মরদেহ রাখার জায়গা নেই মেডিকেলের মর্গে, মৃতদেহ 'ম্যানেজমেন্ট'-এ নিয়োগ অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার

পরিস্থিতি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সামলাতে মৃতদেহ 'ম্যানেজমেন্ট'-এর দায়িত্বে আনা হল এক অ্যাসিস্টেন্ট সুপারকে। যা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্যমহল!

Reported By: তন্ময় প্রামাণিক | Edited By: Priyanka Dutta | Updated By: May 18, 2020, 12:50 AM IST
মরদেহ রাখার জায়গা নেই মেডিকেলের মর্গে, মৃতদেহ 'ম্যানেজমেন্ট'-এ নিয়োগ অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার

তন্ময় প্রামাণিক: প্রায় সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালই মেডিকেলে রোগী রেফার করছে। কাজেই বাড়ছে রোগীদের ভিড়। শুধু কোভিড নয়, অন্যান্য রোগেও মৃত্যু হয়েছে অমেকের। আর সবমিলিয়ে হাসপাতালে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। অন্যদিকে শেষ ৪৮ ঘণ্টায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে। পরিস্থিতি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সামলাতে মৃতদেহ 'ম্যানেজমেন্ট'-এর দায়িত্বে আনা হল এক অ্যাসিস্টেন্ট সুপারকে। যা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্যমহল!

আরও পড়ুন: চতুর্থ দফার লকডাউনে আপনার জেলায় করোনা পরিস্থিতি কী? জেনে নিন

সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিকেল কলেজের মর্গে আর মরদেহ রাখার জায়গা নেই। মৃতদেহ রাখার বাড়তি ব্যবস্থা করতে আবেদন জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয় স্বাস্থ্য ভবনকে। আবেদন পাওয়া মাত্রই দ্রুত ছটি দেহ রাখার ডিপ ফ্রিজ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। কেউ নভেল করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কেউ বা সাড়ি উপসর্গ এ ভর্তি হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে মৃতদেহ রাখতে অসুবিধায় পড়েছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। 

 কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, অ্য়ানাটমী বিভাগে বিশেষভাবে বসান হচ্ছে ডিপফ্রিজ। আপাতত সেখানে ছটি দেহ রাখা যাবে। মর্গ এবং অ্যানাটমী বিভাগের অন্য জায়গায় মোট ৫টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। সব মিলিয়ে সোমবার অথবা মঙ্গলবার থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ১১টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

যদিও সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুর থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত  যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের প্রত্যেকে করোনা পজেটিভ নয়। তাঁদের মধ্যে অন্যান্য রোগের কারণে মৃতরাও রয়েছে। তবে একের পর এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় কিন্তু বেশ কিছুটা ভয় ছড়িয়েছে ওয়ার্ডের সাফাই কর্মী এবং অন্যান্য কর্মীদের মধ্যেও। গ্রিন বিল্ডিংয়ে রয়েছেন সারি উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীরা। সেখানেও একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। 

আরও পড়ুন: ৩১ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে বাড়ল লকডাউনের মেয়াদ, জারি নতুন নির্দেশিকা

এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের এক অন্যতম শীর্ষ কর্তা বলেন, "বেসরকারী হাসপাতাল এবং অন্য হাসপাতাল থেকে এমন সময় রোগীকে এখানে রেফার করা হচ্ছে, তিনি ভেন্টিলেশন নিয়ে আসছেন অথবা সেই মুহূর্তে সিসিইউ প্রয়োজন। অর্থাৎ চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় রোগীর আসছেন। আমরা চিকিৎসা শুরু করার আগেই কিংবা চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের মৃত্যু ঘটছে। তাই মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।"

এদিকে রয়েছে আরও এক সমস্যা। পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে কন্ট্রাক্ট সংস্থার অধীনে কাজ করা ঠিকা কর্মীদের অনেকেই এত মৃত্যুর ঘটনা দেখে ভয় ওয়ার্ডে রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বা কাজে আসছেন না। পরিস্থিতি সামাল দিতে নগদ  টাকা গুনে প্রতিদিন চুক্তিভিত্তিক নতুন নতুন কর্মী নিয়োগ করার কাজ চলছে। সব মিলিয়ে নাজেহাল পরিস্থিতি কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

.