ছত্তীসগঢ় নির্বাচন: দিনভর সংঘর্ষ মাও-কোবরার, জখম ২ জওয়ান, প্রথম দফায় ভোট পড়ল ৭০ শতাংশ
বীজাপুরে ভোটগ্রহণ চলাকালীন নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় গুলি লড়াই চলে মাওবাদীদের। সংঘর্ষে আহত হয় কোবরা বাহিনীর ২ জওয়ান। ওই ২ জওয়ানকে হেলকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সন্ত্রাসের বাতাবরণে শেষ হল ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভার প্রথম দফার নির্বাচন। আজ মাও-অধ্যুষিত ১৮টি আসনের ভোট গ্রহণ হয়। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিভিন্ন জায়গায় ল্যান্ড মাইন পুঁতে গ্রামবাসীদের ভোটদানে প্রবল চেষ্টা করেছে মাওবাদীরা। তবে, সন্ত্রাস উপেক্ষা করে ৭০ শতাংশ ভোট পড়াকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
সোমবার সকালে বিলাসপুরে এক নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “আমি আগেই বলেছি বস্তার এলাকায় সিংহভাগ মানুষ ভোট দেবে।” তবে, গত বার বিধানসভা নির্বাচনে মাও অধ্যুষিত এই ১৮টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৭৫.৫৩ শতাংশ। মোট ভোট শতাংশে কিছুটা ঘাটতি দেখা গেল এ বারের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ পর্বে। সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হতেই দান্তেওয়াড়ার থানার কাছে বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। সুকমা, কন্টায় বুথের কাছে উদ্ধার হয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজড (আইইডি)। বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে নামে সেন্ট্রাল রিজার্ভ ফোর্সের (সিআরএফ) বম্ব স্কোয়াডের আধিকারিকরা। কাটেকল্যাণ ব্লকের টুমাকপাল ক্যাম্পের কাছে বিস্ফেরণ ঘটানো হয়। এলাকার বিভিন্ন জায়গা রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। এর পরই এলাকায় তল্লাসিতে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিস জানিয়েছে, বেশ কিছু জায়গা গ্রামবাসীদের ভোট দানে বিরত থাকতে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায় মাওবাদীরা।
আরও পড়ুন- ছত্তীসগঢ়ের বীজাপুরে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াই, আহত ২ কোবরা কম্যান্ডো
বীজাপুরে ভোটগ্রহণ চলাকালীন নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় গুলি লড়াই চলে মাওবাদীদের। সংঘর্ষে আহত হয় কোবরা বাহিনীর ২ জওয়ান। ওই ২ জওয়ানকে হেলকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দান্তেওয়াড়ায় বহু মানুষ ঘর থেকে না বেরোলেও ভোটের লাইনে ভোটারদের উতসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে। ভোটদানের লাইনে দেখা গিয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধাদেরও। সুকমার কিস্টারাম, পালেম, বেজিতে ভোটদান চলছে নির্বঘ্নে।
এ দিন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংয়ের কেন্দ্র রাজনন্দগাঁওতে নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ হয়। ৬৬ বছর বয়সী এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন সদ্য বিজেপি ছেড়ে আসা কংগ্রেস প্রার্থী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভাইজি করুণা শুক্লা। তিন দশক বিজেপিতে থাকলেও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালে দল ছাড়েন তিনি। মনে করা হচ্ছে বিজেপি ভোটব্যাঙ্ক ভাঙতে করুণা শুক্ল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। অন্য দিকে মাও-অধ্যুষিত অঞ্চলে ভাল প্রভাব রয়েছে ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগীর দল জনতা কংগ্রেসের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন সেখানকার জনজাতির ভোটব্যাঙ্কে অনেকটাই থাবা বসাতে পারেন কংগ্রেস থেকে আসা এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-ও। অজিত যোগী প্রত্যয়ী সুরে বলেন, “বস্তারে অধিকাংশ কেন্দ্রে জিতব আমরা। বিজেপি এবং কংগ্রেসের উপর বিশ্বাস হারিয়েছে মানুষের।” উল্লেখ্য, কংগ্রেস থেকে আসা দ্বিতীয় দফায় বাকি ৭২টি কেন্দ্রে ভোট হবে।