এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আবেদন রাজ্যের
সোমবার মধ্যরাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাঁধে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অচলাবস্থা কাটাতে আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তারদের কাছে আবেদন করল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য জরুরি পরিষেবা। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি আন্দোলনের জেরে পরিষেবা পাচ্ছেন না রোহীরা। হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এটা কোনওভাবেই কাম্য নয়। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে আবেদন করা হচ্ছে।
নীলরতন সরকার হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে চিকিত্সকদের কর্মবিরতির ডাকে স্তব্ধ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা। সারা দিনে জরুরি পরিষেবা না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন রোগীরা। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ভাঙার অনুরোধ করল স্বাস্থ্য দফতর। বিবৃতি দিয়ে তারা জানাল,'দু'দিন আগে এনআরএসে ঘটেছে অনভিপ্রেত ঘটনা। ওই ঘটনায় সবরকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিস ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের জামিন খারিজ করে পুলিস হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টির ওপর নজর রাখছেন। আহত পরিবহ মুখার্জির চিকিত্সার সমস্ত খরচ বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সব ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরা উচিত জুনিয়র ডাক্তারদের'।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বিবৃতিতে জানান, 'নৈরাজ্যের গ্রাসে রাজ্যের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা। এই অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হচ্ছে, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় বসে সমস্যার নিষ্পত্তি করতে হবে। চিকিৎসকদের ওপর হামলা, আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। তারসঙ্গেই জরুরি বিষয় হল এই মুহূর্তে রাজ্যের সরকারী চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন সাধারন মানুষ। গত সোমবার ১০ই জুন সন্ধ্যায় নীলরতন সরকার হাসপাতালে জনৈক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত। এরপর গভীর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। পুলিসের সামনেই জুনিয়র চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালগুলি থেকে এখনও পরিষেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এমন অচলাবস্থা কাটাতে অবিলম্বে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে নিষ্পত্তি করতে হবে রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রীকেই'।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়,''রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল বন্ধ। বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবাও ব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ রোগী আসেন। অনেকে ক্যানসার আক্রান্ত। কী অবস্থায় আছেন তাঁরা! ডাক্তাররা আজকে পরিষেবা দেননি। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা? তাঁরা বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা বিপন্ন। একাধিক হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিকেল পাঁচটায় রোগী মারা গেল, আর রাতে এনআরএসে অবাধে ঢুকে পড়ল দুষ্কৃতীরা। হাসপাতাল মারপিট করার জায়গা?''
সোমবার মধ্যরাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাঁধে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে। রোগীর পরিবারের তরফে একাধিক অভিযোগ তোলা হয় চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এরপর দুই দলের বচসা এবং ইট বৃষ্টিতে মাথা ফেটে যায় পরিবহ মুখোপাধ্যায় নামে এক ইন্টার্নের।
আরও পড়ুন- মমতার বলা 'ব্যালেন্স'-র রণনীতিতে BJP-কে 'শান্তশিষ্ট' অভিযান করতে দিল পুলিস?