বাজার যাবেন না, বাড়িতে থাকা জিনিস দিয়েই বানান এই সুস্বাদু পদগুলি
ভোজনরসিকদের জন্যই আজ রইল কয়েকটি সাধারণ অথচ সুস্বাদু পদের লিস্ট, যা বাড়িতে সাধারণত থাকা উপকরণ দিয়েই বানাতে পারবেন চটজলদি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হলেও অনেকেই রোজ ভিড় জমাচ্ছেন বাজারে। রাজ্যের অনেক বাজারেই ভিড়ের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটিজেনদের অনেকেরই বক্তব্য, খাদ্যরসিক বাঙালির সিংহভাগই নানা পদের লোভে বাজারমুখী হচ্ছেন। আর এর ঝুঁকি যে কম নয় তা বলাই বাহুল্য। তাই ভোজনরসিকদের জন্যই আজ রইল কয়েকটি সাধারণ অথচ সুস্বাদু পদের লিস্ট, যা বাড়িতে সাধারণত থাকা উপকরণ দিয়েই বানাতে পারবেন চটজলদি।
১. জিরা রাইস : ভাত রান্নার সময়ে একটু ঝরঝরে রাখুন। এর পর কড়াইতে অল্প তেল গরম করে মুচমুচে করে পেঁয়াজ ভেজে আলাদা তুলে রাখুন। সেই তেলেই এবার একটু গোটা জিরে ও তেজপাতা দিন। অল্প জিরে গুঁড়ো দিন। একটু নাড়াচাড়া করে ভাতটা ঢেলে দিন। পরিমাণ মতো নুন-মিষ্টি দিন। এবার বেরেস্তা(মুচমুচে পেঁয়াজ ভাজা) ছড়িয়ে কিছুক্ষণ চাপা দিয়ে রাখুন।
২. সহজ আলুর দম: একটু ছোট সাইজের আলু সেদ্ধ করে নিন। এর পর কড়াতে তেল গরম করে গরম মশলা, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। আদা-রসুন বাটা দিন। এর পর মিহি করে কুঁচোনো পেঁয়াজ দিয়ে ভাজুন। বাড়িতে মিট মশলা থাকলে সেটাও একটু দিতে পারেন। নয় তো জিরে-ধনে গুড়ো দিন। একটু ভাজা ভাজা হলে বেশ কিছুটা টম্যাটো সস দিন। আলুগুলো দিয়ে কষান। স্বাদমতো নুন-মিষ্টি দিন। এরপর অল্প জল ঢেলে কয়েক মিনিট ফুটতে দিন। ব্যাস, চটজলদি আলুর দম রেডি। রুটি, ভাত বা জিরা রাইসের সঙ্গে খেতে পারেন।
৩. পান্তা ভাত - না, ভ্রু কুঁচকানোর কিছু নেই। পান্তা ভাত রান্না শেখানোরও কিছু নেই। তবে লকডাউনের সময়ে রোজ রোজ ডাল-ভাতের একঘেয়েমি কাটাতে সপ্তাহের কয়েকদিন পান্তা ভাতও খেতে পারেন। সঙ্গে নিন লেবু, লঙ্কা, পেঁয়াজ। শুকনো লঙ্কা দিয়ে আলুভাতে মেখে নিতে পারেন। আলু-পেঁয়াজ ভাজাও পান্তার সঙ্গে বেশ ভাল লাগে। খেতেও মজা, শরীরও ভাল থাকবে।
৪. ভাত ভাজা: আগেকার দিনে মা-ঠাকুরমাদের হাতের এই পদটার বেশ চল ছিল। ফ্রিজে বাসি ভাত থাকলে অনেক সময়ে সেই ভাত পরের দিন আর খেতে ইচ্ছা করে না। সেই সময়ে কড়াতে একটু ঘি বা মাখন গরম করে একটু গরম মশলা ফোড়ন দিন। এর পর পেঁয়াজ কুচি, লঙ্কা কুচি ভাজুন। এবার বাড়িতে কাজু বাদাম বা চিনে বাদাম থাকলে সেটা তেলে দিয়ে দিন। কিসমিস থাকলেও দিতে পারেন। নেড়েচেড়ে ভাতটা দিয়ে দিন। কড়ায় হিট বেশি রেখে বেশ করে সবকিছু মিশিয়ে নিন। স্বাদ মতো নুন মিষ্টি দিন। ব্যস, ভাত-ভাজা রেডি। এটাকে চাইনিজ ফ্রায়েড-রাইসের বাঙালি সংস্করণ বলা যেতে পারে। আলুর দম বা ডিম কষা দিয়ে জমে যাবে।
৫. ময়দা-দুধ মিশিয়ে অমলেট বানিয়ে তরকারি: আগেরকার একান্নবর্তী পরিবারে অনেকসময়েই সাশ্রয়ের কথা ভেবে মাথা-পিছু অর্ধেক করে ডিম বরাদ্দ হত। তবে, সেই ডিম দেখে যাতে অর্ধেক মনে না হয়, তার জন্য এক ফন্দি আঁটেন মা-ঠাকুমারা। ডিমগুলো ভেঙে তার সঙ্গে ময়দা ও দুধ মিশিয়ে নেওয়া হত। সঙ্গে অল্প রসুন-বাটা ও লঙ্কা কুঁচি। এরপর সেটাকেই ফেটিয়ে নিয়ে ভাজা হত। ফলে সমপরিমাণ ডিমেই অনেক বেশি এবং বড় বড় অমলেট হত। সেই অমলেটই পরে ডিমের ঝোলে দেওয়া হত। ডিম পিছু ৪-৫ চামচ ময়দা ও ২-৩ চামচ দুধ মেশানো যেতে পারে। তবে দুধ বেশি মেশাবেন না, অমলেট ভাজার সময়ে বেশি লালচে রঙ হয়ে যেতে পারে।
লকডাউনের এই সময়ে যদি ডিম আনা থাকে, তবে তা বেশিদিন চালানোর জন্য এই পন্থা অবলম্বন করতেই পারেন। আর স্বাদও বেশ ভাল হয়। অনেকটা চিলি চিকেনের কোটিংয়ের ফ্লেভার পাওয়া যায় এই ধরনের অমলেটে।