ট্রেন বন্ধ; ধর্মতলায় উত্তবঙ্গের বাসের জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে বহু মানুষ, অপেক্ষায় ভেলোর ফেরত অসুস্থ বৃদ্ধ

ধর্মতলায় অপেক্ষমান এক যাত্রী  বললেন, আমার তো রিজারভেশন করা ছিল, টিকিটটাই বাতিল করতে হল

Reported By: রণয় তেওয়ারি | Updated By: Dec 17, 2019, 09:45 AM IST
ট্রেন বন্ধ; ধর্মতলায় উত্তবঙ্গের বাসের জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে বহু মানুষ, অপেক্ষায় ভেলোর ফেরত অসুস্থ বৃদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদন: ট্রেন চলাচল প্রায় বন্ধ। আদৌ ট্রেন কখন চলবে জানা নেই কারওরই। এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন মহিলা থেকে বয়স্ক যাত্রীরা। সমস্যার হাত থেকে রেহাই মেলেনি অসুস্থ এক যাত্রীদেরও।  বিশেষ করে উত্তর বঙ্গের দিকে যাওয়া যাত্রীদেরই নাভিশ্বাস হয়ে ওঠার মতো অবস্থা। অগত্যা কোনও উপায় না পেয়ে একপ্রকার সড়কপথ কেই বেছে নিয়েছেন যাত্রীরা।

আরও পড়ুন-নিরাপত্তায় পুলিসের কনভয়, শিলিগুড়ি থেকে সরকারি বাসে কলকাতায় ফেরানো হচ্ছে পর্যটকদের

সোমবার রাতে ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল উত্তরবঙ্গের দিকে যাবেন বলে বহু মানুষ ঠায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কেউ কলকাতায় কাজের সূত্রে ছিলেন, কিন্তু এখন বাড়ি ফিরতে চান। কেউ আবার উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন কাজের উদ্দেশ্যে। কেউ আবার যাচ্ছেন বেড়াতে। প্রত্যেকের প্রায় একই বক্তব্য, ট্রেন তো চলছেই না। আদৌ কখন চলবে রেলের কর্তারাও কিছু বলছেন না।

ধর্মতলায় অপেক্ষমান এক যাত্রী  বললেন, আমার তো রিজারভেশন করা ছিল, টিকিটটাই বাতিল করতে হল। তাই এক প্রকার সড়কপথকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি। টিকিটের দাম যতই নিক না কেন, নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতেই হবে, এমনটাও জানালেন অসহায় যাত্রীরা।

অপরদিকে, সামান্য কিছুটা দূরে যেতেই দেখা গেল, বাসস্ট্যান্ডের এক কোনায়, মাটিতেই বসে রয়েছেন এক বৃদ্ধ। কোনওরকমে ওষুধ খাচ্ছেন তিনি। বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনি নারায়ণ দেব নাথ। ৬৫ বছর বয়স। আসামের গুয়াহাটির বাসিন্দা। গত দু'মাস ধরে শারীরিক অসুস্থতার জেরে ভেলোরে ছিলেন তিনি।

নারায়ণবাবু একা নন, সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোকজনরাও রয়েছেন। কাঁপা কাঁপা গলায় নারায়ণ বাবু জানালেন, চিকিৎসার জন্য দু'মাস ধরে ভেলোরে ছিলাম। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ির পথে রওয়ানা দিয়েছিলাম। কিন্তু বিশাখাপত্তনম আসতেই ট্রেন থেমে গেল। রেলের তরফে জানাল, ঝামেলা চলছে তাই ট্রেন আর চলবে না। এখানেই নেমে যান। নারায়ণবাবুর পরিবারের লোকজনরা বললেন, বাধ্য হয়েই অনেক কাঠ-কয়লা পুড়িয়ে কলকাতায় আসতে হল।  উত্তরবঙ্গ হয়েই গুয়াহাটিতে বাড়ির পথে যাব। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকাতেই সড়কপথ কেই বেছে নিতে হয়েছে বলেও জানালেন তাঁরা। কিন্তু এর জন্য কি বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে? নারায়ণবাবুর পরিবারের লোকজনরা বলছেন, জানি না।

আরও পড়ুন-কাশ্মীরের গুরেজ সেক্টরে বেপরোয়া গোলাগুলি পাক সেনার, শহিদ ১ জওয়ান

যদি বেশি ভাড়া নিয়েও থাকে, কিছু করার নেই। এই ভাবেই যেতে হবে।অসুস্থ লোকটাকে কতক্ষণ আর বাইরে রাখব বলুন তো!বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলির তরফে অবশ্য জানানো হল, কোনও বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।যা টিকিটের দাম তাই নেওয়া হচ্ছে।তাছাড়া এত রাতে তো উত্তরবঙ্গের দিকে যাওয়ার বাসও থাকে না।কোনওরকমে জোগাড় করলাম।ট্রেন চলাচল বন্ধ বলে কি, বাসে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে? পরিবহণ সংস্থাগুলির অবশ্য দাবি, একটু তো বেড়েছে। তবে শীতকালে যাত্রীর সংখ্যা একটু বাড়েই।

.