'সচেতনতার দায় আমাদেরই', সোশ্যাল চাপে মা-কে মেডিক্যালে আনা হল না জুনিয়র চিকিৎসকদের

কথা ছিল ধর্মীয় আচার, আড়ম্বর নয়, ষষ্ঠীর দিন রক্তদান শিবিরের মধ্যে দিয়ে বোধন হবে মায়ের। তবে সেসব কিছুই আর হল না। একের পর এক নিশানার মুখে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল "মা আসছেন না মেডিক্যালে।" 

Reported By: Priyanka Dutta | Updated By: Oct 14, 2020, 02:13 PM IST
'সচেতনতার দায় আমাদেরই', সোশ্যাল চাপে মা-কে মেডিক্যালে আনা হল না জুনিয়র চিকিৎসকদের
ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: "হাসপাতালে পুজো হচ্ছিল না, বাইরে জুনিয়রদের পুজো করার কথা ছিল। যেহেতু হাসপাতাল চত্বরে পুজো নয়, সেহেতু অনুমতি বা বন্ধ করিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।" মেডিক্যালের পুজো বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন মেডিক্যালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। এবার আসা যাক মূল প্রসঙ্গে। 

প্যান্ডেল বাঁধা হয়ে গিয়েছিল। ঠাকুর তৈরিও প্রায় শেষের পথে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল করোনা আবহে 'মডেল পুজো' হবে মেডিক্যাল কলেজের মেইন বয়েজ হস্টেল প্রাঙ্গনে। দেওয়া হবে মাস্ক, স্যানিটাইজার। তবে জুনিয়র চিকিৎসকদের ভাবনাটুকুই সার হল। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য, পারিপার্শ্বিক চাপে শেষ পর্যন্ত পুজো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা।

কথা ছিল ধর্মীয় আচার- আড়ম্বর নয়, ষষ্ঠীর দিন রক্তদান শিবিরের মধ্যে দিয়ে বোধন হবে মায়ের। তবে সে সব কিছুই আর করা হল না। একের পর এক নিশানার মুখে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল "মা আসছেন না মেডিক্যালে।" 

প্রেস রিলিজের একটি অংশে বলা হয়েছে, "এতদূর এগোনোর পরেও (প্যান্ডেল, প্রতিমা সব কিছুই প্রস্তুতি শেষপর্বে ছিল) আমরা সমস্ত 'সচেতনতার' দায় মাথায় নিয়ে পুজো ও আনুষঙ্গিক সব পরিকল্পনা বন্ধ করছি। আমরা আমাদের কলেজ, হাসপাতাল তথা চিকিৎসক সমাজের প্রতি কোনও অযথা মিথ্যা অভিযোগ-সমালোচনার কারণ হতে চাই না।"

শুরু থেকেই পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছিলেন, হাসপাতালের মূল চত্বরে পুজো করার "অন্যায় আবদার" তাঁরা কোনওদিনই করেননি। হাসপাতাল চত্বরের বাইরেই মেইন বয়েজ হস্টেলের সামনে ছোট করে পুজো করতে চেয়েছিলেন। এই পুজো বারোয়ারিও নয়। প্রায় ছ'মাস ধরে যেই ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মীরা এখানে প্যানডেমিকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, যাঁরা মহোৎসবের দিনগুলোতে বাড়িও ফিরতে পারছেন না তাঁদের সাময়িক মনের আরাম দিতেই এই পুজোর আয়োজন। দীর্ঘ একঘেয়েমি থেকে স্রেফ ক্ষণিকের স্বস্তি।

এখন প্রশ্ন উঠছে সচেতনতার দায় কি একা চিকিৎসকদেরই। দিন-রাত এক করে পরিষেবা দেওয়ার পরেও কি সামাজিক কোনও অনুষ্ঠানেই যোগ দেওয়ার অধিকার নেই তাঁদের? উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্য় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মীই পুজোর সময় ছুটি পাবেন না। কাজেই পুজোর দিনগুলোতেও ডিউটিতেই থাকছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে পুজো হলে এসবের মধ্যেও খানিক নিঃশ্বাসের জায়গা মিলত। কিন্তু সেটুকুও আর হচ্ছে না। যা স্বাভাবিকভাবেই হতাশ করেছে মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসকদের। 

.