দিনভর তত্পরতার শেষে শোভনের চেয়ারে বসলেন ফিরহাদ

কলকাতা পুরসভার  মেয়র হলেন ফিরহাদ হাকিম।   

Updated By: Nov 23, 2018, 11:35 AM IST
দিনভর তত্পরতার শেষে  শোভনের চেয়ারে বসলেন ফিরহাদ

নিজস্ব প্রতিবেদন:    সব ডামাডোল, সব জল্পনার অবসান।  কলকাতা পুরসভার  মেয়র হলেন ফিরহাদ হাকিম। সন্ধ্যা ঠিক ৬ টা নাগাদ মেয়র হিসাবে ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র হিসাবে অতীন ঘোষের নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিতে বলেছিলেন, তখন থেকেই মেয়র পদের ভাবীদের নাম নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন অতীন, দেবাশিস কিংবা মালা রায়ের নাম। কিন্তু তারপরই পুরনিগম আইন বদলানোর প্রসঙ্গ উঠে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় নতুন জল্পনা। তবে কি বর্তমানে কাউন্সিলর নন, এমনই কাউকে  কলকাতা পুরসভার মেয়র করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? উঠে আসে দুই মন্ত্রীর নাম-ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু মেয়রের দায়িত্ব নিতে তিনি রাজি নন বলে বুধবারই জানিয়ে দেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর পর ফিরহাদের পদপ্রাপ্তি নিয়ে যাবতীয় সংশয় কেটে যায়!  ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় পাশ হয় সংশোধনী বিল।   এরইমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীর হাত দিয়ে মেয়র পদে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ভাবী মেয়র হিসাবে ফিরহাদ হাকিমের নামও ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ততক্ষণেও বাকি থাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম ঘোষণার।

আরও পড়ুন: 'মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শোভনবাবুর নিজের, বৈশাখীর হাত নেই'

মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক তীক্ষ্ণ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই কলকাতা পুরসভার ভাবী মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে নিয়ে উত্তীর্ণে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  কলকাতার পুরসভার খুঁটিনাটি ছিল শোভনবাবুর নখদর্পণে, সেকথা ভালোভাবেই জানতেন মুখ্যমন্ত্রী।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের  অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন শোভন। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম কাউন্সিলর হন। পুরসভা নিয়ে তাঁর মতো অভিজ্ঞতা কম মানুষেরই রয়েছে। তাঁর আমলে কলকাতা পুরসভার বহু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। ২০১৫ সালে পুরনির্বাচনে তার সুফল পেয়েছে তৃণমূল।  সেক্ষেত্রে শোভনের  পরিবর্তে কোনও দক্ষ লোককেই মেয়র করতে চেয়েছিলেন  মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী  ফিরহাদ হাকিমের ওপরই আস্থা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী।  বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, সেই দিক থেকে বিচার করলে এই সিদ্ধান্ত পুরসভার কাজের জন্য সুবিধাই হল। একই সঙ্গে এক ছাতার তলায় সব দায়িত্ব পালন করতে পারবেন ফিরহাদ হাকিম।

বিকাল  প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত  উত্তীর্ণে ভাবী মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের  বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।   পুরসভার দায়িত্বগ্রহণের পর  কোন কোন বিষয়গুলির ওপর বাড়তি নজর দেওয়ার প্রয়োজন, সেগুলি বুঝিয়ে  দেন বলেই সূত্রের খবর। যদিও ‘দাদা’ ফিরহাদ হাকিমকে তাঁর এই নতুন দায়িত্বের জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে রেখেছন শোভনবাবু। প্রয়োজন পড়লে পুরসভার যে কোনও কাজে তাঁকে সাহায্য করবেন বলেও এদিন সাংবাদিকদের সামনে বলেন তিনি।  

.