শাঁখের করাতে নীতীশ, বিহারে জয়ী 'লালুবাদ'

জেহানাবাদ ও আরারিয়াতে পরাজয়ের পর জোকিহাটের উপনির্বাচন ছিল নীতীশ কুমারের কাছে আত্মসম্মানের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে তিনি গো হারান হারলেন।

Updated By: May 31, 2018, 04:29 PM IST
শাঁখের করাতে নীতীশ, বিহারে জয়ী 'লালুবাদ'

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত করে কি ভুল করলেন নীতীশ কুমার? পরপর তিনটি উপনির্বাচনে হারের পর এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে পটনার রাজনৈতিক অলিন্দে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলে জোকিহাট আসনটিও ধরে রাখতে পারলেন না নীতীশ কুমার। সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও আরজেডি-কে রুখতে পারল জেডিইউ। বরং লালু জেলে থাকা সত্বেও ৪০ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে এই আসনটি জিতে নিলেন আরজেডি প্রার্থী শাহনওয়াজ আলম।

পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে লালুপ্রসাদ যাদবের কারাবাসের পর দলের ব্যাটন লালুপুত্র তেজস্বীর হাতে। আর তাঁর নেতৃত্বেই বিহারে একের পর এক উপনির্বাচনে জ্বলে উঠছে লণ্ঠন। এর আগে জেহানাবাদ ও অররিয়া আসনে জয়লাভ করেছিল আরজেডি। এদিন বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বলেন, ''অর্থ ও লোকবল ব্যবহার করেও আসন ধরে রাখতে পারলেন না নীতীশ চাচা। সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে এটা লালুবাদের জয়।''

জেহানাবাদ ও আরারিয়াতে পরাজয়ের পর জোকিহাটের উপনির্বাচন ছিল নীতীশ কুমারের কাছে আত্মসম্মানের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে তিনি গো হারান হারলেন। গতবছর মহাজোট ছেড়ে এনডিএ-তে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন নীতীশ কুমার। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জেডিইউ ছাড়েন জোকিহাটের তত্কালীন বিধায়ক সরফরাজ আলম। আরজেডি-তে যোগ দিয়ে সম্প্রতি অরারিয়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতেছেন তিনি। সরফরাজের ভাই শাহনওয়াজ আলমকে জোকিহাটে প্রার্থী করে আরজেডি। অন্যদিকে, সাতটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত মুর্শিদ আলমকে প্রার্থী করেন নীতীশ কুমার। মুর্শিদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। মন্দির থেকে খোয়া যাওয়া মূর্তিও তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিস। এহেন দাগীকে প্রার্থী করায় ধাক্কা খেয়েছিল নীতীশের ভাবমূর্তি। 

উপনির্বাচনে হারের পর নীতীশের সামনে এখন মহাসঙ্কট। লালুর সঙ্গ ছেড়ে মোদীর হাত ধরে রাজনৈতিক জুয়া খেলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, মোদী বিরোধিতার সুযোগও আর তাঁর নেই। অন্যদিকে, কেন্দ্র থেকে বিহারের জন্য বিশেষ রাজ্যের তকমা আনতেও আপাতত ব্যর্থ তিনি। অথচ বিরোধী শিবিরে থাকলে অ-বিজেপি জোটের মুখ হয়ে ওঠার সুযোগ ছিল স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নীতীশের। তবে এখন সেই সুযোগ তিনি হারিয়েছেন। আর সেটা সম্ভবত নিজেও খুব ভাল করেই বুঝতে পারছেন নীতীশ। মোদী সরকারের চার বছর পূর্তিতে নোট বাতিল নিয়ে বেসুরো গেয়েছিলেন নীতীশ কুমার। মোদী সরকারকে প্রতিশ্রুতি পূরণের বার্তাও দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে, রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিহার জুড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে নীতীশকে। ফলে মোদী সঙ্গ লাভ করে এখন শাঁখের করাতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, প্রশ্ন উঠছে, নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি গাড্ডায় ফেললেন নীতীশ? এর উত্তর দেবে সময়।

আরও পড়ুন- 'ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে গ্রাহকদের লোকসান ২০,০০০ কোটি টাকা'

.