বল্লারিতে জয়ী শ্রীরামালু, উপনির্বাচনে ধাক্কা খেল বিজেপি

দেড় মাসের মধ্যেই বদলে গেল উপনিবার্চনী বিপর্যয়ের অভিমুখ! অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে হরিয়ানার হিসার লোকসভা ও পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছিল কংগ্রেসের। জাঠ মুলুকে ক্ষমতায় থেকেও হিসারে জামানত খোয়া গিয়েছিল কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশের। এবার কর্নাটকের বল্লারিতে একই অভিজ্ঞতা হল বিজেপির।

Updated By: Dec 4, 2011, 11:58 AM IST

দেড় মাসের মধ্যেই বদলে গেল উপনিবার্চনী বিপর্যয়ের অভিমুখ!
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে হরিয়ানার হিসার লোকসভা ও পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছিল কংগ্রেসের। জাঠ মুলুকে ক্ষমতায় থেকেও হিসারে জামানত খোয়া গিয়েছিল কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশের। এবার কর্নাটকের বল্লারিতে একই অভিজ্ঞতা হল বিজেপির।

কর্নাটকের বল্লারি বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী বিজেপি ত্যাগী নির্দল প্রার্থী শ্রীরামুলু। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের রাম প্রসাদকে ৪৬, ৭৬০ ভোটে পরাজিত করেছেন বিজেপির এই সদ্য দলত্যাগী প্রাক্তন মন্ত্রী। শ্রীরামুলু পেয়েছেন মোট ৭৪,৫২৭টি ভোট। কংগ্রেসের প্রার্থী রাম প্রসাদের প্রাপ্ত ভোট ২৭,৫২৭। অন্যদিকে জামানত বাঁচানোর জন্য ২০,৫৩২ ভোটের প্রয়োজন হলেও কিন্তু বিজেপি প্রার্থী গাধীলিঙ্গাপ্পা পেয়েছেন মাত্র ১৭,৩৬৬ ভোট।শ্রীরামুলুর এই জয়কে তাঁর পৃষ্ঠপোষক রেড্ডি ব্রাদার্স-এর বড় রাজনৈতিক সাফল্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত সেপ্টেম্বর মাসে আকরিক লোহা কেলেঙ্কারির অভিযোগে জনার্দন রেড্ডির গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই অস্বস্তিতে ছিল রেড্ডি শিবির। সদানন্দ গৌড়ার ক্যাবিনেটে ঠাঁই না পেয়ে সেপ্টেম্বরেই দলত্যাগ করেন শ্রীরামুলু। রাজনৈতিক মহলের অনুমানরেড্ডি ভাইদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন দল গড়ার পথে এগোতে পারেন তিনি। শ্রীরামালুর বোন জে শান্থা বল্লারির বিজেপি সাংসদ। ফলে অদূর ভবিষ্যতে কন্নড় মুলুকে আরও বড় সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে পদ্ম শিবির।

বল্লারির পাশাপাশি অন্য পাঁচ রাজ্যের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। হরিয়ানার রাতিয়া বিধানসভা কেন্দ্রেও 'পুওর থার্ড' হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে নীতিন গডকড়ির দলকে। তাত্‍পর্যপূর্ণ ভাবে এই কেন্দ্রটি প্রধান বিরোধী দল আইএনএলডি'র কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে শাসক কংগ্রেসের প্রার্থী জার্নেল সিং। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদলের প্রধান ওমপ্রকাশ চৌতালার ঘনিষ্ঠ অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রয়াত বিধায়ক জ্ঞান চাঁদ ওধ-এর স্ত্রী শরাফি দেবীকে ১২,৭০৩ ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি। ১৯৮২ সালের পর এই প্রথম রাতিয়ায় জিতে স্বভাবতই হিসার লোকসভা কেন্দ্রে বিপর্যয়ের ক্ষত কিছুটা প্রশমন হয়েছে কংগ্রেসের। অন্য দিকে রাজ্যের আদমপুর আসনে জয়ী হয়েছেন হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেস সভাপতি কুলদীপ বিশনইয়ের স্ত্রী রেনুকা বিশনই। অক্টোবর মাসে হিসার লোকসভায় জয়ের আদমপুরের বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন কুলদীপ। এই কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী কংগ্রেস প্রার্থী কুলবীর সিং বেনীওয়ালের ভোটের ব্যবধান ২২, ৬৬৯।
দীর্ঘদিন দখলে থাকা হিমাচল প্রদেশের নালাগড় বিধানসভা আসনটি কংগ্রেসের কাছে খুইয়েছে বিজেপি। এখানে কংগ্রেসের লখীন্দর রানা ১৫০০ ভোটে হারিয়েছেন গুরনাম কওর। দলীয় বিধায়ক এইচএন সাইনির মৃত্যুতে খালি হওয়া এই কেন্দ্রে তাঁর স্ত্রী গুরনামকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তবে হিমাচলের রেনুকা (সংরক্ষিত) কেন্দ্রটি জেতায় কিছুটা মুখরক্ষা হয়েছে শাসক গেরুয়া শিবিরের। এখানে কংগ্রেস প্রার্থী বিনয় কুমারকে ৩৫০০ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপির হৃদয়রাম।

প্রত্যাশা মতোই ঝাড়খণ্ডের মান্ডু বিধানসভা কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রাখতে সমর্থ হয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। জেএমএম-এর প্রথম সারির নেতা টেকলাল মাহাতোর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই আসনে জেএমএম সুপ্রিমো শিবু সোরেনের মনোনীত প্রার্থী জয়প্রকাশ ভাই প্যাটেলকে সমর্থন করেছিল জোটসঙ্গী বিজেপি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, কংগ্রেসের কুমার মহেশ সিংকে ২৩, ৭৬৮ ভোটে হারিয়েছেন তিনি। কয়েক মাস আগে জামশেদপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে চমকপ্রদ ফল করলেও মান্ডুতে তৃতীয় স্থান পেয়েছে বাবুলাল মারান্ডির ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা।
পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের মতোই পূর্ব ভারতের অন্য দুই রাজ্য ওড়িশা এবং ঝাড়খন্ডের উপনির্বাচনেও শাসক দলের জয়ের ধারা অপ্রতিহত রয়েছে। ফের প্রমাণিত হয়েছে, নবীন পট্টনায়ক ও নীতীশ কুমারের ব্যক্তিগত ক্যারিশমা।মাওবাদী হামলায় নিহত বিজেডি বিধায়ক জগবন্ধু মাঝির অসন উমেরকোট ধরে রেখেছে মুখ্যমন্ত্রী শাসক দল। এই কেন্দ্রে বিজেপির ধারমু গৌড়কে ২০,০০০ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেডির সুভাষ গৌড়।অন্য দিকে বিহারের লউকাহা বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন জনতা দল (ইউনাইটেড) প্রার্থী সঞ্জয় কুমার শা। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরজেডি'র মুখতার আহমেদের সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ২২, ৭৬৩।

.