Kamduni: ‘বিচার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে’, কামদুনির রায় শুনে ক্ষোভে-কান্নায় ফেটে পড়লেন মৌসুমী-টুম্পা
হাইকোর্টের সামনের রাস্তাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌসুমী। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘এরা সবাই টাকারা কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। সরকারি উকিল টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আজ আর মেয়েটা বিচার পেল না। যারা দোষী তারা সাজা পেল না। আমরা এই রায় আশা করিনি।’ কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারান মৌসুমী কয়াল।
![Kamduni: ‘বিচার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে’, কামদুনির রায় শুনে ক্ষোভে-কান্নায় ফেটে পড়লেন মৌসুমী-টুম্পা Kamduni: ‘বিচার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে’, কামদুনির রায় শুনে ক্ষোভে-কান্নায় ফেটে পড়লেন মৌসুমী-টুম্পা](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2023/10/06/440763-kamduni.png)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দীর্ঘ ১০ বছরের অপেক্ষা, বুকে পাথর রেখে বিচার ব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা কামদুনি(Kamduni)। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) সেই রায়দানের পরেই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নির্যাতিতার বাবা-দাদা, তাঁর দুই বান্ধবী টুম্পা কয়াল(Tumpa Koyal) ও মৌসুমী কয়াল(Mousumi Koyal)। নারকীয় এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল মোট ৯ জন। কিন্তু নিম্ন আদালতে মামলা চলাকালীনই মৃত্যু এক অভিযুক্তের। বেকসুর খালাস পেয়ে যায় আরও ২ জন। কলকাতায় নগর দায়রা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় বাকি ৬ জন। ৩ জনকে মৃত্যদণ্ড আর ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। এরপর মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। যে ৬ জন দোষী সাব্যস্ত হয়, হাইকোর্টে সাজা কমানোর আবেদন জানান তারা। সেই মামলার শুনানি শেষ হয় শুক্রবার।
আরও পড়ুন- Newtown Murder: নিউটাউনে পড়ুয়ার হাড়হিম হত্যাকাণ্ড, হাত-পা বাঁধা সুটকেসবন্দি দেহ উদ্ধার
আনসার আলি মোল্লাকে ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সইফুল আলি মোল্লাকে ফাঁসির পরিবর্তে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। আমিন আলির ফাঁসির সাজা হয়েছিল, আজ মুক্তি পেল সে। শেখ ইমানুল ইসলাম, ভোলানাথ নস্কর, আমিনুর ইসলাম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরিবর্তে ছাড়া পেল।
হাইকোর্টের সামনের রাস্তাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌসুমী। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘এরা সবাই টাকারা কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। সরকারি উকিল টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আজ আর মেয়েটা বিচার পেল না। যারা দোষী তারা সাজা পেল না। আমরা এই রায় আশা করিনি।’ কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারান মৌসুমী কয়াল।
কান্নায় ভেঙে পড়েন টুম্পাও। তিনি বলেন, ‘ভয় আমি আর পাচ্ছি না। আমি বুঝে গেছি, এই রাজ্যে বাঁচতে হলে আমাদের লড়াই করেই বাঁচতে হবে। একের পর এক যে যে কাণ্ড ঘটছে, একের পর এক মায়ের কোল খালি হচ্ছে। এই রাজ্যে কোনও বিচার নেই। টাকা দিয়ে বিচারও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে যাব, তাতে যদি আমার জীবনও চলে যায় তাহলে তাই যাক। যারা দোষী তাদের কেন ছেড়ে দেওয়া হল’।
আরও পড়ুন-Kamduni Case: অপ্রত্যাশিত! ১০ বছর অপেক্ষার পর কামদুনিকাণ্ডে 'লঘু দণ্ড'...
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৭ জুন, রাজ্যে তখন সদ্য পালাবদল ঘটেছে। প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে কলেজ থেকে ফেরার পথে প্রথমে গণধর্ষণ, তারপর খুন করা হয় এক ছাত্রীকে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্যে। দোষীদের চরম সাজার দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। নারকীয় এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। শুধু গণধর্ষণই নয়, নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছিল কামদুনির নির্যাতিতার উপর, যা দেখে শিউরে উঠেছিল শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশ।
আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায় জানিয়েছেন, যাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যেভাবে যুক্ত ছিলেন তাতে তাঁদের সাত বছরের কারাদন্ড হতে পারে। তাই যেহেতু তাঁরা ইতিমধ্যেই ১০ বছর কারাবাস করেছেন তাই ১০০০০ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, যে এই রায়ে তাঁরা হতাশ। তিনি আরও বলেন, নির্ভয়ার ঘটনার পরেই কামদুনির এই ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে নির্ভয়ার জন্য আইপিসি-র সেকশন বদলে গেল সেখানে কামদুনির এই ঘটনায় এই রায়ে তাঁরা হতাশ।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)