২১-এর জোয়ারে ভেসে তৃণমূলের নৌকায় উঠলেন দুই জোট বিধায়ক
একুশের সভাস্থল থেকে
সৌরভ পাল: একুশের সভাস্থল থেকে
এবার মঞ্চে নেই মহাশ্বেতা দেবী। একুশে'র মঞ্চে এটাই বোধহয় বিরহের সবথেকে প্রকট ছবি। এতক্ষণ পর্যন্ত সেটাই মনে হচ্ছিল। বিরহ যে দ্বিগুণ বিরহের রূপ নেবে তা তখনও আন্দাজ করা যাচ্ছিল না। এক বিরহে তৃণমূলে। আর দ্বিগুণ বিরহ বিরোধী শিবিরে। বিধানসভার দুই বিরোধী বিধায়ককে দলে এনে ফের চমক। লাড্ডু এবার একটা নয়, দুটো। প্রথম জন বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। দ্বিতীয় জন দীপালি বিশ্বাস। মালাদার গাজল বিধানসভাকেন্দ্র থেকে জয়ী বাম বিধায়ক। এই দুই'ই তৃণমূল কংগ্রেসের একুশের মঞ্চে উপস্থিত। রাজনৈতিক ভাষায় একেই বলে 'দল ভাঙন'। সাংবাদিক মহল থেকে রাজনৈতিক মহল, জল্পনা ছিলই। এবার একেবারে চোখের সামনেই প্রতিফলিত হল সেই জল্পনা।
শহিদ দিবসে কোন কোন বিধায়ক 'শহিদ' হবেন! হিট লিস্টে ছিলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মানস ভুঁইয়া। 'পিএসি' পদ নিয়ে ডঃ মানস আর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মধ্যে যে ধরনের 'টাগ অব ওয়ার' চলছিল, তাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলে এলে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছুই ছিল না। তবে সেটা হয়নি। 'সিএম ইস সফট টু মি', এই বক্তব্য ছিল ডঃ মানসের। তবে এখনই সরাসরি তৃণমূলে নয়।
তৃণমূলেরই নেতা ছিলেন রফিকুল ইসলাম। রাজনৈতিক টানাপড়েনে এবার সিপিএমের মদতে ভোটে জয়ী হন রফিকুল ইসলাম। বসিরহাটের বিধায়ক তৃণমূলে ফিরলে দলবিরোধী আইনেও কোনও সমস্যা হত না। তবে তৃণমূলেরই অনীহা রয়েছে রফিকুলে।
দুলাল বর। উপেন বিশ্বাসকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন এই কংগ্রেস বিধায়ক। এই বিধায়কের মন 'তৃণমূল তৃণমূল' করলেও, তৃণমূলের মনে এখনও জায়গা করতে পারেননি দুলাল।
লক্ষ্যে ছিলেন আরও দুই, তুষারকান্তি এবং দীপালি। বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে হারানো তুষারকান্তি ভট্টাচার্যকে দলে টেনে নিঃসন্দেহে চমক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুষারকান্তির রাজনৈতিক কেরিয়ারে এখন কংগ্রেসের আগে লেখা হবে তৃণমূল। আর জোটের কফিনে শেষ পেরেক অবশ্যই দীপালি বিশ্বাস। তৃণমূল এখন ২১১ থেকে ২১৩।