পক্ককেশীদের সরিয়ে তরুণ মুখ, সীতারামের চমকের ইঙ্গিতেও থাকছে হাজারো প্রশ্ন

সিপিএমে নতুন মুখ কই? বছরের পর বছর ধরে এ প্রশ্নটাই ঘুরছে। 

Updated By: Jun 4, 2019, 11:44 PM IST
পক্ককেশীদের সরিয়ে তরুণ মুখ, সীতারামের চমকের ইঙ্গিতেও থাকছে হাজারো প্রশ্ন

মৌমিতা চক্রবর্তী

বৃদ্ধতন্ত্রের ভারে জরাজীর্ণ আলিমুদ্দিন। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর কি পক্ককেশীদের সরিয়ে নতুন মুখ আনবে সিপিএম? নতুন নেতার খোঁজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মঙ্গলবার ইঙ্গিত দিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। একইসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, তরুণ নেতৃত্বের অভাব নেই দলে। ইয়েচুরির দাবি, আগামিদিনে নেতৃত্বে বড় চমক দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, তরুণ মুখ মানে আবারও সেই ধোপধুরস্ত চোস্ত ইংরেজি জানা তাত্ত্বিক নেতা?   

সিপিএমে নতুন মুখ কই? বছরের পর বছর ধরে এ প্রশ্নটাই ঘুরছে। বৈঠকের পর বৈঠক করেও তেমন নতুন নেতা আনতে পারেনি  এ রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তরুণ মুখকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হয়েছিল। কিন্তু ঋতব্রতে বিনিয়োগ করে লাভ তুলতে পারেনি আলিমুদ্দিন। এখনও সিপিএম বলতে সেই বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। এমনকি লোকসভা ভোটের আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুরনো সাক্ষাত্কার ফেসবুকে দিয়ে প্রচার চালিয়েছিল সিপিএম। নতুন মুখের অভাব তাতেই প্রকট হয়েছিল। এর আগেও বারবার নতুন মুখ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তা  রয়ে গিয়েছে আলোচনারস্তরেই। তবে লোকসভা ভোটে শোচনীয় হারের পর এবার বদলের ভাবনায় সিপিএমও, তার ইঙ্গিত দিলেন দলের সাধারণ সম্পাদকই। সীতারাম ইয়েচুরির কথায়,''গত ১০ বছরে বাংলায় সিপিএমের প্রচারে এত নতুন মুখ দেখিনি। পরিবর্তন হবেই। চমক দিতে চলেছি''।  

রাজ্যে শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। চিরাচরিত সভা-সমাবেশের সঙ্গে যোগ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার। যে মাধ্যমে বাকিদের টেক্কা দিয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড। ফেসবুক-টুইটার বিরোধীদের ধুয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ধারেকাছে কেউ নেই। সেখানে পুরনো পন্থাই আঁকড়ে সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে দলকে শক্তিশালী করাটাই  তাঁদের প্রথম টার্গেট, বলছেন সীতারাম। সেইসঙ্গে বাম দলগুলিকে নিয়ে লড়াই জোরদার করা দেশের সংবিধান রক্ষায় ইস্যুর ভিত্তিতে অন্য দলকে সঙ্গে নিয়েও পথে নামতে চান তাঁরা। ভেবেছিলেন মেসির মতো বিপক্ষের  ২ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করবেন। তবে সিপিএম এরাজ্যে এখন শূন্য। সীতারাম বলছেন, এবার হয়নি । পরে ঠিক হবে। 

নতুনদের নিয়ে কামাল করার কথা বলছেন সীতারাম। তবে সিপিএমের সাংগঠিনক কাঠামোয় থেকে খুব শীঘ্রই কী তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে? সিপিএমের অন্দরে আরও একটা প্রশ্নও উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। নতুন মুখ মানে কি সেই ধোপদুরস্ত চোস্ত ইংরেজি বলা তাত্ত্বিক নেতা? নাকি রাজ্যের দুই শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা? সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার মতো নেতা কি তাঁরা তুলে আনতে পারবেন সিপিএম নেতারা? প্রশ্নটা লাখ টাকার। 

আরও পড়ুন- 'আগে রাম, পরে বাম', পর্যালোচনায় ভরাডুবির কারণ স্বীকার করে নিল সিপিএম

.