোনও পক্ষপাতিত্ব থাকে না।কোন অভিযোগ উঠলে, পুলিস যেটা মনে করে, সেই ধারাই দেয়। কোন রং দেখে না। ইডি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্য়বহৃত হয়, তাই বাকীদেরও নিজেদের মতো ভাবছে'!


সন্দেশখালিকাণ্ডে মুখ খুলেছেন রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার। তাঁর আশ্বাস, 'যে যে আইন ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে'।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)