কাঁকুরগাছি হত্যালীলা: বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে ছেলেকে নিয়েই কলকাতায় আসেন জামাই অমিত
শুধু ডিভোর্সের মামলা সংক্রান্ত বিবাদ নাকি এর পিছনে সম্পত্তিগত বা অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে?
নিজস্ব প্রতিবেদন : জোড়া খুন ও আত্মহত্যা। সোমবার সন্ধ্যায় শহর কলকাতার শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে কাঁকুরগাছির ঘটনা। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শাশুড়িকে খুন করে আত্মঘাতী জামাই। ভয়ঙ্কর এই ঘটনায় সারা শহর জুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। কিন্তু তখনও বীভৎস এই 'নাটকের' সম্পূর্ণ পর্দা ওঠা বাকি ছিল। পুলিস তদন্ত শুরু করতেই সামনে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। অমিতের লিখে সুইসাইড নোট থেকে পর্দাফাঁস হয় 'খুনের ক্রোনোলজি'র। জানা যায়, বেঙ্গালুরুতে প্রথমে স্ত্রী শিল্পীকে খুন করে অমিত আগরওয়াল। তারপর ঠান্ডা মাথায় বিমানে সে কলকাতায় আসে। কলকাতায় এসেই ফুলবাগানে শ্বশুরবাড়িতে আসে অমিত। সেখানে ডিভোর্সের মামলা নিয়ে বচসা চলাকালীন-ই শাশুড়ি ললিতা দেবীকে খুন করে জামাই অমিত। তারপর নিজেও আত্মঘাতী হয়। তদন্তে নেমে হত্যালীলার এই পর্যায়ক্রম পুলিসের সামনে উঠে এলেও খোঁজ মিলছিল না শিল্লী ও অমিতের ছেলের। অবশেষে সোমবার রাতে সেই ছেলের খোঁজ পেল পুলিস।
জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু থেকে ছেলেকে নিয়েই কলকাতা এসেছিল অমিত। বিমানবন্দর থেকে ভাইয়ের কাছে ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়েছিল সে। তারপর কলকাতা থেকেই ৬mm পিস্তল জোগাড় করে সে। এখন এই পিস্তলের খোঁজ অমিত কোথা থেকে পেল? কে বা কারা তাঁকে পিস্তলের খোঁজ দিল? তারই খোঁজ করছে পুলিস। পাশাপাশি, শুধু ডিভোর্সের মামলা সংক্রান্ত বিবাদ নাকি এর পিছনে সম্পত্তিগত বা অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে? জোড়া খুন ও আত্মহত্যার পিছনে মোটিভ কী? তা নিয়েও এখনও ধন্দে পুলিস। সবদিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত চালাচ্ছেন অফিসাররা।
অন্যদিকে বেঙ্গালুরুর পুলিস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কলকাতা পুলিসের কাছ থেকে খবর পেয়েই শিল্পী আগরওয়ালের ফ্ল্যাটে যায় মহাদেবপুর থানার পুলিস। ডাকাডাকির পরেও শিল্পী আগরওয়াল দরজা না খোলায়, তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢোকে পুলিস। ফ্ল্যাটের ভিতর রান্নাঘর থেকে পুলিস শিল্পী আগরওয়ালের দেহ উদ্ধার করে। রান্নাঘরে একটি কাবার্ডের পাশে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল নিথর দেহটি। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে অমিত আগরওয়ালের লেখা একটি নোটও উদ্ধার করেছে পুলিস। খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে মহাদেবপুর থানার পুলিস।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে জামাই অমিতের সঙ্গে মেয়ে শিল্পীর ডিভোর্স ফাইল হয়েছিল দু-বছর আগে। সেই মামলা ছিল। এরপর সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ফুলবাগানে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে দেখা করতে আসে অমিত। তখনই ডিভোর্স নিয়ে জামাই ও শাশুড়ির বচসা শুরু হয়। এরপরই আচমকা শাশুড়ি ললিতাকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে গুলি করে অমিত। ভয় পেয়ে শ্বশুর ফ্ল্যাটের বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দরজা আঁটকে দেন। পাশের ফ্ল্যাটে গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানান বৃদ্ধ। ততক্ষণে ফ্ল্যাটের ভিতর আত্মঘাতী হয়েছে অমিতও।
আরও পড়ুন, রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪,৩৫৮, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৬৯ জনের