উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বিভ্রান্তি
নির্দিষ্ট দিনের আগে সংসদের পাঠানো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়া কি প্রশ্ন ফাঁস? না কি ফাঁস নয়? শিক্ষামন্ত্রী এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এই বিষয়ে টানাপোড়েনের জেরে সোমবার দিনভর বিভ্রান্তি ছড়াল। শেষে শিক্ষামন্ত্রীর চাপানো সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হলেও, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ মনে করছে, এভাবে পরীক্ষা নিতে হলে, আখেরে সমস্যাই বাড়বে।
নির্দিষ্ট দিনের আগে সংসদের পাঠানো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়া কি প্রশ্ন ফাঁস? না কি ফাঁস নয়? শিক্ষামন্ত্রী এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এই বিষয়ে টানাপোড়েনের জেরে সোমবার দিনভর বিভ্রান্তি ছড়াল। শেষে শিক্ষামন্ত্রীর চাপানো সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হলেও, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ মনে করছে, এভাবে পরীক্ষা নিতে হলে, আখেরে সমস্যাই বাড়বে। প্রশ্ন উঠছে, সংসদের পরীক্ষা বিভাগের একদল আধিকারিক, যাঁরা বিভিন্ন স্কুলে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন, তাঁদের ত্রুটি ঢাকতেই কি শিক্ষামন্ত্রী ফাঁস হওয়া প্রশ্নকে ফাঁস নয় বলে মনে করছেন?
সোমবার বিকেল চারটে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বুঝতে পারে, ৪ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে যে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা হওয়ার কথা, সেই পরীক্ষা কাটোয়ার কোশীগ্রাম ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে আগেই নিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় একমাস আগে এভাবে প্রথমে একটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে, পরে তাদের হাত থেকে বেআইনি পথে বহু ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। সব বিচার করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ঠিক করে, এভাবে নির্দিষ্ট দিনের আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ৪ জানুয়ারির পরীক্ষা স্থগিত রাখা হবে। নতুন করে তৈরি করা হবে প্র্যাকটিক্যালের পরীক্ষা সূচি।
এই সিদ্ধান্তের পরেই তড়িঘড়ি শিক্ষামন্ত্রীর ফোন আসে। প্রশ্নপত্র এভাবে নির্ধারিত দিনের আগে ছাত্রছাত্রীদের হাতে চলে যাওয়াকে প্রশ্নফাঁস বলে মানতে নারাজ তিনি। শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, যেহেতু ৪ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে কোনও একটি বিষয়ে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য কোনও নির্দিষ্ট দিন সংসদ ঠিক করেনি, সেহেতু ওই সময় পরীক্ষা নেওয়াও যা, ৩০ নভেম্বর পরীক্ষা নেওয়াও তাই। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ একটি স্বশাসিত সংস্থা, তবুও শিক্ষামন্ত্রী জোর দেন, নির্ধারিত দিন থেকেই পরীক্ষা নিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর এভাবে জোর খাটানোয় বিভ্রান্ত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা। তাঁদের যুক্তি, নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় দেড়মাস আগে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে চলে এলে, পরীক্ষার্থীদের পক্ষে অনুশীলন করে পরীক্ষায় পুরো নম্বর পাওয়া কোনও কঠিন বিষয় হবে না। সেক্ষেত্রে প্রশ্নপত্রের বদল দরকার ছিল। আবার প্রশ্ন বদল করে এই কম সময়ের মধ্যে সব স্কুলে পরীক্ষা নিতে গেলে সমস্যা কমার থেকে বাড়বে বলেই মনে করছেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার নির্ঘণ্টা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন সংসদ কর্তারা। কিন্তু সংসদের কোনও যুক্তি মানতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী। ফলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি মেনে ৪ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া হবে, কোন্ প্রশ্নে নেওয়া হবে, কোনও কিছুই এখনও সংসদের কাছে পরিষ্কার নয়।