মায়াবতীর 'একলা চলো'র কারণ কী? বিজেপির কতটা লাভ?
আসন্ন তিন রাজ্যের নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে নেই মায়াবতী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: তিনটি রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে থাকছে না মায়াবতীর দল বসপা। মায়াবতী ঘোষণা করেছেন, ''রাজস্থানে ও মধ্যপ্রদেশে একাই লড়াই করবে বহুজন সমাজ পার্টি। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট হচ্ছে না''। তবে দিন কয়েক আগে মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমলনাথ দাবি করেছিলেন, শীঘ্রই জোটের কথা চূড়ান্ত হবে। কিন্তু মায়াবতীর ঘোষণার পর স্পষ্ট হল, রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশে বসপাকে ছাড়াই লড়াই করতে হবে রাহুল গান্ধীকে। কিন্তু এতে বিজেপির কতখানি লাভ? আর কেনই বা পাকা কথা সারা হল না?
সামনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচন। অতিসম্প্রতি ছত্তিসগঢ়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগীর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে মায়াবতীর দল। এবার মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানেও রাহুলের হাত ছাড়লেন দলিত নেত্রী।
রাজস্থানে সেই শক্তি না থাকলেও মধ্যপ্রদেশের চম্বল, বুন্দেলখণ্ড ও বঘেলখণ্ডে বসপা বেশ শক্তিশালী। গত বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে ৮০টি আসনে ১০,০০০ বেশি ভোট পেয়েছিল মায়াবতীর দল। সে রাজ্যে ৭ শতাংশের বেশি ভোট দখলে রয়েছে বহেনজির। ছত্তিসগঢ়েও প্রচুর দলিত ভোট রয়েছে বসপার। ফলে মায়াবতীকে সঙ্গে নিলে নির্বাচনী ফায়দা হত কংগ্রেসের। কিন্তু এবার লাভবান হল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছত্তিসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশে নিজস্ব দলিত ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে বহেনজির। এবার সেখানে ত্রিশঙ্কু লড়াই হতে চলেছে। ফলে আদিবাসী ও দলিত ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। ভোট ভাগাভাগির অঙ্কে বেরিয়ে যেতে পারে বিজেপি। কারণ, উচ্চবর্ণের ভোটাররা বিজেপির দিকেই থাকেন। সেক্ষেত্রে দলিত ভোট ভাগ হলে কংগ্রেসের লোকসান। তার উপরে মধ্যপ্রদেশে সবর্ণদের পাশে টানতে তপশিলি জাতি-উপজাতি আইন শিথিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।
সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগঢ়ে বসপার সঙ্গে সমঝোতা করতে চেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু রাজস্থানে তারা জোট চায়নি। রাজস্থানে একার দমেই বিজেপিকে হারানো সম্ভব বলে মনে করেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগঢ়ের আদিবাসী ও দলিত ভোট টানতে মায়াবতীকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। এখানেই আপত্তি জানান বহেনজি। তিনি রাজস্থানেও ভাগ চাইছিলেন।
বিধানসভায় প্রভাব পড়ুক বা না, বসপা-কংগ্রেসের দূরত্বে লোকসভায় বিজেপির বড় ফায়দা হওয়ার সম্ভাবনা। উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনে নির্বাচন। সে রাজ্যে বসপা-সপা-কংগ্রেস একসঙ্গে লড়াই করলে বিজেপির পক্ষে গতবারের রেকর্ড সংখ্যক আসন ধরে রাখা কঠিন।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার ঘোষণা করে মায়াবতী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ''ওরা (কংগ্রেস) দাম্ভিক হয়ে উঠেছে। বিজেপিকে হারানোর ভ্রান্ত ভাবনায় ডুবে রয়েছে, বাস্তব থেকে অনেক দূরে। দুর্নীতি ও ভুলের জন্য কংগ্রেসকে এখনও মানুষ ক্ষমা করেননি। কিন্তু ভুল শোধরাতে চান না তাঁরা''।
আরও পড়ুন- পুজোর মরসুমে রবি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়িয়ে কৃষকদের উপহার মোদীর