Netaji Birthday Celebration: বাংলাকে অবজ্ঞা! বাঙালির ইতিহাস মুছে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই: হুঁশিয়ারি মমতার
বাংলার ইতিহাস ভারতের ইতিহাস। আন্দামানের সেলুলার জেলে যদি যান তাহলে দেখবেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম রয়েছে বাংলার। তার পরে রয়েছে পঞ্জাবের নাম
নিজস্ব প্রতিবেদন: নেতাজির ১২৫তম জন্ম শতবার্ষিকী পালন অনুষ্টানে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কলকাতার রেড রোডের এক অনুষ্টানে বাংলাকে অবজ্ঞা করার অভিযোগ তুললেন তিনি। পাশাাপাশি তাঁর হুঁশিয়ারি, বাংলা-বাঙালির ইতিহাস মুছে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। ধর্মের নামে দেশকে বিভাজন করার চেষ্টা চলছে।
রেড রোডে নেতাজি জন্মবার্ষিকী পাল অনুষ্ঠানে মমতা বলেন
## কেন্দ্র নেতাজি প্ল্য়ানিং কমিশন তুলে দিয়েছিল। আমরা কিন্তু বাংলায় প্ল্য়ানিং কমিশন করছি। নেতাজির নামে স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি তৈরি হবে। নেতাজি গোটা বিশ্বে স্বাধীনাতা আন্দোলনের প্রতীক। বাংলাই ছিল তাঁর কর্মস্থল। আলিপুর জেলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার বহু স্বাধীনাতা সংগ্রামীর স্মৃতি। সেখানে একটি মনুমেট তৈরি হবে।
## নেতাজি আজাদ হিন্দ বাহিনী তৈরি করেছিলেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। ভারতকে স্বাধীন করা জন্য নিজেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে ইংরেজের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছিলেন। রাজ্যের সব স্বাধীনাতা সংগ্রামীর কথা স্মরণ করে আমরা ২৩-৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করব।
## আজ কেউ কেউ হিন্দু মুসলমান করে বেড়ান। দেশটাকে ভাগ করতে চান। তাদের বলব একবার বিবেকানন্দ পড়ে দেখুন। একবার সুভাষচন্দ্রটা পড়ুন ভালো করে। রবীন্দ্রনাথ-গান্ধীজিটা জানুন। দেখুন তারা কী বলে গিয়েছেন। কেউ কখনও বলেননি দেশটাকে ভাগ করে জাতীয় ঐক্য হয়। দেশকে ঐক্যবদ্ধ রেখেই জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়। আমরা অন্তর থেকে দেশকে ভালোবাসি না। তাই আমরা গৃহযুদ্ধ করি। তাই আমাদের মধ্যে জন্ম নেয় মিরজাফর, উমিচাঁদ। তারা আজও মরেনি। তাদের বংশ বেড়ে চলেছে। এইসব কথা যিনি বলেছিলেন তাঁর নাম নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
## ত্যাগ ও উপলব্ধি না থাকলে মানুষ তৈরি হয় না। ষোল আনা পেতে গেলে ষোল আনা দিতেও হয়। এমনটাই বলেছিলেন নেতাজি। বিখ্যাত মানুষদের কথা পড়ে দেখবেন তারাই বলেছিলেন, নেতা কখনও গাছ থেকে পড়ে না, কাজের মাধ্যমে তৈরি হয়।
## বিখ্যাত মানুষদের ওই কথা আজও মনে রেখে চলেছি। আজ যদি কেউ এসে বলে ইতিহাস ভুলে যেতে হবে। তাদের বলব সরি, ভুলতে পারব না। বরং আমাদের দায়িত্ব, ইতিহাস ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সেটা করতে আমি চাই পাঠ্য পুস্তকে বাংলা ও দেশের দেশপ্রেমের ইতিহাস বারবার পড়ানো হোক।
## গান্ধীজির রাজনৈতিক জীবনের অর্ধেক কেটেছে এই বাংলায়। ১৯৪৭ সালে ভারত যখন স্বাধীনতা লাভ করছে তখন গান্ধীজির সেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কারণ নেতাজি তখন ছিলেন না । সেই যে নেতাজি বাইরে চলে গেলেন আজও আমরা জানি না তিনি কোথায়। ভারতের স্বাধীনতার সময়ে গান্ধীজি দিল্লিতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন কলকাতায়। অনশন করছিলেন যাতে দাঙ্গা না হয়।
## এই সরকার বলেছিল তারা নেতাজির সব রহস্য উদঘাটন করবে। কিছুই করেনি। বাংলায় নেতাজি সংক্রান্ত সব নথি আমরা ডিজিটাইজ করা হয়েছে। কলকাতা পুলিসের আর্কাইভে তা রয়েছে।
## কখনও কখনও কোনও কোনও রাজনৈতিক দল কলকাতা কিলিংসের কথা বলে। আমরা প্রশ্ন, সেই সময় আপনারা কোথায় ছিলেন? আপনাদের ভূমিকাই কী ছিল?
## বাংলার ইতিহাস ভারতের ইতিহাস। আন্দামানের সেলুলার জেলে যদি যান তাহলে দেখবেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম রয়েছে বাংলার। তার পরে রয়েছে পঞ্জাবের নাম। এই যে ইন্ডিয়ান আর্মি, তার প্রথম রূপ দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
## আজ ওয়ার মেমোরিয়াল নিয়ে রাজনীতি করছেন! আমরা সব শহিদের শ্রদ্ধা জানাই। শহিদের মধ্যে কোনও ভাগাভাগি হয় না। স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। সব ধরনের মানুষ, সব ধর্মের মানুষ প্রাণ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-নেতাজি জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবিতে আরও একবার সরব মমতা!
## দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আর সেই বাংলাকেই অবজ্ঞা! বাঙালির ইতিহাস মুছে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। আমরা চ্যালেঞ্জ রইল। ভারতের প্রকৃত ইতিহাস মুছে দেওয়ার ক্ষমতাও কারও নেই। যারা ওই কাজ করবেন তারা আগুনে হাত পোড়াবেন। এটা জেনে রাখবেন।
## মশাল দিয়ে আগুন জ্বেলে সৈনিক-শহিদদের সম্মান জানান। একটা অমর জ্যোতি নিভিয়ে একটা নেতাজি মূর্তি গড়ে দিলেই নেতাজিকে ভালোবাসা যায় না। নেতাজির মৃত্যু রহস্য তো এতদিনও বের করতে পারলেন না। স্বাধীনতার এতদিন পরও কেউ জানলে না কোথায় গেলেন নেতাজি?
## যাদবপুরের এক ইতিহাসের সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রত্যকটি ঐতিহাসিক বলেছেন ভারতের ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মূর্তি দিয়ে সবকিছু হয় না। অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়।