কাল কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচনে অগ্নি পরীক্ষার সামনে বিজেপি

আগামিকাল কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট নেওয়া হবে দুশো তেইশটি বিধানসভা আসনে। বিজেপি প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় পেরিয়াপাটনা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ আঠাশে মে পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটগণনা ও ফলপ্রকাশ আটই মে। প্রাক ভোট সমীক্ষা বলছে, এবারের ভোটে যথেষ্ঠই কোণঠাসা শাসক বিজেপি। তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থায় কংগ্রেস।

Updated By: May 4, 2013, 07:00 PM IST

আগামিকাল কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট নেওয়া হবে দুশো তেইশটি বিধানসভা আসনে। বিজেপি প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় পেরিয়াপাটনা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ আঠাশে মে পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটগণনা ও ফলপ্রকাশ আটই মে। প্রাক ভোট সমীক্ষা বলছে, এবারের ভোটে যথেষ্ঠই কোণঠাসা শাসক বিজেপি। তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থায় কংগ্রেস।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য কার হাতে থাকবে কর্ণাটকের কুর্সি? রবিবারের নির্বাচনে সেই জনাদেশ স্পষ্ট করবেন কর্ণাটকের মানুষ। প্রাক ভোট সমীক্ষা বলছে কর্ণাটকে সমস্যায় বিজেপি।
দুহাজার আটে যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা, পরবর্তী পাঁচ বছরে তার কিছুই করে দেখাতে পারেনি বিজেপি সরকার। বরং দুর্নীতি এবং গোষ্ঠীকোন্দলের একাধিক অভিযোগে দল তথা সরকারের ভাবমূর্তি তলানিতে। বারবার মুখ্যমন্ত্রী বদল ও বিভিন্ন ইস্যুতে দলীয় কোন্দলে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে সরকারের স্থায়িত্ব।  এর জেরে পাঁচ বছরের শাসনকালের শেষে রাজ্যজুড়ে বইছে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার জোরালো হাওয়া। রাজধানী বেঙ্গালুরু সমেত রাজ্যের কেন্দ্রীয় অংশে গৈরিক পার্টির গ্রহণযোগ্যতা কার্যত শূন্য। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে দলত্যাগী প্রবীন লিঙ্গায়েত নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পার ভোট কাটার আশঙ্কা।
রবিবারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের থেকেও বিজেপিকে বেশি চিন্তার রেখেছেন দলেরই প্রাক্তন লিঙ্গায়েত নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা।
দুহাজার আটে বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছিল ইয়েদুরাপ্পার লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্ক। তারপর দুর্নীতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রিত্ব খোয়ান তিনি। বর্তমানে বিজেপি ছেড়ে কর্ণাটক জনতা পক্ষ নামে নতুন দল গড়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপির লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কে ইয়েদুরাপ্পা বড়সড় ধস নামাবেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দুহাজার বারোর উদুপি ও চিকমাগালুর উপনির্বাচনে নিজের শক্তির পরিচয় দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। ইয়েদুরাপ্পা ভোট কাটায় ওই দুই কেন্দ্রে ভরাডুবি হয় বিজেপির। যদিও, সাম্প্রতিক পুর নির্বাচনে ইয়েদুরাপ্পার দল চমকপ্রদ কিছু করে দেখাতে পারেনি।
বিজেপির সমস্যায়, স্বাভাবিকভাবেই অ্যাডভান্টেজ কংগ্রেস। সাম্প্রতিক পুর নির্বাচনের ফলেই স্পষ্ট কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে কংগ্রেস। দুহাজার বারোয় চিকমাগালুর ও উদুপি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও অপ্রত্যাশিত জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় প্রকাশ, রাজ্যের সিংহভাগ মানুষ আস্থা রাখছেন কংগ্রেসেই।
জয়ের সম্ভাবনা থাকায় নির্বাচনী প্রচারে সর্বাত্মক আক্রমণের পথে গিয়েছে কংগ্রেস।
একের পর এক নির্বাচনী সভায় বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করতে দেখা গিয়েছে রাহুল গান্ধীকে। তুলনায় বিজেপির প্রচারের ভিভিআইপি উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়ভাবে কম। স্টার প্রচারক নরেন্দ্র মোদীকেও সেভাবে কর্ণাটকে ব্যবহার করেনি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। 
বিজেপি ও কংগ্রেসের এই দ্বৈরথের মাঝে বেশ কিছু আসন ছিনিয়ে নিতে পারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়ার জনতাদল সেকুলার পার্টিও। দক্ষিণ কর্ণাটকের ভোক্কালিগা ভোটব্যাঙ্কে তাদের একাধিপত্য। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্ণাটকে ভাল ফল লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় স্তরে অক্সিজেন জোগাবে কংগ্রেসকে। অন্যদিকে, দুর্নীতি ইস্যুতে নির্বাচনী বিপর্যয় হলে, জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির আক্রমণ অনেকটাই ভোঁতা হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
 

.