টাকা ছাড়াও প্রয়োজন সামাজিক বৈষম্য দূর করা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের এখানেই পার্থক্য: রঘুরাম রাজন
রাজন বলেন, "প্রচুর সংখ্যক মানুষকে দীর্ঘদিন বসিয়ে খাওয়ানোর মতো ক্ষমতা ভারতের নেই। তাই নিয়ন্ত্রিতভাবে ধীরে ধীরে লকডাউন ক্ষেত্রবিশেষে শিথিল করা ছাড়া উপায় নেই।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : লকডাউনে দেশের দরিদ্রদের সাহায্য করতে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ টাকা। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রয়োজন সামাজিক বৈষম্য দূর করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের এখানেই পার্থক্য। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ভিডিও আলোচনায় এমনটাই জানালেন রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন।
কংগ্রেসের প্রকাশিত এই ভিডিও আলোচনায় রাহুলের সঙ্গে লকডাউন ও দেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করেন প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর। তিনি জানান লকডাউন বহুদিন ধরে চললে তা কখনই দেশের অর্থনীতির পক্ষে ভাল নয়।
দরিদ্রদের এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে? রাহুলের প্রশ্নের উত্তরে রাজন বলেন, "আমাদের প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। ভেবে দেখলে টাকার পরিমাণটা খুব বেশি নয়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে দরিদ্রদের জীবনরক্ষা সম্ভব।"
করোনাভাইরাস রুখতে প্রয়োজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রয়োজন দীর্ঘদিনের লকডাউন। অন্যদিকে এই লকডাউন এর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। এই চক্রব্যূহ থেকে বেরনোর উপায় নিয়ে আলোচনা করলেন রাজন। তিনি বলেন, "লকডাউন লঘু করার বিষয়ে আমাদের বুদ্ধির প্রয়োগ করতে হবে।"
রাজন বলেন, "প্রচুর সংখ্যক মানুষকে দীর্ঘদিন বসিয়ে খাওয়ানোর মতো ক্ষমতা ভারতের নেই। তাই নিয়ন্ত্রিতভাবে ধীরে ধীরে লকডাউন ক্ষেত্রবিশেষে শিথিল করা ছাড়া উপায় নেই।" তবে তিনি এও জানান, পুরো বিষয়টি কড়া ভাবে নজরদারিতে রাখতে হবে। নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটলেই সেই ব্যক্তিকে আইসোলেশন পাঠাতে হবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো-তে অধ্যাপনা করেন। আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বাস করেন তিনি। "করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতের মধ্যে কোন কোন জায়গায় পার্থক্য নজরে আসছে?"প্রশ্ন করেন রাহুল। তাঁর প্রশ্নের উত্তরের রাজন জানান, ভারতের অভ্যন্তরীণ বৈষম্যই দুই দেশের মধ্যে সবথেকে বড় পার্থক্য।
"বৈষম্যের মাত্রা দেখে আমার খুব বিরক্তি আসে। ভারতে অনেক সামাজিক বদল প্রয়োজন। বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে।" তিনি জানান, কোন একটা পদ্ধতিতে পুরো দেশের এই বৈষম্য দূরীকরণ সম্ভব নয়। "হয়তো করোনাভাইরাস মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, কিন্তু এই সামাজিক বৈষম্য ব্রিটিশরা আসার আগে থেকেই আমাদের দেশের সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে রয়ে গিয়েছে", আক্ষেপ রাজনের।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বেরিয়েছিলেন মুদি দোকানে যাবেন বলে! ফিরলেন বউ নিয়ে