রাতভর চলল পুলিসি জেরা, মায়ের স্বীকারোক্তিতে কাটল বাবা-বিতর্কের জট
মঙ্গলবার 'মা' স্বপ্না মৈত্রের স্বীকারোক্তিতেই সমস্যার সমাধান হয়। দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষমেষ জানা গিয়েছে হর্ষ ক্ষেত্রীই 'আসল' বাবা। গতকাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সদ্যজাতর মা-কে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় নেতাজি নগর থানার পুলিস।
নিজস্ব প্রতিবেদন: চারদিনের মাথায় সদ্যজাতর পিতৃত্বের জট কাটল। মঙ্গলবার 'মা' স্বপ্না মৈত্রের স্বীকারোক্তিতেই সমস্যার সমাধান হয়। দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষমেষ জানা গিয়েছে হর্ষ ক্ষেত্রীই শিশুর 'আসল' বাবা। গতকাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সদ্যজাতর মা-কে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় নেতাজি নগর থানার পুলিস। আর তাতেই উঠে আসে এই তথ্য।
স্বপ্না জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে স্বামী হর্ষ ক্ষেত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তাঁর। সেই কারণেই বন্ধু দীপঙ্করকে সঙ্গে এনে হাসপাতালে ভর্তি হন স্বপ্না। এরপর তাঁকেই স্বামী সাজিয়ে চলছিল একটানা অভিনয়। স্বীকারোক্তিতে স্বপ্না আরও জানিয়েছেন, স্বামীকে সবক শেখাতেই এই পথ বেছেছিল স্ত্রী। তবে জট তৈরি হওয়ার পরও স্বপ্না বা হর্ষ কেউই থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি। আতান্তরে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই পুলিসে খবর দেয়।
আজ, মঙ্গলবার স্বপ্নার বয়ানে স্বস্তি ফেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হর্ষের নামেই সমস্ত নথি তৈরির করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী ২ দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে মা এবং সন্তানকে। উল্লেখ্য, প্রদীপ রায় নামে যে ব্যক্তি প্রায় শেষ বেলায় এসে সদ্যজাতর পিতৃত্ব দাবি করেছিলেন তাঁর কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শনিবার বাঘাযতীনের গাঙ্গুলীবাগানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয় উত্তরপাড়ার স্বপ্না মৈত্র। স্বামী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে তাঁকে ভর্তি করান রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা দীপঙ্কর পাল। রবিবার স্বপ্নার এক কন্যা সন্তান হয়। এরপরই বাঁধে গোলমাল। হোয়াটসঅ্যাপে স্বপ্নার স্ট্যাটাস আপডেট দেখে হাসপাতালে হাজির হন নিউটাউনের বাসিন্দা হর্ষ ক্ষেত্রী। দাবি করেন মেয়ে ও স্ত্রী তাঁর। এদিকে ভর্তির কাগজে স্বামী হিসেবে লেখা দীপঙ্করের নাম।
আরও পড়ুন: এক শিশুর বাবা হিসেবে দাবিদার তিন! ধুন্ধুমার কাণ্ড শহরের বেসরকারি হাসপাতালে
অথৈ জলে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে নেতাজি নগর থানায় খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিউটাউনের বাসিন্দা হর্ষ অবশ্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট সহ কয়েকটি নথি দেখান। দাবিদার দুজন হওয়া রবিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘরে ঢুকতে দেয়নি কাউকেই। নিরাপত্তা কর্মী বসিয়ে দেওয়া হয় স্বপ্নার ঘরের বাইরে। এখানেই শেষ হয় না বিষয়টি, শেষ বেলায় উদয় হন আরও এক ব্যক্তি। দাবি করেন তিনিও সদ্যজাতর বাবা। ব্যস! চোখে কার্যত সর্ষেফুল দেখতে শুরু করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে স্বপ্নার বয়ানে সমস্যার সমাধান হয়।