‘দ্বিচারিতার’ অভিযোগ এনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিচ্ছেন বিরোধীরা
সম্প্রতি অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গিয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ অসম বাসিন্দা নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবার থেকে সেনাবাহিনীতে কর্মরত নাগরিকের ‘অধিকার’ খর্ব হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিরোধীরা নজিরবিহীন পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্যসভায়। ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ এনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে ‘কড়া চিঠি’ দিতে চলেছেন বিরোধীরা। এমনটাই জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
বেঙ্কাইয়া নায়ডুর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনছেন তাঁরা? রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংসদে যে আলোচনা হচ্ছে, সরকারি টেলিভিশনে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে শাসক দলকেই। এমনকী রাজ্যসভা ওয়েবসাইট থেকে বিরোধীদের বেশ কিছু আলোচনা বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া তাঁদের আরও অভিযোগ, বেঙ্কাইয়া নায়ডু বিরোধীদের প্রতি দ্বিাচারিতা আচরণ করছেন। অসমে নাগরিক পঞ্জিকরণে নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে রাজ্যসভায় অমিত শাহ আলোচনায় অংশগ্রহণ করলে, তাঁকে বাধা দেন বিরোধীরা। বিরোধীদের হৈ-হট্ট গোলের মধ্যে ‘অবাঞ্ছিত’ বিরতি নেন ভেঙ্কাইয়াই বলে অভিযোগ। বুধবার ফের অধিবেশন শুরু হলে, অমিত শাহকে আলোচনার সম্পূর্ণ করতে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, পূর্বসূরী প্রধানমন্ত্রীদের অপমান করেছেন বিজেপি সাংসদ। তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, “নরসিংহ রাও থেকে অটলবিহারী বাজপেয়িরাও তা হলে ভীতু ছিলেন, এক্ষুনি তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে।” উল্লেখ্য, রাজীব গান্ধীর আমলেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণের চুক্তি হয়েছে। বিজেপি সরকার তা কার্যকর করার সাহস দেখিয়েছে বলে দাবি শাহের।
আরও পড়ুন- ভোটাধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে এনআরসি খসড়ায় বাদ ৪০ লক্ষ মানুষের
লোকসভায় অনস্থা প্রস্তাব আলোচনায় শাসক দলের বেশি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনকেও চিঠি দেওয়া হয় বিরোধীদের তরফে। তবে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া এই প্রথম হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই চিঠি দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, এনসিআর-সহ আরও বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। প্রবীণ বিরোধী দলের এক নেতা জানিয়েছেন, “আরও অনেকে এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
আরও পড়ুন- নাগরিকপঞ্জীতে দ্বিচারিতা মমতার, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন সমর্থন, তোপ ভিএইচপি-র
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গিয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ অসম বাসিন্দা নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবার থেকে সেনাবাহিনীতে কর্মরত নাগরিকের ‘অধিকার’ খর্ব হয়েছে। এরপরই বিরোধীরা এক কাট্টা হয়ে সমালোচনায় সরব হয় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা গৃহযুদ্ধ হওয়ার সামিল। এনআরসি-র এই পদক্ষেপে বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল নেত্রী। তবে, রাজনৈতিক কারবারিরা মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘নাগরিক পঞ্জিকরণ’ ইস্যু বিরোধীদের ফের এক ছাদের তলায় আসায়, ফেডারেল ফ্রন্ট তৈরির পথ অনেকটাই মসৃণ হবে মমতার।
আরও পড়ুন- নাগরিকপঞ্জী নিয়ে শ্যাম ও কূল রাখার চেষ্টায় অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ