Funeral Through River: মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বর্ষার উত্তাল নদী হেঁটে পেরিয়ে তবে সৎকার...
ওডিশা সরকারের অবশ্য দরিদ্রদের দাহকার্যের জন্য বিশেষ স্কিম রয়েছে। যাঁরা স্বব্যয়ে দাহকার্য করতে অপারগ সরকার তাঁদের প্রিয়জনের দেহ দাহ করার সমস্ত ব্যবস্থা করবে সেই স্কিমের মাধ্যমে। যোজনাটির নাম হরিশচন্দ্র সহায়তা যোজনা। এই যোজনার সূত্রে মৃতের পরিবারকে ২০০০ টাকা অর্থসাহায্য করা হয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতীয় সাহিত্যে মৃতের সৎকার নিয়ে নানা কাহিনি আছে। কোথাও দাহ করার সুযোগ নেই, কোথাও মহামারিতে মৃত্যু বলে দেহ সমাজের স্বীকৃত শ্মশানে ব্রাত্য, কোথাও আবার দাহখরচ নেই বলে গরিবের পক্ষে তা করা সম্ভব হচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে অপরাজেয় কথাশিল্পীর 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পখানি অসাধারণ এক ঘটনার ছবি আঁকে। যা পাঠকের মনকে ভারাক্রান্ত করে। সম্প্রতি দেহ দাহ করা বিষয়ে তেমনই মন-ভারাক্রান্ত-করা এক ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। ঘটনাটি ওডিশার। সেখানে এক গ্রামে শ্মশান যেতে হয় নদীর মতো একটি জলধারা পেরিয়ে। সেই জলধারার উপর কোনও সেতু বা সাঁকো নেই। সম্প্রতি সেখানে ভয়াবহ বৃষ্টিপাত ঘটায় সেই নদী প্রায় প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। নদীখাতে একবুক জল। খরস্রোতা সেই জল ঠেলে তবে ওপারের শ্মশানে যাওয়া সম্ভব। এই সময়ে নিকটবর্তী গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে মৃতের আত্মীয়-স্বজনেরা সেই জলের মধ্যে দিয়ে দেহ নিয়ে গিয়ে দাহকার্য সারেন।
আরও পড়ুন: Azadi Ka Amrit Mahotsav: ৭৫ ফুট দীর্ঘ উজ্জ্বল ভারতীয় পতাকায় ঢেকে গেল সাগরসঙ্গম..
ঘটনাটি ওডিশার কালাহান্ডি জেলার গোলামুন্ডা ব্লকের। মৃতের গ্রামের নাম বেহেরাগুদা। এ সপ্তাহেই মারা গিয়েছিলেন সান্তা রানা নামের এক ব্যক্তি। তাঁর স্বজনবর্গকেই ওই দুঃসহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সান্তা বহুদিন ধরে পক্ষাঘাতে ভুগছিলেন। জলের মধ্যে যাওয়ার কারণে কাঁধের উপর শক্ত করে মৃতকে বহন করছিলেন সঙ্গের লোকজন। এদিকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে। মৃতের দেহ আবৃত করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল কলাপাতা। পুরো দৃশ্যটিরই ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। এবং যথারীতি সেটি ভাইরাল হয়েছে।
ওডিশা সরকারের অবশ্য দাহকার্যের জন্য বিশেষ স্কিম রয়েছে। যাঁরা স্বব্যয়ে দাহকার্য করতে অপারগ সরকার তাঁদের প্রিয়জনের দেহ দাহ করার সমস্ত ব্যবস্থা করবে সেই স্কিমের মাধ্যমে। যোজনাটির নাম হরিশচন্দ্র সহায়তা যোজনা। এই যোজনার সূত্রে মৃতের পরিবারকে ২০০০ টাকা অর্থসাহায্য করা হয়।
এখন দরিদ্রের জন্য লাগু যোজনা-নির্ধারিত এই খরচটুকু এই পরিবারটিও পাবে কিনা সেটা আপাতত বিচার্য নয়। আসলে এই একুশ শতকেও যে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের কোনও এক রাজ্যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে, সেটা নিয়েই বিস্মিত হতবাক নেটদুনিয়া। এমন এক দুঃখের ঘটনাকে সার্থক ভাষা প্রয়োগে হয়তো তুলে ধরতে পারতেন একমাত্র শরৎচন্দ্রই!