Thyroid Disorders: থাইরয়েডের সমস্যায় জেরবার? জেনে নিন সুস্থতার পাসওয়ার্ড
পৃথিবীতে অন্তত ১২ শতাংশ মানুষ থাইরয়ডজনিত সমস্যায় ভোগেন। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা বহু মানুষের শরীরে দেখা দেয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: থাইরয়েড হল আমাদের স্বরযন্ত্রের দু’পাশে থাকা একটি বিশেষ গ্রন্থি। থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ হল আমাদের শরীরের কিছু অত্যাবশ্যকীয় হরমোন অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করা। শরীরের জন্য এই থাইরয়েড হরমোনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলেই শরীরে তার নানা রকম বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। থাইরয়েড হরমোন কম উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিসম এবং বেশি উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিসম। কিন্তু কী ভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে থাইরয়েড বাসা বেঁধেছে কিনা? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক থাইরয়েডের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলি।
আরও পড়ুন: Shravan 2023: কবে শ্রাবণ? ১৯ বছর পর বিরল যোগ, এবার শ্রাবণ দু'মাসের...
হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
হাইপারথাইরয়েডিজমের প্রধান লক্ষণগুলি হল অস্বাভাবিক ওজন কমে যায়, ক্ষুধা বৃদ্ধি, চুল পড়া, উদ্বেগ, নার্ভাসনেস, ঘুম কমে যাওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ঘাম বেশি হয়, তাপ সংবেদনশীলতা এবং হাত কাঁপতে থাকে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
হাইপোথাইরয়েডিজমের প্রধান লক্ষণগুলি হল ওজন বেড়ে যায়, ক্লান্তি, বিষণ্নতা, ঠান্ডা তাপমাত্রা সহ্য করতে সমস্যা, জয়েন্টে ব্যথা, হৃদস্পন্দন ধীরগতিতে চলা, ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অনিয়মিত মাসিক চক্র হয়।
১. এটি সকলেরই জানা যে ধূমপান একজনের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং থাইরয়েড রোগের ক্ষেত্রে ধূমপান অত্যন্ত বিপজ্জনক। ধূমপান বিষাক্ত উপাদান নির্গত করে যা গ্রন্থিতে হরমোন উৎপাদনের ক্ষতি করতে পারে এবং এটিকে অতিরিক্ত সংবেদনশীল করে তোলে।
২. প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ থাকে এবং থাইরয়েড গ্রন্থি এই রাসায়নিকগুলির প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে এবং এটি গ্রন্থিতে হরমোন উৎপাদনের ক্ষতি করতে পারে এবং শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। হরমোনের উৎপাদনের পরিবর্তনও প্রধান থাইরয়েড রোগের একটি কারণ।
৩. মানসিক চাপ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম প্রধান হুমকি এবং যে কোনো ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া উচিত। স্ট্রেস গ্রহণ করলে কর্টিসল হরমোন উৎপন্ন হয় যা থাইরয়েড গ্রন্থিতে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে।
চিকিৎসক প্রথমে রোগীর কাছ থেকে জানতে চান তাঁর লক্ষণ। সেই উপসর্গের উপর নির্ভর করে একটা অনুমান করে ফেলেন তিনি। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসক হাত দিয়েও থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পরীক্ষা করেন। থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হলে বোঝা যায়। এরপর রক্তপরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। এই পরীক্ষার নাম থাইরয়েড স্টিমুলেটিং টেস্ট বা টিএসএইচ টেস্ট। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই থাইরয়েডের লেভেল বোঝা যায়।
এই রোগের মূল চিকিৎসা হল, শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি মিটিয়ে দেওয়া। কিছু ওষুধের মাধ্যমেই এই কাজটি করা সম্ভব। সাধারণত লেভোথাইরক্সিন জাতীয় ওষুধ রোগীকে দেওয়া হয়। এই ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমেই দেহে থাইরয়েডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মনে রাখবেন, এই অসুখ অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। শুধু সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে আসলেই হল।
একটি সুষম খাদ্য আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার সর্বোত্তম উপায়। নুন সহ কিছু খাবারে থাকে আয়োডিন। এই আয়োডিন থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে নুন ছাড়াও এইসব হাই আয়োডিনযুক্ত খাবারগুলি পাতে রাখুন ডিম, দুগ্ধজাত খাবার, মাংস, সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদি। ওষুধের পাশাপাশি এই খাবারগুলি খেলে সুস্থ থাকা সম্ভব। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং সয়া প্রধান জিনিস এড়িয়ে চলা উচিত।
আরও পড়ুন: Foreign Cities: বিদেশে বাড়ি কিনতে টাকা দেবে সে দেশের সরকার! পৃৃথিবীর এই ৫ জায়গায়...
আরও কিছু জানতে হলে অবশ্য়ই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।