পণ দিতে না পারায় স্ত্রীকে ৩ বছর শৌচালয়ে আটকে রাখল স্বামী
দিতে পারেননি প্রতিশ্রুত পণ। তাই তিন বছর ধরে তাঁকে শৌচালয়ে আটকে রাখলেন স্বামী ও পরিবারের লোকজন। বিহারের দ্বারভাঙার রামবাগে গতকাল শৌচালয় ওই মহিলাকে উদ্ধাক করে পুলিস।
ওয়েব ডেস্ক: দিতে পারেননি প্রতিশ্রুত পণ। তাই তিন বছর ধরে তাঁকে শৌচালয়ে আটকে রাখলেন স্বামী ও পরিবারের লোকজন। বিহারের দ্বারভাঙার রামবাগে গতকাল শৌচালয় ওই মহিলাকে উদ্ধাক করে পুলিস।
এলোমেলো জামাকাপড়, উস্কোখুস্কো চুল, হাতের বড় বড় নখে জমেছে অস্বাস্থ্যকর ময়লা। টানা তিন বছর অন্ধকারে থাকার ফলে সূর্যের আলোয় চোখই খুলতে পারছিলেন না। এই অবস্থায় তাঁকে শৌচালয়ের বাইরে বের করে আনেন স্টেশন হাউজ অফিসার সীমা কুমারি। বলেন, "ওই মহিলা জানিয়েছেন তাঁকে জোর করে ঠেলে শৌচালয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিজের সন্তানকে দেখতে দেওয়া হত না। রোজ খাবারও দেওয়া হত না। মাঝে মাঝে দেওয়া হত বাসি খাবার। পণ না দিতে পারা ও কন্যসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তাঁর ওপর বদলা নিতে চাইত শ্বশুরবাড়ি।"
দ্বারভাঙা জেলার অন্দ্রথড়ি থানার পাস্তান গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার বিয়ে হয় প্রভাত কুমার সিংয়ের সঙ্গে। ২০১০ সালে বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের জন্য শুরু হয় অত্যাচার। পণ দিতে না পারায় বাড়তে থাকে অত্যাচার। কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পর তা চরমে পৌছয়। নিজের মা, বাবার দেখা করতে দেওয়া হত না তাঁকে। বাপের বাড়ির দিকের কোনও আত্মীয় এলে তাঁদেরও অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হত। এমনকী, অন্য কোনও বাইরের লোকের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হত না বলে জানতে পেরেছে পুলিস।
শৌচালয়ের বাইরে এসেই নিজের সন্তানের খোঁজ করেন মহিলা। কিন্তু সন্তান তাঁকে চিনতে না পারায় ভেঙে পড়েন। তাঁর বাবা শ্যামসুন্দর সিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মহিলার শ্বশুরবাড়িতে তল্লাসি চালিয়েছিল দ্বারভাঙা থানার পুলিস। মহিলার স্বামী, শ্বশুর ধীরেন্দ্র সিং ও শাশুড়ি ইন্দ্রা দেবীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিস। আপাতাত পুলিসি হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্তরা।