রথের রশিতে টান পড়তেই উত্সবমুখর পুরী

আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া। পুরাণ অনুযায়ী, আজ জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। গোটা পুরী জুড়ে শুধুই উত্সবের মেজাজ।

Updated By: Jul 14, 2018, 11:08 AM IST
রথের রশিতে টান পড়তেই উত্সবমুখর পুরী

নিজস্ব প্রতিবেদন : আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া। পুরাণ অনুযায়ী, আজ জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। গোটা পুরী জুড়ে শুধুই উত্সবের মেজাজ।

পদ্মপুরাণ মতে, রথযাত্রায় শ্রীবিষ্ণুর মূর্তিকে রথারোহণ করানোর কথা বলা হয়েছে। আর পুরীর জগন্নাথদেবের মূর্তি যে শ্রীকৃষ্ণ তথা শ্রীবিষ্ণুররই আরেকটি রূপ তা সকলেই স্বীকার করেন। তবে স্কন্দপুরাণে কিন্তু প্রায় সরাসরিভাবে জগন্নাথদেবের রথযাত্রার কথা রয়েছে। ওড়িশার প্রাচীন পুঁথিতে জগন্নাথদেবের রথযাত্রার ইতিহাস প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে এই রথযাত্রার প্রচলন হয়েছিল প্রায় সত্যযুগে। সে সময় আজকের ওড়িশার নাম ছিল মালবদেশ। সেই মালবদেশের অবন্তীনগরী রাজ্যে ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে সূর্যবংশীয় এক পরম বিষ্ণুভক্ত রাজা ছিলেন, যিনি ভগবান বিষ্ণুর এই জগন্নাথরূপী মূর্তির রথযাত্রা শুরু করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। পরবর্তিকালে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ ও রথযাত্রার প্রচলন করেন। সেই থেকে রাজপরিবারের নিয়ম অনুসারে যিনি রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন, তিনি  জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাদেবীর রথের সামনে এসে পুষ্পাঞ্জলি দেন এবং সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের সামনে ঝাঁট দেওয়ার পরই পুরীর রথের রশিতে টান পড়ে। শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

পুরীর রথযাত্রা উত্সব হচ্ছে বড় ভাই বলরাম বা বলভদ্র ও বোন সুভদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন যাত্রার স্মারক। তিন জনের জন্য আলাদা আলাদা তিনটি রথ। রথযাত্রা উত্সবের মূল দর্শনীয় হল এই রথ তিনটি। প্রথমে যাত্রা শুরু করে বড় ভাই বলভদ্রের রথ। এই রথের নাম তালধ্বজ। রথটির ১৪টি চাকা। উচ্চতা ৪৪ ফুট। রথের আবরণের রঙ নীল। তারপর যাত্রা করে সুভদ্রার রথ। রথের নাম দর্পদলন। উচ্চতা প্রায় ৪৩ ফুট। এই রথের মোট ১২টি চাকা। যেহেতু রথটির ধ্বজা বা পতাকায় পদ্মচিহ্ন আঁকা রয়েছে তাই রথটিকে পদ্মধ্বজও বলা হয়ে থাকে। রথের আবরণের রঙ লাল। সবশেষে থাকে জগন্নাথদেবের রথ। রথটির নাম নন্দীঘোষ। পতাকায় কপিরাজ হনুমানের মূর্তি আঁকা রয়েছে তাই এই রথের আর একটি নাম কপিধ্বজ। রথটির উচ্চতা ৪৫ ফুট। এতে ১৬টি চাকা আছে। প্রতিটি চাকার ব্যাস ৭ ফুট। রথটির আবরণের রঙ হলুদ। তিনটি রথের আবরণীর রঙ আলাদা হলেও প্রতিটি রথের উপরিভাগের রঙ লাল। জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হয়ে প্রায় দু’মাইল দূরে গুণ্ডিচা মন্দিরে গিয়ে শেষ হয় যাত্রা।

আরও পড়ুন, ''এক সময় পৈতেধারী, আর একবার মুসলিমধারী'', রাহুলকে খোঁচা বিজেপির

 

.