প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখা আবশ্যক করল সরকার
সরকারি হাসপাতালের চিকিত্করা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম না লিখলে সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে স্পেশাল রিভিউ মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য সচিব সতীশ তিওয়ারির লিখিত নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে এই নির্দেশ পৌঁছে যাবে। সরকারের এই নয়া দাওয়াইয়ের পরেই চিকিত্সক মহলে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক।
সরকারি হাসপাতালের চিকিত্করা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম না লিখলে সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে স্পেশাল রিভিউ মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য সচিব সতীশ তিওয়ারির লিখিত নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে এই নির্দেশ পৌঁছে যাবে। সরকারের এই নয়া দাওয়াইয়ের পরেই চিকিত্সক মহলে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক।
প্রেসক্রিপশনে লেখা যাবে না ওষুধের ব্র্যান্ড নেম। লিখতে হবে জেনেরিক নাম। সরকারের এই দাওয়াই ঘিরেই চিকিত্সক মহলে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। চিকিত্সক সংগঠন হেল্থ ড্ক্টরর্সের দাবি, সরকারি নির্দেশিকা যে সমস্ত চিকিতসকরা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হোক বিভাগীয় ব্যবস্থা। কিন্তু থানায় এফআইআরের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
সরকারের ফৌজদারি দাওয়াইকেই স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূলের চিকিত্সক সংগঠন প্রোগেসিভ ডক্টরর্স অ্যাসোসিয়েশন।
সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকদের অসুধের জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক। দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য দফতরে ওয়েব সাইটে জ্বলজ্বল করছে এই নির্দেশিকা। কিন্তু খুব কম চিকিত্সকই এতদিন এই নির্দেশ মানতেন। নির্দেশ কার্যকর করতে এবার ফৌজদারি দাওয়াইয়েরই পথ বেছেছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে জরুরি ভিত্তিতে স্পেশাল রিভিউ মিটিংয়ে বসেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। মিটিং এ ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সহ স্বাস্থ্য দফতরের অন্যান্য কর্তারা।
সেই বৈঠকেই প্রেসকিপশনে জেনেরিক ওষুধের নাম লেখার ইস্যুতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকদের প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লিখতে হবে। ওষুধের ব্র্যান্ড নেম কোনও ভাবেই লেখা যাবে না। কোনও চিকিত্সক যদি ওষুধের জেনেরিক নাম না লেখেন এবং সে সংক্রান্ত অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়ে সেক্ষেত্রে তত্ক্ষণাত্ স্থানীয় থানায় ওই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
প্রতিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও এই বিষয়ে নজরদারি চালাতে হবে। স্বাস্থ্য সচিবের এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে।মঙ্গলবারের বৈঠকে চূড়ান্ত ভর্ত্সনা করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রকে। কিছু দিন আগেই এসএসকেএম হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়েছিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই সময় এসএসকেএম হাসপাতালের কিছু চিকিত্সকের প্রেসকিপশন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আসে। সেই প্রেসকিপশনগুলিতে ওষুধের ব্র্যান্ড নেমের উল্লেখ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দেন। সেই তদন্ত কতদূর তা জানতে চান স্বাস্থ্য সচিব। এসএসকেএম অধিকর্তার জানিয়েছেন, কয়েকজন চিকিত্সককে চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে। তবে হাতের লেখা ও সই বুঝতে না পারার জন্য এখনও অনেককে চিহ্নিত করা যায়নি।
যে সব চিকিত্সকদের সনাক্ত করা গিয়েছে অবিলম্বে তাঁদের নামে ভবনীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব। বাকিদেরও যত দ্রুত সম্ভব সনাক্ত করতে এসএকেএম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশ রাজ্যে তেরোটি মেডিক্যাল কলেজে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই নির্দেশ পৌঁছে দেওয়া হবে রাজ্যের সমস্ত জেলা, মহকুমা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
তবে স্বাস্থ্য দফতরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ। তাদের মতে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের ব্র্যান্ড নেম লিখলে তা একপ্রকার বিধিভঙ্গ হয়। নিয়ম অনুসারে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিত্সককে প্রথমে শো কজ করতে হবে। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত্।
একেবারে সরাসরি চিকিত্সকের বিরুদ্ধে এফআইআরের সিদ্ধান্ত ঠিক নয় বলে দাবি সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের।