Mal River Flash Flood: জলপাইগুড়িতে বাতিল কার্নিভাল; জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব নবান্নের
দশমীর সন্ধেয় আচমকাই হড়পা বান জলপাইগুড়ির মাল নদীতে! প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে প্রাণ গেল শিশু-সহ ৮ জনের। মালবাজারে যাচ্ছে বিজেপি ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
সুতপা সেন ও কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: মাল নদীতে হড়পা বানে বিপর্যয়। প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে প্রাণ গেল শিশু-সহ ৮ জনের। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? আগাম সতর্কতা সত্ত্বেও আদৌও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি? জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করল নবান্ন। বিসর্জন ঘাটগুলিতে গিয়ে যখন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হল জেলাশাসকদের, তখন হড়পা বানে মৃতদের পরিবার পিছু অন্তত দশ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ও একজনকে চাকরি দেওয়ার দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জলপাইগুড়িতে বাতিল পুজো কার্নিভাল।
ঘটনাটি ঠিক কী? তখন প্রতিমা নিরঞ্জন চলছে। দশমীর সন্ধেয় আচমকাই হড়পা বান আসে জলপাইগুড়ির মাল নদীতে। প্রবল স্রোতে ভেসে যান বহু মানুষ। অনেকে আবার সাঁতার কেটে পাড়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু নদীতে স্রোত এতটাই বেশি ছিল যে,পাড়ের দিকে এগোতে পারছিলেন না তাঁরা! রাতভর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলে উদ্ধারকাজ। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকজনকে।
মাল নদীতে বিপর্যয়ের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মু্খ্যমন্ত্রী। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার। আর আহতরা পাবেন ৫০ হাজার টাকা। নিহত ও আহতদের একই অঙ্কের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
Anguished by the mishap during Durga Puja festivities in Jalpaiguri, West Bengal. Condolences to those who lost their loved ones: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2022
An ex-gratia amount of Rs. 2 lakh will be given to the next of kin of the deceased and Rs. 50,000 to the injured.
For any assistance kindly reach out to the following helpline numbers- 03561230780 / 9073936815.
Let us stand together in these times of distress.
(3/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 6, 2022
নবান্ন সূত্রে খবর, বিসর্জনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি জেলার প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল। নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে ঘাটে যেন বেশি লোকের জমায়েত না হয় এবং কেউ যাতে নদীর বেশি গভীরে চলে না যান, তা নিশ্চিত করতে এলাকাভিত্তিক নজরদারি চালাতে হবে। শুধু তাই নয়, মাল নদীতে হড়পা বানের আগাম সতর্কবার্তাও ছিল। তাহলে কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? জেলা প্রশাসনের কাছে এবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট চাইল নবান্ন। রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যসচিব।
এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে খুন হন তৃণমূলের উপ-প্রধান ভাদু শেখ। সেই ঘটনার পর আবার আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান ৮ জন। তখন বগটুই গ্রামে দিয়ে নিহত ও আহতদের আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। চাকরিও দেওয়া হয়েছিল নিহতদের পরিবারের একজনকে।
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করেন, 'রামপুরহাটের বগটুইতে নিজে ছুটে গিয়ে চেক বিলি করলেন, এখানে তেমন করলেন না কেন মাননীয়া?এঁদের দোষ কি? মা দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে মারা যাওয়ার জন্য এঁদের গুরুত্ব আপেক্ষিক ভাবে কম? প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য এই বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ অন্তত দশ লক্ষ্য টাকা হওয়া উচিত'। তাঁর দাবি, 'মৃতদের পরিবারের হাতে এই আর্থিক সহায়তা তাড়াতাড়ি তুলে দেওয়া হোক এবং পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। আহতদের অন্তত এক লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব'। আগামিকাল, শুক্রবার মালবাজারে যাচ্ছে বিজেপির ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধি দলে থাকছেন ৭ বিধায়ক, সাংসদ ও জেলা সভাপতি।
রামপুরহাটের বগটুইতে নিজে ছুটে গিয়ে চেক বিলি করলেন, এখানে তেমন করলেন না কেন মাননীয়া?
এঁদের দোষ কি? মা দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে মারা যাওয়ার জন্য এঁদের গুরুত্ব আপেক্ষিক ভাবে কম?
আমার দাবি হলো প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য এই বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ অন্তত দশ লক্ষ্য টাকা হওয়া উচিত;— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) October 6, 2022
মৃতদের পরিবারের হাতে এই আর্থিক সহায়তা তাড়াতাড়ি তুলে দেওয়া হোক এবং ওনাদের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে l
আহতদের অন্তত এক লক্ষ্য টাকা আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব l— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) October 6, 2022
এদিকে স্রেফ কলকাতার রেড রোডে নয়, আগামিকাল জেলায় জেলায় হবে পুজো কার্নিভাল। মাল নদীতে বিপর্যয়ের জেরে জলপাইগুড়ি কার্নিভাল বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। কার্নিভালে অংশ নিতে রাজি নয় জেলার বেশিরভাগ বড় পুজো কমিটিই।