ট্রলির পিছন পিছন ছুটে মেয়ের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করলেন বাবা! নজিরবিহীন ঘটনা কলকাতা মেডিকেলে
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১ জুলাই থেকে কলকাতা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের সুখচরের বাসিন্দা ওই তরুণী।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বাবা জানেই না মেয়ের মৃত্যু হয়েছে! ছুটে বেড়ালেন এই মৃতদেহ থেকে ওই মৃতদেহ পর্যন্ত। শেষে প্যাকিং করা মৃতদেহের গায়ে জড়ানো কাগজ দেখে নিশ্চিত করলেন মেয়ের মৃত্যু সংবাদ। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা মেডিকেল কলেজে।
করোনায় আক্রান্ত মেয়েকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজে। কিন্তু কদিন ধরে মেয়ের আর কোনও খবর পাচ্ছিলেন না। শেষে বুধবার সকালে বাবা সটান এসে হাজির হন কলকাতা মেডিকেল কলেজে। সকাল থেকে বাবা ঠায় বসেছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের গ্রিন বিল্ডিংয়ের নীচে। উদ্দেশ্য একটাই, মেডিকেল কলেজের করোনা বিল্ডিংয়ে চিকিৎসাধীন মেয়ে কেমন আছে? কয়েকদিন ধরে মেয়ের কোনও খবর না পেয়ে মনও কু-ডাক দিচ্ছিল! একটা প্রশ্ন, একটা আশঙ্কা মনে জেগেছিল! কিন্তু সেই আশঙ্কা-ই যে সত্যি হয়ে যাবে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি হতভাগ্য বাবা।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরেও মেয়ের কোনও খবর না পেয়ে শেষে অসহায় বাবা ছুটতে শুরু করলেন মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ট্রলির পিছন পিছন। মনের আশঙ্কা মনে চেপেই খুঁজতে থাকলেন ওই ট্রলির মধ্যে কোথাও তাঁর পরিচিত কোনও নাম কি রয়েছে? শেষমেশ আশঙ্কা-ই সত্যি হল। করোনা রোগীর মৃতদেহ প্যাক করার ক্ষেত্রে বেশকিছু নিয়মকানুন আছে। সেই প্যাকিংয়ের গায়ে আটকানো কাগজ দেখেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল বাবার। আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হল। ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া মৃতদেহের ভিড়ে রয়েছে তাঁর মেয়েও!
মৃতদেহের পিছনে এভাবে ছুটে ছুটে নিজের মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিৎ করার ঘটনা এককথায় নজিরবিহীন। বুধবার সকালে এই মর্মান্তিক ও অমানবিক ঘটনার-ই সাক্ষী রইল কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উপস্থিত সবাই। এরপরই লাগাতার ফোন আর চাপের মুখে পড়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নেয় ৩৬ বছরের তরুণীর মৃত্যুসংবাদ। জানা গিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১ জুলাই থেকে কলকাতা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের সুখচরের বাসিন্দা ওই তরুণী।
আরও পড়ুন, রাজ্যে প্রথম এবার করোনার বলি বাসচালক, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি