তিন বছর পর নয়া তথ্য, মোদীর নোটবাতিলে সম্মতি ছিল না আরবিআই-এর!
মোদীর এই সিদ্ধান্ত যে কালো টাকা বাতিলে কার্যকরী পদক্ষেপ নয় সে কথাও সরকারকে জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক। বৃদ্ধির হারে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কাও সরকারকে জানানো হয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর নোটবাতিলের সিন্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে একটি আরটিআই-এ। মোদীর এই সিদ্ধান্ত যে কালো টাকা বাতিলে কার্যকরী পদক্ষেপ নয় সে কথাও সরকারকে জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক। বৃদ্ধির হারে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কাও সরকারকে জানানো হয়েছিল তাদের তরফে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করেননি প্রধানমন্ত্রী। রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের সম্মতি ছাড়াই ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাতে ঘোষণা হয় নোটবন্দির কথা।
চাঞ্চল্যকর এই তথ্যে উঠে আসছ একাধিক প্রশ্ন। তবে কি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ছাড়পত্র ছাড়াই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছিল? জানা গিয়েছে, ঘোষণার মাত্র আড়াই ঘণ্টা আগেও এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারের নোটবাতিলের বিপক্ষে চারটি কারণও দেখিয়েছিল আরবিআই। পরে অবশ্য জনস্বার্থের কথা ভেবে সম্মতি জানায় ব্যাঙ্ক। ৮ নভেম্বরের পাঁচ সপ্তাহ পরে ১৬ ডিসেম্বর শেষ পর্যন্ত 'বৃহত্তর সামাজিক স্বার্থে' প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয় এবং মোদীকে অনুমোদন পাঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
আরও পড়ুন: গান্ধীজির দেখানো পথে চলতে ভুলে গিয়েছে কংগ্রেস, আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর
সেই আরটিআই (রাইট টু ইনফর্মেশন) অনুযায়ী, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বৈঠকে বলা হয়েছিল, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তটি 'প্রশংসনীয় পদক্ষেপ' হলেও 'চলতি বছরের জিডিপি'-র ওপর এর বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আরও জানায়, নোটবন্দির খসড়া পেশ করেছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক তাতে লেখা ছিল, ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট যথাক্রমে ৭৬ শতাংশ ও ১০৯ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে দেশে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টররা বিরোধিতা করে এও জানিয়েছিলেন 'আর্থিক বৃদ্ধির যে ৩০ শতাংশ হারে কথা লেখা রয়েছে তা সঠিক, কিন্তু দেশে মুদ্রার বৃদ্ধির হারও স্বাভাবিক৷ কাজেই মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে, তা অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ৷'
তবে সরকারের দাবির পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকারও উল্লেখ করেছিল ব্যাঙ্ক। এ ছাড়াও, ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছিল যেহেতু বেশিরভাগ কালো টাকাই নগদে না রেখে সোনা অথবা রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ করা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে নোটবাতিল হওয়ায় কালো টাকার মালিকদের যে খুব সমস্যা হবে না। কাজেই মূল যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঘোষণা তা সম্পূর্ণ হবে না বলেই মনে করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বোর্ড। তবে শেষ পর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্তে সায় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।