রাজ্যসভায় পেশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯, জেনে নিন এক নজরে

৪ঠা ডিসেম্বর যাতে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অসমে নাগরিকপঞ্জি থেকে প্রায় ১২ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ যাওয়ায় চাপে বিজেপি। নেতারা এখন বলছেন, আগে সিএবি, পরে এনআরসি। কারণ, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা হিন্দুরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন।

Updated By: Dec 11, 2019, 06:40 PM IST
রাজ্যসভায় পেশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯, জেনে নিন এক নজরে
ছবি-টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন২০১৬-র ১৯ জুলাই, লোকসভায় ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের, ৬ষ্ঠ সংশোধনী বিল পেশ করে মোদী সরকার। সংসদীয় কমিটি ঘুরে, এই বছর জানুয়ারি মাসে লোকসভায় বিলটি পাস হয়। কিন্তু, সংখ্যার জোর না থাকায় ১ম ইনিংসে রাজ্যসভায় বিলটি আর পেশ করেনি মোদী সরকার। ২য় ইনিংসের গোড়াতেই ফের সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।

৪ঠা ডিসেম্বর যাতে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অসমে নাগরিকপঞ্জি থেকে প্রায় ১২ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ যাওয়ায় চাপে বিজেপি। নেতারা এখন বলছেন, আগে সিএবি, পরে এনআরসি। কারণ, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা হিন্দুরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন।

** বিলে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত হবেন না। তাঁদের শরণার্থী হিসাবে দেখা হবে।

** বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, পার্সি ও শিখরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয় জন্মসূত্রে যাঁরা ভারতীয় নন, তাঁরা বৈধভাবে এ দেশে ১১ বছর থাকার পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

** প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা, অ-মুসলিম ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্বের আবেদনে, এদেশে বসবাসের সময়সীমা ১১ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে।  সংশোধিত বিল অনুযায়ী, অ-মুসলিম শরণার্থীরা হলফনামা দিয়েই নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। সরকার কেস টু কেস বিবেচনা করবে।

** উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্বের আবেদন করলে এতদিন তাঁদের এদেশে বসবাস যাতে অবৈধ বলে গণ্য না হয়, সেজন্য বিদেশি আইন ও পাসপোর্ট আইনে সংশোধন করা হবে।

** অ-মুসলিম উদ্বাস্তুরা যেদিন এ দেশে এসেছেন, সেদিন থেকেই তাঁরা ভারতের নাগরিক বলে বিবেচিত হবেন। অবৈধভাবে এদেশে থাকার অভিযোগে মামলা চললেও অ-মুসলিম উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং নাগরিকত্ব পেলেই সেই মামলা খারিজ হয়ে যাবে। সংবিধানে ১৯৪৮ সালের ১৯শে জুলাইকে ভিত্তি-তারিখ রেখে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বাকি সমস্ত বিষয়, সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। অসম চুক্তি অনুযায়ী, নাগরিক পঞ্জিতে নাম তুলতে ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে ভারতে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু নাগরিকত্ব বিল পাস হলে, ভারতীয় নাগরিক হিসাবে, যোগ্যতা অর্জনের জন্য, বাড়তি ৪৩ বছর সময় মিলবে। 

আরও পড়ুন- নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে ‘জ্বলছে’ বিজেপি শাসিত অসম, মোতায়েন সেনা, বন্ধ ইন্টারনেট

** বিলে বলা হয়েছে, বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার অ্যাক্টের আওতায়, ইনারলাইন পারমিট চালু থাকায় অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হবে না।

** সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় থাকা অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরার জনজাতি অধ্যুষিত স্বশাসিত অঞ্চলগুলিকেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বাইরে রাখা হবে। সরকারের যুক্তি, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে, প্রতিবেশী দেশগুলিতে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর, কেউ ভারতে আসতে চাইলে কী হবে, বিলে তার স্পষ্ট উত্তর নেই।

.