নমোর ডাকে একসঙ্গে সবাই ৯ মিনিট আলো নিভিয়ে রাখলে বসে যেতে পারে গ্রিড!
এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিদ্যুত্ মন্ত্রক ও তার কর্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদন: রবিবার রাত ৯টার পর কী হবে। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ একসঙ্গে ঘরের আলো নিভিয়ে ফেললে বসে যেতে পারে পাওয়ার গ্রিড। এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিদ্যুত্ মন্ত্রক ও তার কর্তারা। কী ভাবে উত্পাদন ও খরচের সামঞ্জস্য রাখা য়ায় তা নিয়েই ঘুম ছুটেছে বিদ্যুত্ দফতরের কর্তাদের।
আরও পড়ুন-বাড়ির ছাদে উঠলেই দেখা যাচ্ছে ২১৩ কিমি দূরের বরফে ঢাকা পাহাড়, শাপে বর লকডাউন!
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বহু মানুষ যে আলো নেভাবেন তা বলাই বাহুল্য। গ্রিড যাতে না বসে তার জন্য তৈরি Power System Operation Corporation Ltd। সাধারণত হঠাৎ একসঙ্গে চাহিদার তূলনায় অনেকটা কম বিদ্যুৎ ব্যবহার হলে গ্রিড অর্থাৎ যেখান থেকে বিদ্যুৎ আসে সেটা বসে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার আশঙ্কা থেকেই যায়। এই সমস্যা দূর করতে POSOCO সেই সময় জেনারেশন গুলি কমিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ন্যাশানাল গ্রিডের হিসেব অনুযায়ী ওই সময়ে গোটা দেশে প্রায় ১২,৮৭৯mw বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বেশি উদ্বৃত্ত হবে উত্তরপ্রদেশে। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৭৫৩ mw বিদ্যুত্ উদ্বৃত্ত হবে। POSOCO এর এক কর্তা জানিয়েছেন ৯টার পর বিদ্যুতের কম ব্যবহারের জন্য লোড অনেকটাই কমে যাবে। ফলে গ্রিড বসে একটা সংকট তৈরি হতে পারে। ফলে উত্পাদন কমাতে হবে। সাধারণত থার্মাল পাওয়ার গ্রিডের জেনারেশন একটা সীমা পর্যন্ত কমানো যায়।
ঠিক হয়েছে রাত ৮টা ৫৫ নাগাদ তাপবিদ্যুত্ উত্পাদন সর্বোচ্চ ৬০% কমানো হবে। অন্যদিকে হাইড্রো জেনারেশন যেহেতু শূন্য পর্যন্ত কমানো যায় তাই তাকে প্রয়োজন অনুযায়ী কমানো হবে। ৯ টা ১০ মিনিটের পর চাহিদা অনুযায়ী আস্তে আস্তে বাড়িয়ে গ্রিডকে রক্ষা করা যাবে। রাজ্যগুলি আজ রাতের চাহিদা নোট করে রাখবে। আগামিকাল সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ শুরু হবে।
নমোর ঘোষণায় চাপে পড়ে এবার মুখ খুলেছে মহারাষ্ট্র বিদ্যুত্ মন্ত্রক। রাজ্যের বিদ্যুত্ মন্ত্রী নীতীন রাউত বলেছেন, সবাই একসঙ্গে আলো নিভিয়ে দিলে গ্রিড ফেল করতে পারে। সেক্ষেত্রে ফের বিদ্যুত্ সরবারহ ঠিক করতে এক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। তাই ঘরের লাইট না নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালান।
আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্ত জামাত ফেরত হলদিয়া বন্দরের এক কর্মী
উল্লেখ, ২০১২ সালের ৩০ ও ৩১ জুলাই একবার পাওয়ার গ্রিড বসে গিয়েছিল। প্রায় ২০ ঘণ্টা বিদ্যুত্ ছিল না উত্তরভারতের বিভিন্ন জায়গায়। আগামিকালও সেরকম হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে অধিকাংশ বিদ্যুতের জোগান দেয় হাইড্রো ইলেকট্রিক স্টেশনগুলো। রাজ্যে বড় শিল্প বেশি না থাকায় উদ্বৃত্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাই হাইড্রো ইলেকট্রিসিটির উত্পাদন কমিয়ে দিয়েই সমস্যা সামাল দেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।