প্রশ্নের মুখে অনাস্থা প্রস্তাবে অনড় মমতা

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে বিজেপি থেকে চরম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএম, কারোর কাছে সাহায্য চাইতেই পিছপা হচ্ছেন না তিনি। কিন্তু,  মনমোহন সিং সরকারকে ফেলতে কেন এত মরিয়া চেষ্টা তৃণমূল নেত্রীর। প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে উঠে পড়ে লেগেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Updated By: Nov 22, 2012, 09:01 AM IST

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে বিজেপি থেকে চরম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএম, কারোর কাছে সাহায্য চাইতেই পিছপা হচ্ছেন না তিনি। কিন্তু,  মনমোহন সিং সরকারকে ফেলতে কেন এত মরিয়া চেষ্টা তৃণমূল নেত্রীর। প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে উঠে পড়ে লেগেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও ফোন করছেন বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজকে কখনও আবার বামেদের কাছে সাহায্য চেয়ে হাত বাড়াচ্ছেন। যদিও, কয়েকমাস আগেও একাধিক ইস্যুতে মনমোহন সিং সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে উঠলেও, সেই সময় সরকারের পাশেই থেকেছেন তৃণমূল নেত্রী।  স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ইউপিএ টু সরকারকে ফেলতে কেন তৃণমূল নেত্রীর এই তাড়াহুড়ো।
সিপিআইএম বিরোধিতার মধ্যে দিয়েই নিজের রাজনৈতিক অস্বিস্ত তৈরি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সিপিআইএমের বিরোধিতা করতেই কংগ্রেস ছেড়ে গড়ে তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বার বার সিপিএমের নৈকট্যের অভিযোগ এনে তাদের সিপিআইএমের বি টিম বলতেও দ্বিধা করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে সিপিআইএমকে পাশে পেতে চাইছেন। যদিও ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাড়ায়, পাড়ায়, চায়ের দোকানে সবর্ত্র সিপিআইএমকে সামাজিকভাবে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। সিপিআইএমের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে সবরকম সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন্ সমস্যার সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠকেও ব্রাত্যই রাখা হয়েছে সিপিআইএমকে। তাই প্রশ্ন হঠাৎ করে কিসের তাগিদে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সাহায্য চাইলেন তৃণমূল নেত্রী। এমনকি, খোদ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বিরোধী দলের সদর দফতরে যেতেও তাঁর যে দ্বিধা নেই তাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইউপিএ-টু সরকারকে ফেলতে তাঁর বিজেপি-র সাহায্য চাওয়ার পিছনের যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। এরাজ্যে গত কয়েকটি নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্যের পিছনে রয়েছে সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশের ভোট। বিজেপি-র সঙ্গে রাজনৈতিক নৈকট্য এই ২৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে পারে জেনেও, কেন তৃণমূল নেত্রী বিজেপিকে সঙ্গে চাইছেন তাও বিশেষজ্ঞদের কাছে লাখ টাকার প্রশ্ন।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা উনিশ। লোকসভায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে কমপক্ষে পঞ্চাশজন সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। গোটা বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কেন মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলে উঠছে সেই প্রশ্নও।
বিশেষজ্ঞদের দাবি,  কেন্দ্রীয় সরকার টিঁকে থাকলে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যত বড়সড় চ্যালেজ্ঞের মুখে পড়বে বুঝেই মনমোহন সরকারকে ফেলতে সব সম্ভাবনাই ঝালিয়ে দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাংশের মতে, এফডিআই ইস্যুতে তিনিই  একমাত্র লড়াই চালাচ্ছেন এই বার্তাই  রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে রাজনৈতিক ফায়দা দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

.