কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য (১৯৭০-২০১৭)

শুধু লোকগানই নয়, ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতেও ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত। লোকগানকে বাণিজ্যের মোড়কে বাঁধেননি কখনও। তাঁর গানে বরাবরই প্রাধান্য পেয়েছে লোকায়ত বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার। তিনি কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল। 

Updated By: Mar 7, 2017, 10:33 PM IST
কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য (১৯৭০-২০১৭)

ওয়েব ডেস্ক: শুধু লোকগানই নয়, ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতেও ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত। লোকগানকে বাণিজ্যের মোড়কে বাঁধেননি কখনও। তাঁর গানে বরাবরই প্রাধান্য পেয়েছে লোকায়ত বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার। তিনি কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল। 

হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান  শুনে বড় হওয়া। ছোট বেলা থেকেই মন ছুটত টুসু,ভাদু,ভাওয়াইয়ায়। ভাটিয়ালি সুরের উজান বাওয়া গান শুনতে শুনতে একসময় মনে হল জোট বাধা দরকার। তৈরি হল দোহার। 

অসমের শিলচরে জন্ম। পরিবারের আর পাচজনের মতই ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ ছিল কালিকার। বিভিন্ন ধরনের গান নিয়ে ধারাবাহিক চর্চা থেকে শুরু করে সংগ্রহ। দেশের অন্যন্য জায়গা ছাড়াও ছুটে গিয়েছেন বাংলাদেশ। বাউল-ফকিরদের আখরায়। কলা বিভাগে স্নাতক  হওয়ার পর শিলচর ছেড়ে চলে আসেন কলকাতায়। তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে স্নাতোকোত্তরে ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।  কাকা অনন্ত ভট্টাচার্যর মৃত্যুর পর তাঁর বিপুল গানের সম্ভার নিয়ে কাজ শুরু করেন কালিকাপ্রসাদ। উনিশশো নিরানব্বইয়ে শুরু করেন  গানের দল দোহার। 

শুধু কী লোকসঙ্গীত! ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতেও অসামান্য দখল ছিল তাঁর। দীর্ঘদিন নানা শিল্পীর সঙ্গে হারমোয়িয়ামে সঙ্গত করেছেন । তবলার তালিম নিয়েছেন পণ্ডিত অনিল ভট্টাচার্যর কাছে। গানের সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রও বাজাতে পারতেন কালিকাপ্রসাদ। লোকগানকে বাণিজ্যের মোড়কে বাঁধেননি কোনওদিন। মাটির গান গেয়েছেন লোকায়ত যন্ত্র নিয়েই।  সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সিনেমার গানে সুর করছিলেন তিনি। লোকসঙ্গীতকে নতুন আঙ্গিকে মানুষের সামনে তুলে ধরার পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত থেকেছেন অধিকাংশ সময়। বাংলা বিনোদন চ্যানেলের অসম্ভব জনপ্রিয় রিয়ালিটি শোতে প্রতিযোগীদের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েছেন।  তাঁর হাত ধরে সঙ্গীতের আঙিনায় পা রেখেছেন অনেকে।  পরম যত্নে তাঁদের মূল স্রোতে আনার কাজ করছিলেন কালিকাপ্রসাদ। শিল্পীর অকালমৃত্যুতে অভিভাবকহীন হলেন তাঁরা। শোকস্তব্ধ অসংখ্য গুণমুগ্ধ।

.