পুণে নাশকতায় নতুন অস্ত্র `কেক বোমা`

পুণে বিস্ফোরণে নতুন ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। ব্যাটারির মাধ্যমে এই নতুন ধরনের কেক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে। জে এম রোডের মার্কিন বহুজাতিক ফার্স্ট ফুড চেন রেস্তোরাঁর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তেমনটাই ধারণা গোয়েন্দাদের।

Updated By: Aug 2, 2012, 02:56 PM IST

 নতুন ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। ব্যাটারির মাধ্যমে এই নতুন ধরনের কেক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে। জে এম রোডের মার্কিন বহুজাতিক ফার্স্ট ফুড চেন রেস্তোরাঁর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তেমনটাই ধারণা গোয়েন্দাদের। পরিকল্পিতভাবেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব আর কে সিং। বিস্ফোরণের পিছনে নাশকতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার ভোরে এনআইএ, সিএফএসএল এবং এনএসজি`র বোমা বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে দু`টি ইমপ্রোভাইস এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর পুলিসের অনুমান, বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। ইতিমধ্যেই পুণের ডেকান জিমখানা থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বিস্ফোরক আইন সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় খুনের চেষ্টা, চক্রান্ত, সম্পত্তি নষ্ট, বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে আজই আবু জিন্দালকে গোয়েন্দাদের জেরা করার কথা। গতকালের বিস্ফোরণ নিয়ে জেরায়  তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।    
এখনও পর্যন্ত পুণে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী। পুণের পুলিস কমিশনার গুলাবরাও পলের মতে, আতঙ্ক ছড়াতেই এভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জঙ্গি হামলার তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং মহারাষ্ট্র সরকার অবশ্য বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। এদিন নর্থ ব্লকের তরফে পুণের ধারাবাহিক বিস্ফোরণকাণ্ডকে `পরিকল্পিত নাশকতা` হিসেবে চিহ্নিতও করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২৭ নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে জংলি মহারাজ রোডে বাল গন্ধর্ব থিয়েটারের বাইরে। বুধবার সন্ধ্যাতেই নয়া কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্ডের ওই থিয়েটারে যাওয়ার কথা ছিল। এর কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে একই রাস্তায় মার্কিন বহুজাতিক ফার্স্ট ফুড চেন ম্যাকডোনাল্ডস-এর রেস্তোরাঁর সামনে। সেখানে বিস্ফোরক রাখা ছিল আবর্জনার স্তূপে। তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে দেনা ব্যাঙ্কের সামনে রাখা একটি সাইকেলে। রাত ৮টা ২৩ মিনিট নাগাদ চতুর্থ তথা শোষ বিস্ফোরণটি ঘটে গড়বারে চকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে। তবে সবগুলি বিস্ফোরণেরই তীব্রতা যথেষ্ট কম ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি পুণের জার্মান বেকারির বাইরে প্রচণ্ড শক্তিশালী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১৭ জনের। ৪০ মিনিটের ব্যবধানে এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে পর পর ৪টি বিস্ফোরণ। এই বিষয়টিই মাথাব্যথা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে মহারাষ্ট্র সরকারের। আর তাই বিস্ফোরণে একজন আহত হলেও ঘটনাটিকে মোটেই হাল্কাভাবে নিচ্ছে না তারা। আর সে কারণেই পুলিস এবং এটিএসের সঙ্গে বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নেমেছে এনআইএ-এ বিশেষজ্ঞ দল। এনএসজি টিম এমনকী ন্যাশনাল ফরেন্সিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা।
স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে সেনাবাহিনীর তরফে পাঠানো হয়েছে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে আহত ব্যক্তিই বিস্ফোরক নিয়ে যাচ্ছিল। ইতিমধ্যেই ফাস্ট ফুড সেন্টারটির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পুণের পুলিস কমিশনার গুলাবরাও পল জানিয়েছেন দ্রুত ধারাবাহিক বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। পুণে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর আজ সকাল থেকেই থমথমে জে এম রোড। জনবহুল এই রাস্তা সকাল থেকেই ফাঁকা। এলাকায় এখনও চাপা আতঙ্ক রয়েছে।

.