বর্ষার খামখেয়ালীপনায় মহার্ঘ ইলিশ
মহানন্দার জলে প্লাবিত উত্তরবঙ্গ। এদিকে বর্ষার আনুকুল্য থেকে একেবারেই বঞ্চিত দক্ষিণবঙ্গ। ফলে খাতায় কলমে ভর বর্ষার মরসুমেও বাঙালির পাতে গরহাজির রূপোলি ইলিশ।
মহানন্দার জলে প্লাবিত উত্তরবঙ্গ। এদিকে বর্ষার আনুকুল্য থেকে একেবারেই বঞ্চিত দক্ষিণবঙ্গ। ফলে খাতায় কলমে ভর বর্ষার মরসুমেও বাঙালির পাতে গরহাজির রূপোলি ইলিশ।
ভাল বর্ষা না হওয়ায় বাজারে বড় ইলিশের দেখা মিলছেনা। পদ্মার রানী তো দুরস্ত, দীঘার মোহনা থেকেও এখনও শহরের বাজারে আসেনি সে। যেটুকু এসেছে, তাতে মধ্যবিত্তের খুশি হবার কারণ নেই। বরং আশঙ্কা রয়েছে ষোলো আনা। কারণ মহার্ঘ সেই মাছের রানীর দাম ১০০০ কোঠায়। সোমবার বাজারে গিয়ে তাই কপালে ভাঁজ মধ্যবিত্ত ক্রেতার। এদিনের ইলিশের বাজারদর ছিল-
বাংলাদেশি ইলিশ ১০০০ টাকা কেজি
দীঘার মাঝারি ইলিশ ৯০০ টাকা
স্থানীয় ছোট ইলিশ ৭০০ টাকা
কিন্তু এই আকালের কারণ কী? মেদিনীপুরের মত্স্যজীবীদের বক্তব্য অনুযায়ী, পূবালি হাওয়ার টানে প্রতি বর্ষায় বঙ্গোপসাগরে হাজারে হাজারে ঢুকে পড়ে ইলিশের ঝাঁক। সেই ইলিশে স্বাদ আসে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে। এবার দুয়েরই আকাল। তাই আকাল ইলিশেরও। মত্স্যজীবীরা বলছেন, গত ২ মরশুম ধরেই ইলিশ ধরার হার কমছিল। এবার প্রায় তা পঞ্চাশ শতাংশ কমে গিয়েছে। ইলিশের অভাব প্রভাব ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের অর্থনীতিতেও। জেলার অর্থনীতির এক বড় অংশ আসে মাছ থেকেই। কিন্তু, ৬ জুন থেকে শুরু হওয়া ইলিশ ধরার মরসুমের ছবিটা বড়ই করুণ।
মত্স্যজীবীদের অভিযোগ, ভারতীয় জলসীমার মধ্যে স্যান্ডহেড এলাকা থেকে মাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি ট্রলার। তাতেও মার খাচ্ছে তাদের জীবিকা। উন্নত দেশগুলিতে অর্থনৈতিক সঙ্কটও ইলিশ ব্যবসায় মন্দার অন্যতম কারণ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে আমেরিকা, জাপান, ইউরোপে বছরে প্রায় তিনশো কোটি টাকার ইলিশ রফতানি করতেন তাঁরা। কিন্তু, এবার প্যাকিং হওয়ার পরেও হিমঘরেই পড়ে রয়েছে ইলিশ। চড়া দামের চোটে কেনার লোক নেই। সব মিলিয়ে আকাল ইলিশের।