জিনপিংকে ভারতীয় ঐতিহ্য, রামলীলা, মন্দির দর্শন করালেন মোদী

 ইতিহাসের অনুষঙ্গে বন্ধুত্বের বার্তা। মমল্লপুরমে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বাগত জানালেন নরেন্দ্র মোদী। মন্দির, প্রাচীন স্থাপত্য দর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শীর্ষ বৈঠকের আগে জমাট হল রসায়ন। শনিবার সাগরপাড়ে আলোচনায় বসছেন নরেন্দ্র মোদী-শি জিনপিং।   

Updated By: Oct 11, 2019, 11:38 PM IST
জিনপিংকে ভারতীয় ঐতিহ্য, রামলীলা, মন্দির দর্শন করালেন মোদী

নিজস্ব প্রতিবেদন: ইতিহাসের অনুষঙ্গে বন্ধুত্বের বার্তা। মমল্লপুরমে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বাগত জানালেন নরেন্দ্র মোদী। মন্দির, প্রাচীন স্থাপত্য দর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শীর্ষ বৈঠকের আগে জমাট হল রসায়ন। শনিবার সাগরপাড়ে আলোচনায় বসছেন নরেন্দ্র মোদী-শি জিনপিং।   

ইতিহাসের শহর মহাবলীপুরম। এখন মমল্লপুরম। মন্দির-নগরীতে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে দক্ষিণী সাজে স্বাগত জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘুরিয়ে দেখালেন নানা মন্দির, প্রাচীন স্থাপত্য। বঙ্গপোসাগরের পাড়ে দুজনে উপভোগ করলেন উপকূলের নিসর্গ। হাঁটতে হাঁটতে, কিছুক্ষণের বিশ্রামে, ফাঁকে ফাঁকে চলল কথা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামতে সাগর পাড়ে শুরু হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

শীর্ষ বৈঠক। কিন্তু, রাজধানীর বাইরে। থাকবে না কোনও ঘোষিত বিষয়ও। দুই রাষ্ট্রপ্রধানই খোলামনে কথা বলবেন। ক্ষমতায় আসার পর চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করতে, এই পথেই হাঁটা শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী। 

২০১৪-এ মোদী ক্ষমতায় আসার পরই, সবরমতীর পাড়ে দোলনায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সতেরোর জুনে তাল কাটল ডোকালামে। পরের বছর উহানে দুই নেতার বৈঠকের পর পরিস্থিতি সহজ হয়। মোদী ফের ক্ষমতায় আসার পর আবার ভারতে চিনা প্রেসিডেন্ট। এবার পল্লব রাজাদের শহর, ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট তামিলনাড়ুর মমল্লপুরমে। 

শনিবার সাগরপাড়ে তাজ ফিশারম্যানস কোভ রিসর্টে বৈঠক করবেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে কথা হবে, চিনা কমিউনিস্ট পার্টির দুই শীর্ষ নেতা ইয়াং জিয়েচি এবং ওয়াং ইয়ের। কূটনৈতিক মহলের মতে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে কাশ্মীর-লাদাখে ৩৭০ ধারা রদের কথা তুলবেনই জিনপিং। কিন্তু, ভারতের লক্ষ্য হল, দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার বিষয়বস্তুকে কাশ্মীর-লাদাখের বাইরেও নিয়ে যাওয়া। চিনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে যাওয়ায়, ভারতের আপত্তির কথা জিনপিংকে জানাতে পারেন মোদী। 

একইসঙ্গে বাংলাদেশ-চিন-ভারত-মায়নমার করিডরের কাজে গতি আনার জন্য চাপ দিতে পারেন তিনি। পাকিস্তান কীভাবে ভারত-বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে তাও জিনপিংকে ফের জানাবেন মোদী। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সমস্যা, বাণিজ্য ঘাটতি ও আমেরিকা-চিন শুল্কযুদ্ধ নিয়েও দুই নেতার কথা হওয়ার সম্ভাবনা। 

মোদীর সঙ্গে বৈঠকে আগে জিনপিংকে কাশ্মীরের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন ইমরান খান।টুইটে তাঁর মন্তব্য, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, হংকং নিয়ে সরব হলেও, কাশ্মীর নিয়ে চুপ।এই পরিস্থিতিতে, ভারত-চিন যোগাযোগের প্রাচীন নির্দশন, মন্দির-নগরী মমল্লপুরমের আলোচনার দিকেই তাকিয়ে সাউথ ব্লক। প্রায় দু'হাজার বছর আগে থেকেই, মহাবলীপুরম বা মমল্লপুরমের সঙ্গে, ড্রাগনের দেশের আত্মিক যোগাযোগ। পল্লব-চোল রাজাদের আমলে এই প্রাচীন তামিল জনপদের সঙ্গে চিনের ফুজিয়ান প্রদেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ফুজিয়ানের গভর্নর ছিলেন জিনপিং। সপ্তম শতকে পল্লব রাজা নরসিংহবর্মনের সময়ে কাঞ্চিপুরমে এসেছিলেন চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং। এখন কাঞ্চিপুরম জেলাতেই রয়েছে মমল্লপুরম শহর। ঐতিহাসিক এই সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই, চিনের প্রেসিডেন্টকে, মমল্লপুরমে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী। শীর্ষ বৈঠকের পর শনিবারই চেন্নাই থেকে নেপাল রওনা হবেন জিনপিং।

আরও পড়ুন- জিয়াগঞ্জকাণ্ডে নয়া মোড়, রামপুরহাটে সন্দেহভাজনের বাড়িতে তল্লাসি পুলিসের

.