এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে নয়া 'চ্যাপ্টার', অ্যাপয়নমেন্ট লেটার ছাড়াই চাকরি!
হাইকোর্টে এসএসসি জানিয়েছে যে, ২০২০ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নবম-দশমে চাকরির জন্য সুপারিশ পত্র পাঠানো হয় ১৮৬টি। কিন্তু এসএসসি-র সেই তথ্য ভুল বলে দাবি। ৬৭ জন কোনও অ্যাপয়নমেন্ট লেটার নেয়নি।
অর্ণবাংশু নিয়োগী: এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নয়া 'চ্যাপ্টার'। অ্যাপয়নমেন্ট লেটার ছাড়াই চাকরি! নয়া এই 'চ্যাপ্টারে' বিস্মিত বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সাফ পর্যবেক্ষণ, 'সিবিআই তদন্তে নতুন রসদ জোগাতে পাড়ে এমন বিস্ময়কর তথ্য। সিবিআই হাইকোর্টে তাদের অবস্থান জানাক।
দুর্নীতির নয়া 'চ্যাপ্টার'-এ উল্লেখ, কোনওরকম অ্যাপয়নমেন্ট লেটার ছাড়াই নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষকতায় চাকরি হয়ে গিয়েছে! এরকম ৭-৮ জনের চাকরির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। যে পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর প্রশ্ন, বাকি আরও কতজন এরকম আছে? হাইকোর্টে এসএসসি জানিয়েছে যে, ২০২০ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নবম-দশমে চাকরির জন্য সুপারিশ পত্র পাঠানো হয় ১৮৬টি। কিন্তু এসএসসি-র সেই তথ্য ভুল বলে দাবি। ৬৭ জন কোনও অ্যাপয়নমেন্ট লেটার নেয়নি। তা পর্ষদ অফিসে পড়ে আছে।হাইকোর্টে রিপোর্ট দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে সামনে এসেছে ওএমআর শিট কারচুপির কথা। আদালতে ফরেনসিক রিপোর্ট পেশ করেছিল সিবিআই। আর সেখানেই উঠে এসেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, এসএসসি সার্ভারে প্রাপ্ত নম্বর বদল করা হয় অকৃতকার্য প্রার্থীদের। গ্রুপ সি-তে ৩,৪৮১ জনের নম্বর বদল করা হয়েছে। গ্রুপ ডি-তে ২,৮২৩ জনের নম্বর বদল করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো ১ বা কেউ হয়তো ০ পেয়েছিলেন। আদালতে সিবিআই জানিয়েছিল, এসএসসি সার্ভার রুম থেকে ৩টি হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়েছে। সেই হার্ড ডিস্ক থেকেই দেখা গিয়েছে, প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর হয়তো ছিল ১ বা ০।
হাইকোর্টে মোট ৪টি রিপোর্ট পেশ করেছিল সিবিআই। যথা- গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, এসএলএসটি একাদশ-দ্বাদশ এবং এসএসএসটি নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্ট। প্রতিটি রিপোর্টেই বিস্ফোরক তথ্য! নম্বর অদল-বদলের অভিযোগে একেবারে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে রিপোর্ট দেয় সিবিআই। রিপোর্টে উল্লেখ, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসি সার্ভারে ৯০৭ জন প্রার্থীর নম্বর বদলানো হয়েছে। যারমধ্যে প্যানেলে নাম রয়েছে ৬৩১ জনের। ওদিকে নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে ৯৫২ জনের নম্বর বদলানো হয়েছে।
সমস্ত উত্তরপত্রের স্ক্যান করা কপি উদ্ধার করেছে সিবিআই। যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রার্থী হয়তো আদতে ১ বা ০ পেয়েছেন। ফেল করেছেন! অথচ সার্ভারে ওই প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর দেখা যাচ্ছে ৫০ বা ৭০। এমনকি ফাঁকা ওএমআর শিট পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়েছে! প্রার্থী কিছুই লেখেননি! যেখানে পরে ৫৩ নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বড়সড় তথ্যপ্রমাণ সামনে আনে সিবিআই। এবার সামনে এল দুর্নীতির নয়া 'চ্যাপ্টার'।
অ্যাপয়নমেন্ট লেটার ছাড়াই চাকরি!
আরও পড়ুন, Sujay Krishna Bhadra: আমার মা-কে মেরেছে মামা-ই! কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ভাগ্নি