জোটে অশনিসংকেত! অপমানিত, বিশ্বাসভঙ্গ বলে 'একলা চলো'র ডাক প্রদেশ কংগ্রেসের
রায়গঞ্জ হারানোর ক্ষত ভুলতে পারছেন না দীপা দাশমুন্সি। প্রথম থেকে ওই আসনটি দাবি করে আসছিলেন।
মৌমিতা চক্রবর্তী
অপমানিত। বিশ্বাসভঙ্গ। সিপিএমের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরের দিন কংগ্রেসের সভায় এই শব্দগুলিই ঘুরেফিরে এল নেতাদের আলোচনায়। বক্তব্যের নির্যাস, সিপিএমের সঙ্গে জোট নয়। বরং রাজ্যে একা লড়াই করুক কংগ্রেস।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে শংকর মালাকার বলেন,''এই জোট আমরা চাই না দিল্লি কে বলে দেওয়া হোক। সিপিএম আমাদের বিশ্বাসভঙ্গ করেছে''।
রায়গঞ্জ হারানোর ক্ষত ভুলতে পারছেন না দীপা দাশমুন্সি। প্রথম থেকে ওই আসনটি দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু ওই আসনটি হাইকম্যান্ডের নি্র্দেশে সিপিএমকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় কংগ্রেস। দীপার কথায়, ''রায়গঞ্জে একা লড়াই হলে আমরাই জিতব। দিল্লিকে জানিয়ে দেওয়া হোক। অনেক হয়েছে আর জোটের দরকার নেই। জোট বা আসন সমঝোতা চাই না। এত অপমানের পরেও কীসের জোট?''
শুভঙ্কর সরকার বলেন, ''রাহুল গান্ধী নিজে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। তার পরেও রাজ্যে সিপিএম নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা না শুনে আমাদের অপমান করে চলেছে। নিজেদের ইচ্ছা মতো সব কিছু করছে। আমার মনে হয় দিল্লিকে প্রদেশ জানিয়ে দিক, এভাবে আসন রফা সম্ভব নয়''। আবু হাসেম খান চৌধুরীর মতে, যেখানে আমাদের ক্ষমতা আছে, সেখানে আমরা প্রার্থী দেব। যে আসনে ক্ষমতা নেই লড়াই করব না, অপমানিতহয়ে আসন সমঝোতা করে কি লাভ
বৈঠকে সিপিএম তথা বামেদের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন দীপা দাশমুন্সি। সিপিএমের এত অপমান কংগ্রেস সহ্য করছে কি করে? কেন? ওরা ২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিলো! তারপরও আলোচনা চলছে বলছেন বিমান বসু। এআইসিসি আমাকে ও অধীরকে ডেকে চুপ থাকতে বলল, আমরা চুপ করে গেলাম। আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি সম্মান বজায় রেখে জোট করা যেতে পারে কিন্তু তারপরেই সিপিএম এত দূর এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাল, কিন্তু আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি। দীপার দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী গোটা দক্ষিণবঙ্গ ছেড়ে দিয়েছিল কংগ্রেস। বামেদের প্রার্থী তালিকায় তো উত্তরবঙ্গে কংগ্রেসের পতাকা কোথাও দেখা যাবে না। শুধু মালদহ আর মুর্শিদাবাদ ছাড়া হয়েছে। এটা কি ভবিষতের জন্য ভাল হচ্ছে? আমার তো মনে হয় এক্ষুনি কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে রাহুল গান্ধীকে জানিয়ে দেওয়া হোক। আমরা ১১ কি ১৩টি আসন পাব। এটা ঠিক নয়।
বৈঠকে জোটের পক্ষে সওয়াল করে প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ''সিপিএমের একটা ধারণা আছে, উত্তরবঙ্গের ৬টি আসনের বাইরে কোনও আসনেই জিততে পারব না। তাই এভাবে আলোচনা এগোচ্ছে, কিন্তু সেই নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে আলোচনা করা উচিত''।
আরও পড়ুন- Exclusive: মিমির পাল্টা শ্রাবন্তীকে প্রার্থী করে গ্ল্যামারে শাসককে টেক্কা বিজেপির?
পরিশেষে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন,''আপনাদের মতামতের সঙ্গে আমার মত খুব একটা আলাদা নয়, রাহুল গান্ধী এবং সীতারাম ইয়েচুরির আলোচনা হয়েছিল। দিল্লির সিদ্ধান্তে আমরা দুটো আসন ছেড়ে দিয়েছিলাম। আজ আপনারা সবাই খোলাখুলি বলেছেন, আপনাদের মতামত দিল্লিকে আজ রাতেই জানিয়ে দেব। এবার দিল্লি যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা গ্রহণ করব।