ফাটল সম্পর্কে, ইউপিএতে কার্যত একা মমতা

দীর্ঘ ২৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বরাবর গান্ধী পরিবারের আশীর্বাদ ধন্য ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীব গান্ধীর স্নেহধন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্নেহ করে এসেছেন সোনিয়া গান্ধীও। এমনকী কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল গড়ার পরেও সেই সম্পর্ক অটুট ছিল। এবার সরাসরি সোনিয়া গান্ধীর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে সেই দীর্ঘ সম্পর্কে ফাটল ধরালেন তৃণমূল নেত্রী। ইউপিএর অন্দরে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল তৃণমূলের ভবিষ্যত।

Updated By: Jun 15, 2012, 09:02 PM IST

দীর্ঘ ২৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বরাবর গান্ধী পরিবারের আশীর্বাদ ধন্য ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীব গান্ধীর স্নেহধন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্নেহ করে এসেছেন সোনিয়া গান্ধীও। এমনকী কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল গড়ার পরেও সেই সম্পর্ক অটুট ছিল। এবার সরাসরি সোনিয়া গান্ধীর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে সেই দীর্ঘ সম্পর্কে ফাটল ধরালেন তৃণমূল নেত্রী। ইউপিএর অন্দরে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল তৃণমূলের ভবিষ্যত।
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর অম্লমধুর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয়। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে রাজীব ও সোনিয়া গান্ধীর স্নেহ থেকে কখনও বঞ্চিত হননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও সোনিয়ার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কে আঁচ পড়েনি। কিন্তু প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রষ্ট্রপতি পদের বিরোধিতা করতে নেমে সেই দীর্ঘ সম্পর্কেই তিক্ততা এনে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 
সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে একান্তে বৈঠকের পর যেভাবে প্রণব মুখার্জি ও হামিদ আনসারির নাম ঘোষণা করে দেন তাতে রীতিমত অসন্তুষ্ট হন ইউপিএ চেয়ারপার্সন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মুলায়ম সিংকে পাশে নিয়ে সোনিয়ার দেওয়া নাম দুটি খারিজ করে নিজের পছন্দের তিনটি নাম (মনমোহন সিং, সোমনাথ চ্যাটার্জি, এপিজে আব্দুল কালাম) ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি পদে মনমোহন সিংয়ের নাম প্রস্তাব করে সোনিয়া গান্ধীকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে দেন তৃণমূল নেত্রী। এভাবে সরাসরি তাঁর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করায় প্রণব বাবুকেই প্রার্থী ঘোষণা করে পাল্টা প্রত্যাঘাত করলেন সোনিয়া।
প্রদেশ নেতৃত্বের দাবি উপেক্ষা করেই বিধানসভা ভোটে জোট গড়ার সময় তৃণমূলের সব শর্ত মেনে নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। কয়েক মাস আগে তাঁর নির্দেশেই তৃণমূলের দাবি মেনে শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান। কিন্তু এবার ঘটনাপ্রবাহ যেদিকে গড়ায় তাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে সোনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক কর্তৃত্বের প্রশ্ন। যে কারণেই এবার আর দরকষাকষির রাজনীতিতে জিততে পারলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুদিন আগেই জাতীয় রাজনীতির আলোকবৃত্তে ছিলেন তিনি। শুক্রবার বড়ই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়তে হল তাঁকে।
সেইসঙ্গে গোটা ঘটনাপ্রবাহ প্রশ্ন তুলে দিল, এবার কী বিচ্ছেদ আসন্ন কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ? 

.