পিনারাই বিজয়নকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা মমতার
রাজনীতিতে যে চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু বলে কিছুই হয় না, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আপ্ত বাক্য আবারও একবার প্রতিষ্ঠা পেল। কিন্তু, এই ঐক্যের ফ্রেম কি অটুট থেকে গেরুয়া বাহিনীকে রুখতে পারবে, না কি অচিরেই ফাটল ধরবে আঞ্চলিক শক্তিগুলির এই জোটে, এর উত্তর দেবে সময়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কুমারস্বামীর শপথ গ্রহণের মঞ্চেই আলাপচারিতা হয়েছিল, এবার জন্মদিনে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার টুইট করে কেরলের কমিউনিস্ট মুখ্যমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকে নেহাত সৌজন্য হিসাবে দেখতে নারাজ পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, বর্তমান পটভূমিকায় এই সৌজন্যের বিশেষ রাজনৈতিক তাত্পর্য রয়েছে।
Birthday greetings to @CMOKerala @vijayanpinarayi Pinarayi Vijayan
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 24, 2018
বুধবার বেঙ্গালুরুতে এইচডি কুমারস্বামীর শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান ঘিরে এক বেনজির বিজেপি বিরোধী ঐক্যের ছবি দেখেছে গোটা দেশ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এদিন হাতে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে অখিলেশ-মায়াবতী-মমতা-বিজয়ন-চন্দ্রবাবু সহ সোনিয়া-রাহুলদের। সব বিবাদ ভুলে সহবস্থানে এসেছেন যুযুধান প্রতিপক্ষরাও। আর সেই বিজেপি বিরোধী মঞ্চে ‘হ্যান্ড শেক’ করতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরিকেও। এদিন ‘বাংলার অগ্নিকন্যা’ কথা বলেছেন পিনারাই বিজয়নের সঙ্গেও।
অখিলেশ-মায়াবতী বা মমতা-ইয়েচুরি-বিজয়নের এমন সৌজন্যের ছবি দেখে বিজেপি ভ্রুকুটি করলেও, এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহুক্ষেত্রে রাজনৈতিক সৌজন্য প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কুমারস্বামীর শপথ মঞ্চে একজোট দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তি
বাম শাসনের পরিবর্তন ঘটানোর পর প্রথম শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বুদ্ধবাবু-সহ বাম নেতৃত্বের প্রতি নমস্কার জানানোই হোক বা হালফিলে অসুস্থ বুদ্ধদেবকে বাড়ি গিয়ে দেখা আসাই হোক, সৌজন্যের নজির স্থাপন করেছেন মমতা। কিন্তু, মার্চ মাসে ত্রিপুরায় বামেদের হারের পর উষ্মা প্রকাশ বা ইয়েচুরি-বিজয়নদের সঙ্গে সাম্প্রতিক এই সৌজন্যকে রাজনৈতিকভাবে অর্থবহ বলে মনে করছেন একাংশের পর্যবেক্ষকরা। অনেকের মতেই বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারকে হঠাতে গেলে বামেরাও যে মমতার কাছে অচ্ছুঁত নয়, তাও স্পষ্ট হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে কাছাকাছি এসেছেন অখিলেশ-মায়াবতীও। অনেকে আবার বলছেন, রাজনীতিতে যে চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু বলে কিছুই হয় না, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আপ্ত বাক্য আবারও একবার প্রতিষ্ঠা পেল। কিন্তু, এই ঐক্যের ফ্রেম কি অটুট থেকে গেরুয়া বাহিনীকে রুখতে পারবে, না কি অচিরেই ফাটল ধরবে আঞ্চলিক শক্তিগুলির এই জোটে, এর উত্তর দেবে সময়।