IAS: রেলের কুলি হলেন আইএএস অফিসার, শ্রীনাথের জীবন যেন রূপকথা
কেরিয়ারসর্বস্ব জীবনে যখন সবাই নিজের স্বপ্নপূরণের ট্র্যাকে ছুটছে ঊর্ধ্বশ্বাসে, তখন কেরালার শ্রীনাথ কে রেলের কুলির কাজ করেও হয়ে উঠেছেন একজন আইএএস অফিসার। হ্যাঁ, শুনে চমকে উঠতেই হয়। কারণ সত্যি এই ঘটনা। শ্রীনাথের এই অভাবনীয় সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে আছে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ের গল্প। শ্রীনাথ তার সাফল্যের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পাথেয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরোঃ আজকের দিনে প্রতিযোগিতার ইঁদুরদৌড়ে একপ্রকার নাভিশ্বাস উঠছে নব প্রজন্মের। ঠিক সেই সময় কেরলের বাসিন্দা শ্রীনাথ কের গল্প অনুপ্রেরনা হয়ে উঠতে পারে তাদের কাছে। কেরিয়ারসর্বস্ব জীবনে যখন সবাই নিজের স্বপ্নপূরণের ট্র্যাকে ছুটছে ঊর্ধ্বশ্বাসে, তখন কেরালার শ্রীনাথ কে রেলের কুলির কাজ করেও হয়ে উঠেছেন একজন আইএএস অফিসার। হ্যাঁ, শুনে চমকে উঠতেই হয়। কারণ সত্যি এই ঘটনা। শ্রীনাথের এই অভাবনীয় সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে আছে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ের গল্প। তার কাছে ছিল না ইউপিএসসির জন্য উপযুক্ত বই এমনকি তিনি সাহায্য পাননি কোন গাইডেরও। তারপরেও শ্রীনাথ তার সাফল্যের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পাথেয়।
শ্রীনাথ কে কেরালার মুন্নারের বাসিন্দা। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শ্রীনাথ তার ছেলেবেলা থেকেই পরিচিত অভাবের বিরুদ্ধে সংসার সীমান্তে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা লড়াইয়ের সঙ্গে। সময়ও শ্রীনাথ কে ভেঙ্গেচুরে গড়ে তুলছিল নিজের মত। পরিবারের অভাব মোচনের জন্য শ্রীনাথ একসময় কেরলের এরনাকুলামে কুলির কাজ শুরু করেন। ততদিনে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। শ্রীনাথই তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর কুলির কাজ করেন শ্রীনাথ, কিন্তু এই সামান্য উপার্জনে তার পরিবারের খুব একটা সুরাহা হচ্ছিল না।
এরপরের ঘটনাটিই যেন একটা রূপকথা। শ্রীনাথ তখনও কুলির কাজ করছেন। এদিকে ততদিনে শ্রীনাথের পরিবারে আগমন ঘটেছে এক নতুন সদস্যের, বাবা হয়েছেন শ্রীনাথ। ফলে অভাবের সংসারে আরও বেড়েছে টানাটানি। সালটা ২০১৬, জানুয়ারি মাসে মুম্বই স্টেশনে শুরু হল ফ্রি ওয়াই ফাই পরিষেবা। এই ফ্রি ওয়াই ফাইয়ের সূত্রেই এরপর ঘুরতে শুরু করে শ্রীনাথের ভাগ্যের চাকা। পরবর্তী সময়ে কেরলের এনারকুলাম স্টেশনেও বিনামূল্যে ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু হলে শ্রীনাথ তার লক্ষ্য পূরণের সুযোগ পান। ওয়াই ফাই পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ইউপিএসসির প্রস্তুতি শুরু করেন শ্রীনাথ। স্টেশনের অন্যান্য কুলিরা শ্রীনাথের এই প্রচেষ্টার কথা জানতে পেরে তাঁকে সহায়তায় কোন খামতি রাখেননি। যদিও একবারের চেষ্টায় শিকে ছেঁড়েনি শ্রীনাথের। কিন্তু ওই যে বলে না ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। সেইমতো চতুর্থ বারের প্রচেষ্টায় সফল হন কে শ্রীনাথ, শুধু তাই নয় তিনি পেয়েছেন প্রায় ৮২ শতাংশ নম্বর। এখন নিজের গ্রামের উন্নতির জন্য কাজ করতে চান তিনি। শ্রীনাথের এই ঘটনা আজকের কেরিয়ারসর্বস্ব যুগে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতেই পারে।