জয়ের আনন্দে গা ভাসানো নয়, বরং একুশের লক্ষ্যে রণনীতি সাজালেন নেত্রী

জয়ের আনন্দে দল যাতে লক্ষ্যচ্যুত  না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। 

Updated By: Nov 29, 2019, 09:38 PM IST
জয়ের আনন্দে গা ভাসানো নয়, বরং একুশের লক্ষ্যে রণনীতি সাজালেন নেত্রী

কমলিকা সেনগুপ্ত

হতে পারে উপনির্বাচন, তবে ৩-০ ফলের পর চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কর্মীরা। লোকসভা ভোটের পর অনেক আশঙ্কার মেঘ ঘিরে ধরেছিল সংগঠনকে। উপনির্বাচনের ফল দমবন্ধ পরিবেশে যেন একটা হিমেল হাওয়া। তবে হাওয়ায় গা ভাসাতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারও যথেষ্ট সংযত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বিজয় মিছিলে মানা করে বিনয়ী হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। কারণ, তিনিও জানেন কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে একুশের লড়াই কঠিন। আর তাই বাস্তবের জমিতেই পা রাখতে চাইছেন বহু আন্দোলনের নেত্রী।     

তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী, বাম বিরোধিতায় তিনিই মুখ। মমতা স্লোগান দিয়েছিলেন,'চুপচাপ ফুলে ছাপ।' গত লোকসভায় সেটাই নকল করে বিজেপি প্রচার করেছিল,'চুপচাপ কমল ছাপ।' নয়ের দশক থেকে মমতার লড়াই শুরু হলেও সাফল্য মেলে ২০১১ সালে। মমতার লড়াই, জেদ ও সাহসের প্রশংসা করেন তাঁর চরম বিরোধীরা। বাংলার 'অগ্নিকন্যা'ই এখন মুখ্যমন্ত্রীর আসনে। সম্ভবত ক্ষমতায় আসার পর চলতি বছর লোকসভা ভোটে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন পোড়খাওয়া নেত্রী।  ১৮টি আসন নিয়ে তাঁকে ধাক্কা দিতে সক্ষমও হয় বিজেপি। স্লোগান ওঠে, 'ঊনিশে হাফ, একুশে সাফ।' কিন্তু উপনির্বাচনে বিজেপিকে সাফ করলেন তৃণমূল নেত্রী। ফল, ৩-০।  ছক কষে, অঙ্ক কষে বাজিমাত। কিন্তু জয়ের আনন্দে দল যাতে লক্ষ্যচ্যুত  না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। 

ভোট শেষ হলেও জনসংযোগে কোনও ভাটা দিচ্ছে না তৃণমূল। এবার লক্ষ্য, রাজ্যজুড়ে পুরসভাগুলির ভোট।  রাজ্যের মন্ত্রী  রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,''মানুষের কাছে যেতে হবে। সমস্যা বুঝতে হবে। কোথাও বিরোধীদের আক্রমণ করা হবে না। শুধু মানুষের কাছে যাওয়ার মন্ত্র নিয়ে আমাদের এগিয়ে  যেতে হবে।''

এরপর?

জয় এসেছে তবে তাতে গা ভাসানো যাবে না। আম জনতা বিরক্ত হয়, এমন উচ্ছ্বাস কখনওই নয় ।

চুপচাপ কাজ করে যেতে হবে। উপনির্বাচনে ২০ টি  ঘরপিছু একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিল। এই কাজ গোটা রাজ্য জুড়ে করে যেতে হবে। 

গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতার ঔদ্ধত্য আচরণের প্রভাব পড়ছে আম জনতার মনে। বিরোধীদের সমালোচনা করলেও তা যেন কদর্য বা আগ্রাসী না হয়। 

বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছিল নতুন ও পুরনোদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। দলের মতে, সেই সমস্যা অনেকটাই কাটানো গেছে। তবে, এবার তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতাকে আরও জোরদারভাবে মেলাতে হবে। 

 সুফল মিলেছে দলের মেগা ক্যাম্পেন, 'দিদিকে বলো'-র। রাজ্যের কোণায় কোণায় নেতা-কর্মীদের ময়দানে নামানোয় ডিভিডেন্ড পেয়েছে শাসক দল।  ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে দিদি-কে বলে কর্মসূচি। এবার নতুন কিছু ক্যাম্পেনের প্রস্তুতি চলছে।  

এনআরসি নিয়ে জোরকদমে প্রচার অব্যাহত থাকবে। মানুষকে এনআরসি-র বিপদ সম্পর্কে সচেতন করবেন তৃণমূল নেতানেত্রীরা। 
    
উপনির্বাচনে এনআরসি প্রচারের প্রতিদান মিলেছে। সামনেই পুরভোট। ধাপে ধাপে এগোতে চাইছে তৃণমূল। কৌশলের অন্যতম হাতিয়ার যে এনআরসি, তা স্পষ্ট।

আরও পড়ুন- খাস কলকাতার একবালপুরে বোমা তৈরির কারখানা, গ্রেফতার ১ দুষ্কৃতী

.