কংগ্রেস এবার ভেবে দেখুক : মমতা
২১ জুলাইয়ের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন বার্তা নিঃসন্দেহে তাত্পর্যপূর্ণ। আবার ইতিমধ্যে, আগামী বছর ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে সভা করবে বলে জানিয়েছেন মমতা। ওই সভাতে যে স্বয়ং সনিয়া গান্ধীকেও আমন্ত্রণ করা হবে, সেকথাও স্পষ্ট করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে 'বিজেপি হঠাও' রব তুলছেন মমতা। ফেডারাল ফ্রন্টের হাত ধরেই যে পদ্ম শিবিরকে পর্যুদস্ত করা হবে সেকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু, এদিনের সভা থেকে কংগ্রেসকেও কড়া বার্তা দিতে ছাড়েননি তিনি। শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির 'দু'রকম আদর্শ' না-পসন্দ মমতার। মমতা বলেন, জাতীয় ও রাজ্য স্তরে দু'রকম আদর্শ নিয়ে চলছে কংগ্রেস। আদর্শ কখনও দু'রকমের হতে পারে না। কেন্দ্রে বিজেপি-কে ঠাকাতে তারা বিভিন্ন ইস্যুতে মমতার সমর্থন চায়। আর রাজ্যে বামেদের সঙ্গে আঁতাত করে। কংগ্রেসের এমন 'দ্বৈত আদর্শে' বিরক্ত মমতার তাই সাফ কথা, "আপনারা ভেবে দেখুন"।
একই মালা গলায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও রাহুল গান্ধী। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে এমন ছবিই দেখেছিল রাজ্যবাসী। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধে না লড়লেও প্রায় সব ইস্যুতেই যৌথভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তারা। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের ক্ষমতাসীন অংশও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত। অথচ, বিজেপি-কে কোণঠাসা করার প্রশ্নে বারবার মমতার সহায়তা চেয়ে থাকেন সনিয়া-রাহুল। আর প্রায় সবক্ষেত্রেই হাত বাড়িয়ে দেয় তৃণমূলও। একথা ঠিক যে, তৃণমূলের বিজেপি বিরোধিতার যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় স্তরে এই বিরোধিতার প্রয়োজন কংগ্রেসের অনেক বেশি। তাছাড়া, কংগ্রেসের এমন 'দ্বৈত নীতি' যে মোটেই মমতার পছন্দ নয় তা এদিন জনসমক্ষেই জানিয়ে দিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজ্যে সংগঠনের হালহকিকত সম্পর্কে জানতে, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের দিল্লিতে ডেকে ছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে সভাপতির সামনেও কার্যত দু'ভাগ হয়ে যায় প্রদেশ কংগ্রেস। অধীর চৌধুরি, সোমেন মিত্রদের মতো নেতারা সাফ জানিয়ে দেয়, তৃণমূলের হাত ধরলে রাজ্যে কংগ্রেসকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। বরং, বামেদের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে সায় দেয় তাঁরা। আবার মইনুল হকের মতো কংগ্রেস নেতারা তৃণমূলের হাত ধরার পক্ষে মুখ খোলেন রাহুলের সামনে।
এমতাবস্থায়, ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন বার্তা নিঃসন্দেহে তাত্পর্যপূর্ণ। আবার ইতিমধ্যে, আগামী বছর ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে সভা করবে বলে জানিয়েছেন মমতা। সেই সভায় দেশের সব বিরোধী দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জিনিয়েছেন মমতা। ওই সভাতে যে স্বয়ং সনিয়া গান্ধীকেও আমন্ত্রণ করা হবে, সেকথাও স্পষ্ট করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। ফলে, কংগ্রেসকে একদিকে 'ভেবে দেখা'র কথা বলা এবং সনিয়াকে আমন্ত্রণ করা হবে বলা জানিয়ে রীতিমতো কৌশলী রাজনৈতিক চাল দিলেন মমতা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন- ১৯-এর পাল্টা ২৩-এ বিজেপির ব্রিগেড, প্রধান বক্তা মোদী