দেশজুড়েই মহিলাদের উপর বাড়ছে অপরাধের হার

দেশজুড়ে মহিলাদের উপর ক্রমেই বাড়ছে অপরাধ। কখনও ধর্ষণ,কখনও শ্লীলতাহানী, কখনও আবার ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠেছে আইন-শৃঙ্খলার প্রসঙ্গেও। জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য বলছে, শুধুমাত্র রাজ্যেই নয়। দেশজুড়ে বাড়েছে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য। সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১০-১১`র তুলনায় চলতি বছরে মহিলাদের প্রতি এই ধরণের অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।

Updated By: Aug 25, 2012, 12:18 PM IST

দেশজুড়ে মহিলাদের উপর ক্রমেই বাড়ছে অপরাধ। কখনও ধর্ষণ,কখনও শ্লীলতাহানী, কখনও আবার ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠেছে আইন-শৃঙ্খলার প্রসঙ্গেও।  বারাসত থেকে বাগনান। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আক্রমণের শিকার হচ্ছেন প্রতিবাদকারীই।  জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য বলছে, শুধুমাত্র রাজ্যেই নয়।  দেশজুড়ে বাড়েছে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য। সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১০-১১`র তুলনায়  চলতি বছরে মহিলাদের প্রতি এই ধরণের অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বেড়েছে, ইভটিজিং-এর জেরে দায়ের হওয়া অভিযোগের সংখ্যাও। গত ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বলছে,
২০১১-১২ সালে ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি ইত্যাদি সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে মোট ৩৬৯টি।
২০১০-১১ সালে এই ধরণের অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৩৩৬টি।
২০০৯-১০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩৬৪টি।  
জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশে মোট ৫২ হাজার ৭০৪ মহিলা ইভটিজারদের দৌরাত্মের শিকার হয়েছেন।
ইভটিজিংয়ের ক্ষেত্রে এই মূহুর্তে তালিকার শীর্ষে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র। জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২০১১-এ অন্ধ্রপ্রদেশে মোট ৩ হাজার ৬৫৮টি ইভটিজিংয়ের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। দেশের নিরিখে যা ৪২.৭ শতাংশ। মহারাষ্ট্রে ক্ষেত্রে সংখ্যাটা এক হাজার ৭১। দেশের নিরিখে তা ১২.৫ শতাংশ। মধ্যপ্রদেশ এবং কেরলে নথিভুক্ত ইভটিজিংয়ের ঘটনা যথক্রমে ৭৬২টি এবং ৫৭৩টি।
তবে জাতীয় মহিলা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী,  দেশের সবকটি মেট্রোসিটিই এখন মহিলাদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বিজয়ওয়াড়ায় গত বছর মোট ৩৫৫টি ইভটিজিংয়ের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। মুম্বইয়ে ১৬২। দিল্লি শহরের হিসাবে সংখ্যাটি হল ১৪৯টি। কলকাতায় ২০১১`তে ইভটিজিংয়ের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে মোট ১৪৪টি। চেন্নাই হয়েছে ১২১টি।
নড়চড়ে বসেছে প্রশাসনও। ইভটিজারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার জন্য ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধিতে বেশ কয়েকটি সংশোধন আনার সুপারিশ করা হয়েছে জাতীয় আইন কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে।  কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওরের ক্ষেত্রে ২০০৫ এবং ২০০৮`এ আনা সংশোধনীগুলিকে কার্যকরী করে মহিলাদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে সরকার। বিভিন্ন শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করতে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে।  
পাশাপাশি, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ইভটিজিং কথাটির উল্লেখ না থাকলেও, আইনি সাহায্য পেতে পারেন মহিলারা। এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯২, ২৯৪ বা ২৯৮`এর এ এবং বি, ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দোষী প্রমাণিত হলে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি তিনমাস থেকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে অভিযুক্তের।
তবে সমীক্ষা থেকে একটি বিষয় কিন্তু স্পষ্ট। শুধুমাত্র আইনি দাওয়াইয়ে রোখা যাবেনা ইভটিজারদের দৌরাত্ম।  বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সমস্যা মোকাবিলায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীরও।

.