দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ ধর্মস্থানের তালিকা চাইল সুপ্রিম কোর্ট, বিড়ম্বনায় মোদী
হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারির জন্য গুজরাট সরকারের আর্জি খারিজ হয়েছিল আগেই। এবার নরেন্দ্র মোদীর রক্তচাপ বাড়িয়ে ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০টি মুসলিম ধর্মস্থান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলী তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারির জন্য গুজরাট সরকারের আর্জি খারিজ হয়েছিল আগেই। এবার নরেন্দ্র মোদীর রক্তচাপ বাড়িয়ে ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০টি মুসলিম ধর্মস্থান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলী তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি গুজরাট হাইকোর্ট ২০০২ সালের দাঙ্গার সময় মোদী সরকারের `ভূমিকা`র কড়া সমালোচনা করে। বিচারপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি জে বি ফারদিওয়ালাকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এদিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেয়, রাজ্য প্রশাসনের `অবহেলা এবং নিষ্ক্রিয়তা`র কারণেই সে সময় দাঙ্গাকারীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিল রাজ্যের বহু সংখ্যালঘু ধর্মস্থান। দুই বিচারপতির বেঞ্চ দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ সংখ্যালঘুদের ৫০০টি ধর্মীয় স্থান পুননির্মানের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে।
`ইসলামিক রিলিফ কমিটি অফ গুজরাট`-এর তরফে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের ২৬টি জেলা আদালতকে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ মুসলিম ধর্মস্থানগুলির তরফে আর্থিক অনুদানের আবেদন গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে। দুই বিচারপতি বেঞ্চ জানায়, আগামী ছ`মাসের মধ্যে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতগুলির মুখ্য বিচারকদের।
মোদী সরকারের তরফে গুজরাট হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান হয়। কিন্তু গত ৩ জুলাই বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি দীপক মিশ্রকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারির আর্জি খারিজ করে দেয়। এদিন গুজরাটের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল তুষার মেহতার উপস্থাপিত সংবিধানের ২৭ নম্বর ধারা ভঙ্গের অভিযোগও নাকচ করে এদিন সুপ্রিম কোর্ট বলেছে সংবিধানের ২২৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু ধর্মস্থানগুলির সংস্কারের জন্য আনুমানিক কত টাকা লাগতে পারে, সে ব্যাপারেও রাজ্য সরকারের রিপোর্ট তলব করেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। এর ফলে সাংবিধানিক প্রশ্ন তুলে জনগণের অর্থে ধর্মস্থান সংস্কারের বিষয়ে মোদী সরকারের আপত্তি অনেকটাই লঘু হয়ে পড়ল বলে আইনজ্ঞদের ধারণা। চলতি বছরের শেষেই গুজরাটে বিধানসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিশ্চিতভাবেই বিড়ম্বনা বাড়ল বিজেপি`র মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।