ত্রিকোণ প্রেম! কালীঘাটে নিখোঁজ ঘাটশিলার তরুণীর দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য
সুস্মিতার ফোন ঘেঁটে পুলিস জানতে পেরেছে, ১০ ডিসেম্বর টানা দেড় ঘণ্টা তিন জনে কনফারেন্সে কলে কথা বলেন। সেদিন রাতেই রুমমেটকে ঘাটশিলা যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সুস্মিতা।
নিজস্ব প্রতিনিধি: আত্মহত্যা নাকি খুন? কালীঘাটে নিখোঁজ ঘাটশিলার তরুণীর দেহ উদ্ধার ঘিরে ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে রহস্য। গঙ্গা থেকে নিখোঁজ তরুণী সুস্মিতা রায়ের দেহ উদ্ধার করে উত্তর বন্দর থানার পুলিস। দেহ সনাক্ত করেছে পরিবারও। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ত্রিকোণ প্রেমের গল্প। উঠে আসছে ঘাটশিলারই দুই যুবকের নাম।
বিমানসেবিকার প্রশিক্ষণ নিতে এসে কালীঘাটের ঈশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় স্ট্রিট থেকে গত ১০ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়ে যান ঘাটশিলার তরুণী সুস্মিতা রায়। তরুণীর পরিবারের নিখোঁজ ডায়েরি পেয়ে তদন্তে নামে পুলিস। প্রাথমিকভাবে তরুণীর রুমমেটের ওপর নজর পড়ে। কিন্তু বুধবার সকালে গঙ্গা থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধারের পর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়।
আরও পড়ুন: বিমানসেবিকার প্রশিক্ষণ নিতে এসে কালীঘাট থেকে নিখোঁজ ঘাটশিলার তরুণী
প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, ঘাটশিলার যুবক বিবেকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল সুস্মিতার। বিবেক ঘাটশিলাতেই একটি স্কুলে কর্মরত। বিমানসেবিকার প্রশিক্ষণ নিতে কিছুদিন আগে কলকাতায় আসেন সুস্মিতা। ট্রেনে গুরমিত বলে আরও এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ঘাটশিলার বাসিন্দা গুরমিতও। কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন।
ট্রেনের পরিচয় ক্রমেই গাঢ় হতে থাকেন। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত কথা হতে থাকে সুস্মিতা ও গুরমিতের। পরে তাঁরা দেখাও করেন। কিছুদিন আগে বিবেকের সঙ্গে সুস্মিতার সম্পর্কের কথা জানতে পারেন গুরমিত। পুলিসের দাবি, এরপর থেকেই জটিলতা বাড়তে থাকে।
তদন্তে পুলিস জানতে পারে, গুরমিত ও বিবেক পূর্ব পরিচিত। গুরমিতই নাকি বিবেকের চরিত্র খারাপ বলে সুস্মিতাকে জানিয়েছিল। অন্যদিকে, বিবেককে সুস্মিতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও জানিয়েছিল গুরমিত। এই নিয়েই তিন জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়।
সুস্মিতার ফোন ঘেঁটে পুলিস জানতে পেরেছে, ১০ ডিসেম্বর টানা দেড় ঘণ্টা তিন জনে কনফারেন্সে কলে কথা বলেন। সেদিন রাতেই রুমমেটকে ঘাটশিলা যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সুস্মিতা। রুমমেটের দাবি, সুস্মিতার সঙ্গে কোনও ব্যাগ ছিল না। কেন ব্যাগ ছাড়াই ঘাটশিলা ফিরছেন, সে প্রশ্ন করলে, সুস্মিতা জানান এক দিনের মধ্যেই ফের কলকাতায় ফিরে আসবেন তিনি। এরপর সেদিন রাতেই রুমমেট নিজের নম্বর থেকে ‘DONE’ বলে একটি এসএমএস করেন। সুস্মিতার রুমমেটরা পুলিসকে আরও জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সময়ে সুস্মিতা ঘরে দরজা বন্ধ করে ভিডিও চ্যাট করতেন। ভিডিও চ্যাট করার সময়ে তাঁকে আপত্তিকর অবস্থাতেও দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকবার।
আরও পড়ুন: মহানগরে ফের খুল্লমখুল্লা গুলি, এন্টালিতে গুলিবিদ্ধ ১
পুলিস জানিয়েছে, সুস্মিতার ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন ছিল হাওড়া। বুধবার সকালে গঙ্গা থেকে সুস্মিতার দেহ উদ্ধার হয়। সুস্মিতার দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিস। দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।