জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আরজি কর নিয়ে ফের সুপ্রিম শুনানি। আর সেই শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টে উঠল 'রাত্রির সাথী' প্রকল্পের কথা। "রাতের ডিউটি কম করবেন মহিলারা, এমন বিজ্ঞপ্তি মানা যাবে না। মহিলারা নাইট শিফট করবেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের।" স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিন আদালতে এক আইনজীবী সওয়াল করেন,"রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মহিলা চিকিৎসকরা ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না। রাতে ডিউটি কম ও না করানোর কথা বলা হয়েছে। এর বিরোধিতা করছি। এটা চিকিৎসকরা মেনে নিচ্ছেন না।" 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

যার উত্তরে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, "এটা কী করে হতে পারে? এই ধরণের বিজ্ঞপ্তির অর্থ কী? এটাও তো মহিলা চিকিৎসকদের প্রতি বৈষম্য! মহিলা চিকিৎসকরা বিশেষ কোনও সুবিধা চাননি।  মহিলা চিকিত্‍সকরা সব পরিস্থিতিতেই কাজ করতে সমানভাবে ইচ্ছুক। তাঁরা সুরক্ষা চেয়েছেন। তাঁরা যেন সব পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে। রাজ্য সরকারকে এটা সুনিশ্চিত করতে হবে। তুমি এটা বলতে পার না যে মহিলা চিকিত্‍সকরা ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না বা রাতে কাজ করবেন না। সশস্ত্র বাহিনীও রাতে কাজ করে। সেখানেও মহিলারা আছেন। মহিলারা কোনও ছাড় চান না, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে সমানাধিকার চান। ডিউটির সময় সবার ক্ষেত্রে সমান হওয়া উচিত। রাজ্য সরকার নারী-পুরুষে কোনও ভেদ করবে না এটা সুনিশ্চিত করতে হবে।" 


এর পাশাপাশি, এদিন শুনানিতে চিকিত্‍সকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন,"শেষ শুনানিতে আমরা বলেছিলাম নিরাপত্তা আরও বাড়াতে। সেটা নিয়ে আপনারা কী করেছেন?" উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, "২৮টি মেডিক্যাল কলেজের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পৃথক বিশ্রামাগার তৈরির কাজ ৭-১৪ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।" যা শুনে প্রধান বিচারপতি ফের বলেন, "যে ঘটনা ঘটেছে তা দেখুন, একজন সিভিক ভলান্টিয়ার রাতে অবাধে হাসপাতালে ঢুকে যাচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে! ১৮ থেকে ২৩ বছরের মেয়েরা উচ্চমাধ্যমিক পাস করেই ডাক্তারি পড়তে আসছে‌ন। তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।" 


নিরাপত্তা নিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি 'জেনুইন' বলে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনী সাময়িক সময়ের জন্যে আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে হাসপাতালের নিরাপত্তায় ভলেন্টিয়ার! তাদের যে দাবি সেটা জেনুইন। আমরা সরকার পরিচালনা করছি না। গোটা রাজ্যে ২৮টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আছে। সেখানে নতুন প্রজন্মের ডাক্তাররা থাকবে। ১৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে ছাত্ররা থাকবে। তারা বাড়ি ছেড়ে আসবে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।" শুধু ২৮টি মেডিক্যাল কলেজ নয়, এর সঙ্গে আরও ১৭টি হাসপাতাল, মোট ৪৫টি হাসপাতালেই ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এদিন নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। 


প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট নির্দেশ দেন, "জেলাশাসক ও পুলিস সুপাররা হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি ইনস্টল করা থেকে শুরু করে সবরকম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় হবেন। হাসপাতালের অন্দরে যাতায়াতের জন্য বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক বেশি সংবেদনশীল হতে হবে।" প্রধান বিচারপতি এদিন আরও বলেন যে, "আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে অনেক সময় নিচ্ছে রাজ্য।" যার জবাবে রাজ্য জানায় যে, "৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সবটাই সুনিশ্চিত হয়ে যাবে।"


আরও পড়ুন, Sandip Ghosh | Kolkata Doctor Rape Murder: 'চরম মুহূর্তে পৈশাচিক-নৃশংস', রূপান্তরকামীদের সঙ্গেও উদ্দাম যৌনতা সন্দীপের!



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)